• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেলসেতু আজ মৃত্যুফাঁদ


জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম জানুয়ারি ১৫, ২০১৮, ০১:২৬ পিএম
রেলসেতু আজ মৃত্যুফাঁদ

কুড়িগ্রাম: ব্রিটিশদের নির্মিত ১৩০ বছরের পুরোনা সোনাহাট রেলসেতু ব্রিজটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়েই চলছে বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের পাথর ও কয়লা বোঝাই ভারি যানবাহন। এতে যে কোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে প্রাণঘাতি বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

ব্রিজটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে দাবি করে আসলেও নেই কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ।

তথ্যা অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্বে দুধকুমর নদের ওপর ১৮৮৭ সালে সোনাহাট রেলওয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ভারতের মোগল কাটা রেল স্টেশন হয়ে জয়মনিরহাট রেল স্টেশন দিয়ে সোনাহাট রেল স্টেশনের ওপর দিয়ে ভারতের গোলকগঞ্জে প্রবেশ করেছে রেলপথটি।

ব্রিটিশ আমলে সোনাহাটে সিনেমা হল, নিষিদ্ধ পল্লীসহ বিদেশিদের অবস্থানের জন্য উঁচুমানের ডাকবাংলো ছিল। ভারত পাকিস্তান বিভক্তির পর রেলপথটি বন্ধ হয়ে যায় এবং এখান থেকে রেল লাইন তুলে উলিপুর-কুড়িগ্রাম রেলপথ চালু করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা এবং বাংলাদেশের বাগভান্ডার সীমান্ত দিয়ে আসাম আরমী এক্সেস হাইওয়ে সড়কটি তৈরি করা হয়। যা সোনাহাট সেতুর ওপর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। এপথ দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী যুদ্ধযান নিয়ে মনিপুর পর্যন্ত চলে গেছে।

১৯৭১ সালে ২৭মে ভারতীয় সেনাবাহিনী ডিনামাইট ব্যবহার করে ব্রিজটির দুটি গার্ডার ভেঙে ফেলে, যাতে করে শত্রু সেনা (পাকবাহিনী) সোনাহাট মুক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করতে না পারে। স্বাধীনতার পর এখান থেকে দুটি গার্ডার নিয়ে তিস্তা ব্রিজ মেরামত করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।

১৯৮৬/৮৭ সালে তৎকালীন এমপি আখম শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর প্রচেষ্টায় স্বাধীনতা যুদ্ধে সোনাহাট ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে সোনাহাটের সাথে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। সেই থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন ব্রিজটি থাকলেও এর তেমন কোনো মেরামত হয়নি। এরপর রয়েছে নদী ভাঙন। নদী ভাঙনে ব্রিজটির পশ্চিম তীরে একটি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।

বর্তমান সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা পাথর ও কয়লা এ ব্রিজের ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছে। এটি মেরামত কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা না হলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে সেতুর পূর্বপাশের সাতটি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে এবং থেমে যেতে পারে সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বরকত মো. খুরশীদ আলম জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই ভারি যানবাহনের ক্ষেত্রে জরিমানার বিধান করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই দুধকুমর নদীতে বিকল্প সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও প্রায় চূড়ান্ত। আশা করছি খুব দ্রুত নতুন সেতুর কাজ শুরু হবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!