• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ফেরানোর আশ্বাস সু চির


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ১০, ২০১৮, ০৮:৪১ পিএম
রোহিঙ্গাদের ফেরানোর আশ্বাস সু চির

ঢাকা : বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতার ভিত্তিতেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। গত বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো দেওয়া মুখোমুখি এক সাক্ষাৎকারে এ আশ্বাস দেন তিনি।

জাপানের সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় আবারো বাংলাদেশের দিকে অভিযোগের তিরও ছোড়েন অং সান সু চি। অবশ্য রোহিঙ্গাদের ফেরাতে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি। মিয়ানমার কীভাবে শরণার্থী ও আন্তর্জাতিক মহলের আস্থা অর্জন করবে- এমন প্রশ্নে সু চি বলেন, ‘আস্থা দুই পক্ষের ব্যাপার। আস্থা তৈরির বিষয়টি কেবল মিয়ানমারের ওপর নির্ভর করে বলে আমার মনে হয় না। অপর পক্ষকেও আস্থা তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী আমরা ফরম দিয়েছিলাম রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণের জন্য, যেগুলো পূরণ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেভাবে ফরমগুলো বিতরণ করা হয়নি। বিতরণ করা না হলে এবং রোহিঙ্গারা আইনসম্মত ও বৈধ উপায়ে রাখাইনে ফেরার উপায় না জানলে আমরা দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারব না।’

মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা গত বছরের আগস্টের পর বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে জাতিগত নিধন হিসেবে অভিহিত করেছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে সঙ্কটপূর্ণ অবস্থার শিকার এই রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একেবারে নীরব থাকায় বিশ্বজুড়েই চলছে তীব্র সমালোচনা।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার ও এর বাইরে খুব কম মানুষই ঐতিহাসিক কারণগুলোর ব্যাপারে সচেতন। শুধু বহির্বিশ্বের মানুষই নয়, আমাদের দেশের মানুষদেরও বুঝতে হবে আসলে কী ঘটতে চলেছে, আর সরকার যা করছে- তা কেন করছে। আমরা শেষমেশ নিজেদের দেশে একটা স্থিতাবস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’

সু চি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে কিছুটা সময় লাগবে। তাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের অন্য মানুষের মনে যে গভীর বিদ্বেষ আছে, সেটা দূর হতে কিছুটা সময় প্রয়োজন। রাখাইনের বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা অবিশ্বাসের কথা উলে­খ করে সেখানে শান্তি ‘রাতারাতি’ অর্জন করা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরা নিয়ে গত বুধবার মিয়ানমার ও জাতিসংঘের মধ্যে একটি চুক্তি হয়।

এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সু চি বলেন, ‘চুক্তিতে শরণার্থীদের ব্যাপারে যেসব দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত তার সবই আমরা গ্রহণ করেছি।’ মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক বাস্তবতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে সামরিক প্রভাব এখনো শক্তিশালী। পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন এখন পর্যন্ত জেনারেলদের জন্য সংরক্ষিত। আসলে আমরা এখনো পুরোপুরি গণতান্ত্রিক দেশ হয়ে উঠতে পারিনি। আমাদের সংবিধানও পুরোপুরি গণতান্ত্রিক নয়।’

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বৈঠক : রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আবারো বৈঠক করেছে মিয়ানমার সরকারের সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ প্রতিনিধিরা। গত শুক্রবার রাজধানী নেইপিডোতে ওই বৈঠকে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সু চি ও সেনাপ্রধান মিং অং হলাংসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট উইন মিয়ান্টের কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পাতায় বৈঠকের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ওই ফেসবুক পোস্টের সূত্রে জানিয়েছে, বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তাসহ রোহিঙ্গা সঙ্কটের অভ্যন্তরীণ তদন্ত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৬ সালের সু চির নেতৃত্বাধীন সরকার গঠিত হওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ ধরনের বৈঠক হলো।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!