• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রেফারিকে গালি দিইনি : মেসি


ক্রীড়া ডেস্ক মার্চ ৩০, ২০১৭, ১২:৫২ পিএম
রেফারিকে গালি দিইনি : মেসি

ঢাকা : পরশুও বলিভিয়ার মাঠে ২-০ গোলে হেরে গেছে এদগার্দো বাউজার দল। নেমে গেছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে। যেখানে লাতিন আমেরিকা থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে যেতে পারে চারটি দল, পঞ্চম দলটি খেলে প্লে-অফে। তবে শুধু পয়েন্ট তালিকা নয়, আর্জেন্টিনার দুশ্চিন্তা অন্য। বাকি চার ম্যাচের তিনটিতেই যে থাকছেন না অধিনায়ক মেসি!

অপরাধ করলে যেকোনো ফুটবলার নিষেধাজ্ঞা পেতেই পারেন। এমনকি লিওনেল মেসিও। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার বলে তো আর তিনি ছাড় পাবেন না। কিন্তু তারপরও মেসিকে দেওয়া ফিফার এই নিষেধাজ্ঞাটা নিয়ে অনেক বিতর্ক। কেউ বলছেন, এটা লঘু পাপে গুরু দণ্ড হয়ে গেছে। কারও মতে, ম্যাচের ঘণ্টা ছয়েক আগে কোনো দলের সেরা খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করে দেয়া অন্যায়।

অবশেষে মুখ খুললেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক দাবি করেছেন, রেফারিকে উদ্দেশ করে তিনি গালি দেননি। বরং হতাশা থেকে স্বগতোক্তি করেছেন। আর্জেন্টিনার দৈনিক লা ন্যাসিওন মেসিকে উদ্ধৃতি করে লিখেছে, ‌‘আমার মন্তব্য কখনোই সহকারী রেফারিকে উদ্দেশ করে ছিল না। আমার মন্তব্যগুলো আমি আপন মনে আওড়াচ্ছিলাম।’

রেফারিকে অশালীন গালি দেওয়ার অপরাধে মেসিকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। বলিভিয়ার বিপক্ষে গত ম্যাচে মেসি ছিলেন না। থাকতে পারবেন না আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বের শেষ চারটি ম্যাচের তিনটি। আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা (এএফএ) ফিফার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করবে। এএফএর জাতীয় দল কমিটির প্রধান মার্সেলো তিনেল্লি বলেছেন, সব হিসাব করে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যেন মেসির শাস্তি কমানো সম্ভব হয়। এ কারণে সময় নিচ্ছে এএফএ। আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বের পরবর্তী ম্যাচের খেলাগুলোও এখনো বেশ দেরিতে। ফলে সময়ও আছে। গুছিয়ে নিয়েই ফিফার শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির বিরুদ্ধে লড়তে চায় তারা।

ক্রীড়া দৈনিক ওলেকে তিনেল্লি বলেছেন, ‌‘আমরা অবশ্যই এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব, কারণ এটা অন্যায়, অযৌক্তিক। মেসি এর আগে কখনোই এমনটা করেনি। আমরা এএফএর আইনজীবী এবং ক্রীড়া আইনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছি। এই রায়ে আমরা সবাই বিস্মিত, কারণ আমরা কখনোই ভাবিনি শাস্তি এত কঠিন হবে।’

এদিকে মাঠে একটু বুদ্ধি খাটালেই শাস্তির হাত থেকে লিওনেল মেসি বেঁচে যেতে পারতো বলে মনে করেন আর্জেন্টিনার সাবেক খেলোয়াড় হোর্সে ভালদানো। চিলির বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে সহকারী রেফারির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার দায়ে গত মঙ্গলবার বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড মেসিকে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয় ফিফা।

ওই ম্যাচের শেষ দিকে মেসির বিরুদ্ধে ফাউলের নির্দেশ দেয় রেফারি। এরপর লাইন্সম্যানকে লক্ষ্য করে বার্সেলোনার তারকা এই ফরোয়ার্ডকে হাত নেড়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও চিৎকার করতে দেখা যায়। ম্যাচ শেষে এই অফিসিয়ালের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকৃতি জানান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।

তবে ম্যাচের প্রতিবেদনে ঘটনাগুলোর উল্লেখ করেননি রেফারি। পরে ভিডিও ফুটেজ দেখে মঙ্গলবার বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে মেসিকে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ কর ফিফা। ভালদানো এজন্যই মনে করছেন, সহকারী রেফারির সঙ্গে কথা বলার সময় হাত দিয়ে মুখটা আড়াল করলে ভিডিওতে বোঝা যেত না। তবে মেসির এমন আচরণেও অবাক হয়েছেন তিনি। ‘যে বিষয়টি আমাকে খুব বিস্মিত করেছে, সেটা হচ্ছে মেসি কখনই নিয়ন্ত্রণ হারায় না।’

ভালদানো জানান, ফুটবলাররা সাধারণত রেফারির সঙ্গে কথা বলার সময় ক্যামেরার দৃষ্টি এড়াতে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন। মেসি এতটুকু করলে পার পেয়ে যেত। মেসির শাস্তি নিয়ে এরই মধ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ এদগার্দো বাউসা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তার ক্লাব বার্সেলোনাও। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি ভালদানোও শাস্তির বিষয়টি মানতে পারছেন না।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচের সময়। ব্রাজিলিয়ান লাইন্সম্যানকে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে লিওনেল মেসির বিরুদ্ধে। গোটা ম্যাচেই রেফারিদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন মেসি। তাই ম্যাচ শেষে তাদের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকার করেন তিনি। ভিডিও ফুটেজে এই ঘটনা দেখার পর মেসির বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানার সঙ্গে ৪ ম্যাচে নির্বাসিত করা হয় মেসিকে। যদিও মেসিকে এতবড় শাস্তি দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে বিভিন্ন মহলে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, রেফারির রিপোর্টে গালি দেয়ার অভিযোগ ছিল না। তা সত্ত্বেও এত বড় অভিযোগ কেন? তবে কি এর পিছনে কোনো অদৃশ্য হাত রয়েছে?

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!