• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোগ নির্ণয়ে দক্ষ জনশক্তি চান প্রধানমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১২, ২০১৮, ১১:১৪ পিএম
রোগ নির্ণয়ে দক্ষ জনশক্তি চান প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় আমরা দেখি রোগ নির্ণয়ের (ডায়াগনসিস) ব্যাপারে কেন যেন কোথায় একটা বিরাট ভুল হয়ে যায়। যদিও যন্ত্রপাতি এখন অনেক উন্নত। তবে সেগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শনিবার (১২ মে) সকালে রাজধানীর মুগদায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড নার্সিং এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইএএনইআর)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক মডার্ন মেশিন এখন, সেগুলো চালানোর মতো বা রিডিং করার মতো বা সেগুলোকে দেখার মতো সেই ধরনের স্কিলড মানুষ তৈরি করা প্রয়োজন।’ ‘সেখানে কী করতে হবে, আমার মনে হয়, আপনারা সেভাবেই ব্যবস্থা নেবেন। আপনারা উদ্যোগ নিয়ে কী করতে হবে বলেন, আমরা করে দেব। কোনো অসুবিধা নাই,’- আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এই বিষয়টার সুরাহা হওয়া দরকার নইলে আমাদের একজন কেউ রোগী হলেই দৌড়াতে হবে সিঙ্গাপুর, দৌড়াতে হবে থাইল্যান্ড, ইন্ডিয়া অমুক জায়গায়, কেন? আর তারা ভালোভাবে যদি পারে, আমরা কেন পারব না? এই প্রশ্নটাই বার বার আমার মনে হয়। ‘আমাদেরও পারতে হবে। সমমানের সমমর্যাদার চিকিৎসাসেবা আমরাও দিতে পারব। সেই অভিজ্ঞতা, সেই শক্তিটা আমাদের অর্জন করতে হবে,’ বলেন তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কোইকা সহ-সভাপতি কিয়াংগুন সুল, কোইকার সাউথ এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক ইয়ো ইয়ং কিং বক্তৃতা করেন। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান স্বাগত বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে সেবা দেওয়ার মনোভাবটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কাজেই আমাদের নার্স, ডাক্তার এবং সংশ্লিষ্ট যারা তাদের মনে সব সময় এই কথাটাই থাকতে হবে- মানুষ যখন রোগী হয়ে আসে তখন ওষুধের থেকেও ডাক্তার-নার্সদের ব্যবহার, তাদের কথাবার্তা এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব থেকেই কিন্তু অর্ধেক রোগ ভালো হয়ে যেতে পারে। আর আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধটা- এটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে রোগীর তুলনায় ডাক্তার ও নার্সদের অপ্রতুলতার বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়েই ডাক্তারদের একটু সংযত হওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে আপনাদের একটু সংযত হতে হবে। দিনের বেলা সরকারি চাকরি করবেন। আর রাতে গিয়ে প্রাইভেট করবেন, তারপর তো মেজাজ এমনিতেই খারাপ হবে, সেটা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে আমার মনে হয়, আপনারা একটু হিসাব করে, যতটা ধারণ করতে পারেন ঠিক ততটাই করবেন।’ চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সরকার হাসপাতাল করে দিচ্ছে উলে­খ করে প্রধানমন্ত্রী এসব হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নজর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

অনুষ্ঠানে মুগদায় নার্সিং ইনস্টিটিউট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে একটি মেডিকেল ইউনিভার্সিটি স্থাপনে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী দাবি তুললে প্রধানমন্ত্রী তাকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আহ্বান জানান। বিভাগীয় শহরে সরকারি উদ্যোগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বেসরকারি খাতকেই উন্মুক্ত করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এখানে বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় করা হলে সব রকম সহযোগিতা করবেন বলে জানান।

নার্স ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের বয়সসীমা ৩৬ বছর করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৪৪৫ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ প্রদান করেছি। আরো ৫ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং প্রায় ১ হাজার ২০০ জন মিডওয়াইফ নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১২ মে আধুনিক নার্সিংয়ের প্রবর্তক মহীয়সী নারী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন হওয়ায় তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ হওয়ায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ‘আজকে স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা মনে করি বিশ্বদরবারে একটা উচ্চ মর্যাদা পেয়েছি। স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর মাধ্যমে পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে এখন আমরা অবস্থান করছি।’ বাসস

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!