• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিশু রাব্বি হত্যা: তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড


রাজশাহী প্রতিনিধি ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭, ০৬:২৪ পিএম
শিশু রাব্বি হত্যা: তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

রাজশাহী: মোহনপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু রাব্বি হত্যার মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আরও এক আসামিকে অমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলো- মোহনপুর উপজেলার বেড়াবাড়ি ডাইংপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মাজেদুর রহমান ওরফে সাগর (১৯), আবদুর রাজ্জাকের ছেলে রিপন সরকার ওরফে লিটন (২৫) এবং হযরত আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৫)।

অমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসিনুর বেগম (৩০)। তিনি সাগরের সৎ মা। কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসিনুর বেগমকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

খালাস পেয়েছেন সাগরের বাবা আবুল কাশেম, একই গ্রামের মো. আলাউদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩০) এবং আবদুল হাকিমের ছেলে মো. সাহাবুদ্দিন (২৪)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর আসামি নাজমুল ও রিপন শিশু রাব্বিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সাগরের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাগর ওই শিশুকে ডেকে নিয়ে যান। সাগরের বাড়ির পাশে আসামি নাজমুল ও রিপন আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন।

সেখানে রাব্বিকে নিয়ে যাওয়া হলে রিপন ও নাজমুল রাব্বিকে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় রাব্বির মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। কেটে নেয়া হয় দুই হাত এবং জিহ্বাও। এরপর তার লাশ বিলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একটি নালার ভেতর রেখে মাটিচাপা দেয়া হয়।

পরদিন ছেলে নিখোঁজ থাকার ব্যাপারে আবুল হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ওই দিনই বিকেলে সাহাবুদ্দিন আবুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে জানান, রাব্বি নিখোঁজ থাকার ব্যাপারে কেউ একজন মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা বলবেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফোনটি ধরলে তাকে জানানো হয়, রাব্বি তাদের হেফাজতে আছে। তাকে ফেরত পেতে হলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এরপর থানায় একটি অপহরণের মামলা করা হয়। 

পুলিশ আসিনুরের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় মুঠোফোন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আসিনুর, তার স্বামী কাশেম এবং ছেলে সাগরকে গ্রেপ্তারও করা হয়। পরদিন সাগর হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ পরে রিপন ও নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে। ফোনে কথা বলেছেন, এমন সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় আমিনুলকেও।

২৬ ডিসেম্বর শিশু রাব্বির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আসিনুর বেগমও আদালতে জবানবন্দি দেন।

তিনি তার জবানবন্দিতে বলেন, বাড়ির পাশে হত্যার সময় রাব্বির চিৎকার তিনি শুনেছিলেন। ঘটনাটি বুঝতেও পেরেছিলেন। কিন্তু আসামি নাজমুল ও রিপন তাকে হুমকি দিয়েছেলিনে যে, ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে এবং তার স্বামীকেও হত্যা করা হবে। 

হত্যা মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রায় ঘোষণা শেষে দণ্ডপ্রাপ্তদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!