• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হবেন আমলা!


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ১৩, ২০১৬, ০২:১৭ পিএম
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হবেন আমলা!

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি হতে পারবেন না কোনো সংসদ সদস্য- উচ্চ আদালতের এমন রায়ের পর নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। সেই জটিলতা কাটাতে এবার অস্থায়ীভাবে এডহক কমিটি গঠনের চিন্তাভাবনা করছে সংশ্লিষ্টরা।

এডহক কমিটির প্রধান থাকবেন জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আর এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফের আমলাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে যাচ্ছে। যা তারা এতদিন ধরে চেয়ে আসছিলেন। আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যেই এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, যেহেতু আদালত রায় দিয়েছেন সেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠানের বিল-ভাউচার কিংবা অন্য কোনো কাগজে সভাপতি হিসেবে থাকা সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষর করা উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, এডহক কমিটি গঠন হলেও এটি হবে সাময়িক। কারণ যত দ্রুত সম্ভব এসব প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সবকিছুই করা হবে আদালত থেকে রায়ের কপি আসার পর।

এর আগে স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদে সংসদ সদস্যদের সভাপতি থাকা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ১ জুন একটি রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালে প্রণীত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালার ৫ (২) ও ৫০ বিধি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।

সর্বশেষ ২০০৯ সালের জুনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা তৈরি হয়। ওই প্রবিধান অনুযায়ী, একজন সাংসদ সর্বোচ্চ চারটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পেরেছেন। তবে ওই প্রবিধানের ৫ (২) ধারা আদালত অবৈধ ঘোষণা করায় এখন সাংসদেরা অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেই আর সর্বোচ্চ চারটি স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন না। তবে ৫ (১) বিধি অনুসারে সাংসদদের সর্বোচ্চ চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হতে বাধা নেই।

আদালতের আদেশের পর এখন চারটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাংসদ হতে পারেন, তবে তাঁকে নির্বাচিত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে পরিচালনা কমিটির অন্যান্য সদস্যের ভোটে তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত হতে হবে। আর প্রবিধানমালার ৫০ বিধিতে বলা হয়েছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড ও সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা যাবে।

এই বিধি অবৈধ ঘোষণা করায় দেশের কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আর বিশেষ কমিটি থাকতে পারবে না। হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের পক্ষে আজ শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইউনূছ আলী আকন্দ বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে আপিল বিভাগ ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। অর্থাৎ হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকবে। এর ফলে সাংসদেরা আর বেসরকারি স্কুল–কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য থাকতে পারবেন না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরিসি/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!