• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা ইস্যু: চীন-রাশিয়ার অবস্থানের ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক অক্টোবর ১৮, ২০১৭, ০৮:১৫ পিএম
রোহিঙ্গা ইস্যু: চীন-রাশিয়ার অবস্থানের ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাশিয়া ও চীন বাংলাদেশের পক্ষে আছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুত আলী। কিভাবে আছে তার ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি।

সোমবার(১৮ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদিকদের কাছে এক ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সম্প্রতি আরিয়া ফরমুলা সভায় (গত ১৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ গোপনীয় সভা) রাশিয়া তাদের বক্তব্যে কফি আনান রিপোর্ট সাপোর্ট করেছে। বাংলাদেশ তো কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের বাস্তবায়ন চায়। তাহলে রাশিয়া কীভাবে মিয়ানমারের পক্ষে ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গেল- এটা আমি বুঝতে পারলাম না।’

চীনের বিষয়ে মাহমুদ আলী বলেন, ‘জাতিসংঘের ওই বৈঠকে চীনের রিপোর্টে কফি আনানের রিপোর্টের বিষয়ে বক্তব্য নেই কিন্তু চীনের ভাষাটা অন্যরকম। তারা রাখাইন সম্পর্কে বলতে গিয়ে হিস্টরিক্যাল ও ইউনিক ব্যাকগ্রাউন্ড শব্দ দুটি ব্যবহার করেছে। তার মানে হল এই লোকগুলো (রোহিঙ্গারা) পরশুদিন ওখানে (মিয়ানমারে) যায়নি, যুগ যুগ ধরে তারা সেখানে বসবাস করছে। গতকালের ঘটনাকে তো হিস্টরিক্যাল বলে না। তারা (চীন) নির্যাতন বন্ধ করতে বলেছে। তারা রাখাইন সমস্যাকে আলাদা করছে, আমরাও আলাদা করছি। কোথায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গেল (চীন)?’

সরাসরি না হলেও চীন ও রাশিয়ার অবস্থান রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের নেয়া নীতির পক্ষে দেশ দুটির অবস্থান ধরে নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী আরও বলেন, ‘অং সান সুচি রোহিঙ্গা ইস্যুতে একেবারেই কথা বলছেন না এটা কিন্তু ঠিক নয়। কাজটা তো ওইভাবে হয় না। একটা মিলিটারি ডিকটেটরশিপকে কীভাবে রাতারাতি পাল্টে দেওয়া যায়...., আমরাও তো এটার ভেতর দিয়ে সময় অতিবাহিত করেছি। জিনিসটা এতো সহজ নয়।’

‘আমরা অপেক্ষা করছি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় মিয়ানমার যাবেন। আমরা মিয়ানমার সফরের তারিখ পেয়েছি ২০ থেকে ৩০ অক্টোবর। সময় তো এখন আছে। এর মধ্যে উনি গেলে দুটো এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) সই হবে। দুই দেশের বর্ডারের ২৭১ কিলোমিটারের সমস্যার সমাধান করা হবে। আশা করি পরিবেশটা তৈরি হবে, তারপর আমি যাব।’

রোহিঙ্গারা যুগ যুগ ধরে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছেন জানিয়ে মাহমুদ আলী বলেন, ‘আজ হঠাৎ করে বললে (রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়) তো হবে না। আরও ডকুমেন্ট আমাদের হাতে এসেছে। আমরা যথাসময়ে উর্দিওয়ালা মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের দেব। যে রোহিঙ্গাদের আপনারা পুরস্কার দিয়েছেন, সেখানে রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করেছেন। বেশি দিন আগের কথা নয়, কয়েক বছর আগের কথা।’

তিনি বলেন, এখন রোহিঙ্গারা নিরুদ্দেশ হয়ে গেল, রোহিঙ্গা ছিল না, কেউ নেই। তারা বাঙালি হয়ে গেল। কেমন করে বাঙালি হল, এরা তো বাঙালি নয়। রোহিঙ্গাদের সহায়তার আর্থিক তহবিল সংগ্রহের জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর জেনেভায় একটি সম্মেলন হবে, সেখানে বাংলাদেশকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

ইউএনএইচসিআর একটি ড্রোন ভিডিও প্রকাশ করেছে যে সীমান্তে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা আটকে আছে। তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছে না। এমন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটা বলতে পারলাম না, আমি জানি না। এটা দেখব আমি। খোঁজ-খবর নেব।’

গত ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নিধন অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। তখন থেকে রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।

বুধবার রোহিঙ্গা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকও উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/তালেব

Wordbridge School
Link copied!