• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লঞ্চযাত্রায় দুর্ভোগ, তবুও যাত্রীদের মুখে হাসি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৪, ২০১৮, ০৯:৩৯ পিএম
লঞ্চযাত্রায় দুর্ভোগ, তবুও যাত্রীদের মুখে হাসি

ঢাকা: অসহনীয় ভ্যাপসা গরম, লঞ্চে তিল ধারণের জায়গা নেই, প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে ছাদেও শতশত যাত্রী। সেইসঙ্গে আছে অতিরিক্ত ভাড়া। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এভাবেই দুর্ভোগ সহ্য করে ঘরে ফিরছেন মানুষ। এত দুর্ভোগের পরেও এসব ঘরমুখো মানুষদের মুখে হাসি। কারণ একটাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। আর এই আনন্দের পথে কোনো দুর্ভোগই তাদের হাসি কেড়ে নিতে পারছে না।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই সদরঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। যাত্রী পূর্ণ হওয়া দুপুরে নাগাদ প্রায় ৩০টির মতো লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। ভিড় চরম আকার ধারণ করে বিকেলের দিকে। যারা সকালে ছুটি পাননি তারা অফিস করে বিকেলের দিকে ছুটেন সদরঘাটের দিকে।

মানুষের প্রচণ্ড চাপের কারণে কোনো আইন কানুনের ধার ধারছেন না লঞ্চ মালিকরা ও যাত্রীরা। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে অনেকে নিজেই ঝুঁকি নিয়ে উঠছেন লঞ্চে। সবার এক উদ্দেশ্য- বাড়ি যেতে হবে।

যদি শুক্রবার (১৫ জুন) শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়, তবে শনিবার (১৬ জুন) পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। এ ক্ষেত্রে শুক্র, শনি ও রোববার সরকারি ছুটি থাকবে। তবে রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হলে ঈদ হবে রোববার (১৭ জুন)। সেক্ষেত্রে একদিন সরকারি ছুটি বাড়বে।

ঢাকা থেকে পটুয়াখালীগামী আওলাদ-৭ লঞ্চের ছাদে বসে ছিলেন আলমগীর হোসেন। প্রচণ্ড রোদে মাথায় গামছা দিয়ে রেখেছেন। তারপরও ঘামছিলেন। অনেক কষ্ট করে বাড়ি যাচ্ছেন, কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘মায় (মা), পোলপানগুলা দেশে। কষ্ট হইলেও বড় ভালো লাগতেয়াছে।’

তার মতো এমন হাজারো যাত্রী মুখে একই কথা কষ্ট হলেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ কাটাতে যাব। তাই যতই কষ্ট হোক তবু ভালো লাগছে।

এদিকে প্রায় সব রুটের লঞ্চেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাকেরগঞ্চের যাত্রী মো. সাকিবুল ইসলাম বাবু বলেন, অন্যান্য সময় ডেকে আমরা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় গেলেও এখন ভাড়া দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা।

অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন ডেকের ভাড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। একজনের (সিঙ্গেল) কেবিন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা হলেও এখন নেয়া হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। দুজনের (ডাবল) কেবিন দেড় হাজার থেকে এক হাজার ৬০০ টাকার স্থলে নেয়া হচ্ছে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।

যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ঈদ এলে লঞ্চ মালিকরা নির্ধারিত ভাড়ার দোহাই দিয়ে অন্যান্য সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে থাকেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সদরঘাট বন্দরের উপ-পরিচালক (পোর্ট অ্যান্ড ট্রাফিক) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় বলেন, ‘সকালে যাত্রীদের বেশ প্রেসার ছিল। এ জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক জাহাজও ছিল। সেজন্য পরিস্থিতি সমাল দেয়া সম্ভব হয়েছে। সকাল থেকে কাজল-৭, পূবালী-৪, ফারহান-৫, এ আর খান, তাসরিফ-৪-সহ প্রায় ৩০টির মতো লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিকেলের দিকে যাত্রীদের চাপ প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। তারপরও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নিরাপত্তা, টার্মিনালের সার্বিক পরিবেশ যাত্রীবান্ধব আছে।’

বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) সব মিলিয়ে ১২০-১২৫টির মতো লঞ্চ সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে বলেও জানান মিজানুর রহমান।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!