• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুরু হচ্ছে বেকুটিয়া সেতুর মূল নির্মাণ কাজ


ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৩, ২০১৭, ০৫:২৭ পিএম
শুরু হচ্ছে বেকুটিয়া সেতুর মূল নির্মাণ কাজ

ঝালকাঠি : দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আরও একটি স্বপ্নের বেকুটিয়া সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। চীনা অনুদান সহায়তায় বাস্তবায়িতব্য বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেকুটিয়া কঁচা নদীর ওপর ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, স্থাপনা অপসারণের প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। চীন সরকারের অনুদানে এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নির্মিত হচ্ছে  শুনে বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের কোটি মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক অন্য রকম উৎসাহ-উদ্দীপনা। স্বপ্নের সেতু পদ্মার সাথে প্রায় একই সময় শেষ হবে বেকুটিয়া সেতুর নির্মাণ কাজ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান গত ৭ নভেম্বর প্রেরিত এক পত্রে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেছেন।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি জানান, আগামী ডিসেম্বরে কঁচা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে। চলতি বছরের ১৬ জুন রাজধানীর সড়ক ভবনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইং-এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পরিমল বিকাশ সূত্রধর এবং চীন সরকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা এজেন্সির ডেপুটি ডিরেক্টর জিয়াং জিং ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রাথমিকভাবে এই মূল সেতু নির্মাণের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬শ’ ২০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই চীন সরকার অনুদান দিতে সম্মত হয়েছে। মূল সেতুর দুইদিকের সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণের মূল্য এবং সড়ক নির্মাণের খরচ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার।

এছাড়া নির্মাণ কাজে বিদ্যুৎ, মাটি ভরাট এবং চীনের প্রকৌশলীবৃন্দসহ চীনা কর্মীদের আবাসন ব্যবস্থার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। পিরোজপুর শহরে ৫ কিলোমিটার পূর্বে কঁচা নদীর ভাটিতে বেকুটিয়া ফেরিঘাটের সন্নিকটে এ সেতু নির্মাণ করা হবে। বেকুটিয়া ফেরিঘাট থেকে ৮শ’ ৩৫ মিটার দক্ষিণে এবং কাউখালী প্রান্তের ফেরিঘাট থেকে ১১৫ মিটার উত্তরে ১.৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৩.৪ মিটার প্রশস্ত এবং ব্রিজের উভয়পাশে ১.৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। যাবতীয় নদী শাসন, আবহাওয়া বাতাসের গতি নদী ভাঙন বিষয়ে জরিপের জন্য চীনা বিশেষজ্ঞদল কয়েকবার এসে এলাকা ঘুরে সবকিছু চূড়ান্ত করেছে। এদিকে দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘব হতে যাওয়ায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মুখেমুখে এখন পদ্মা ও বেকুটিয়া সেতু। বেকুটিয়া সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে বেকুটিয়া নৈকাঠী ও চরখালী-টগড়া ফেরি সার্ভিসের আর কোন প্রয়োজন হবে না।

এদিকে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা এবং সমুদ্র সৈকত সাগর কন্যা কুয়াকাটার সাথে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল এবং সমুদ্রবন্দর মংলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে এই বেকুটিয়া সেতুটি। পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম বলেছেন, এই সেতুটি নির্মিত হলে পিরোজপুর জেলার চারটি উপজেলার সাথে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক সংযোগ হবে। পিরোজপুর চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ও পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মসিউর রহমান মহারাজ জানান, বেকুটিয়া সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান অকল্পনীয়ভাবে পরিবর্তিত হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!