• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেবাচিমে ইর্ন্টান ডাক্তারদের ধর্মঘট


বরিশাল ব্যুরো মার্চ ২৩, ২০১৮, ০৮:২৮ পিএম
শেবাচিমে ইর্ন্টান ডাক্তারদের ধর্মঘট

মৃত খাদিজাকে ঘিরে স্বজনের আহাজারি

বরিশাল: বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসার অবহেলায় অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধুর মৃত্যু এবং স্বামীকে বেদম পিটিয়ে শিক্ষানবীশ (ইর্ন্টান) চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডেকেছেন।

শুক্রবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।

হাসপাতালের নিচতলায় প্রধান ফটকের করিডোরে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে কনষ্টবল মো. শাকিলকে গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবি না মানা পর্যন্ত কাজে যোগদান না করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের অপর দুটি দাবি হলো- হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন।

তবে কনস্টবল শফিকুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলে বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সকাল ১০টায় শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। একজন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক এসে চিকিৎসা দিলেও রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সন্ধা ৬টার দিকে নার্সদের পরামর্শে রোগীকে দ্রুত ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পর দেড়ঘন্টায়ও কোনো চিকিৎসক সেখানে যাননি। ইন্টার্ন চিকিৎসককের কক্ষে ঢুকে তাদের ওটিতে যাওয়ার অনুরোধ জানালে তারা সিনিয়র চিকিৎসক ছাড়া সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। এসময় শফিকুল ইসলাম এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতধরে টানাটানি করলে তাকে আটকে বেদম মারধর করেন অন্যান্য চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সকালে প্রসাব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় খাদিজা আক্তার (২৩)। একজন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক এসে চিকিৎসা দিলেও রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সন্ধা ৬টার দিকে নার্সদের পরামর্শে রোগীকে দ্রুত ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পর দেড়ঘন্টায়ও কোনো চিকিৎসক সেখানে যাননি। পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কক্ষে ঢুকে তাদের ওটিতে যাওয়ার অনুরোধ জানালে তারা সিনিয়র চিকিৎসক ছাড়া সেখানে যেতে অস্বীকার করেন।

পরে রাত পৌনে ৮টায় হাসপাতালের প্রসূতি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) কক্ষে খাদিজা আক্তার ও গর্ভে থাকা ৯ মাসের সন্তানের মৃত্যু হয়। খাদিজা আক্তার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ কনষ্টবল মো. শাফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তাদের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলার চরনাবাদ গ্রামে।

নিহতের স্বজনদের দাবি, হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়িত্বহীনতায় খাদিজার মৃত্যু হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, একই সময়ে ওটিতে প্রসূতি খাদিজা বেগমের মৃত্যু হলে সেখানে অপেক্ষারত স্বজনরা ওটির দরজা-জানালার দুটি গ্লাস ভাঙচুর ও সেখানে থাকা চিকিৎসকদের ওপর চড়াও হন। চিকিৎসকরাও পাল্টা হামলা চালিয়ে স্বজনদের বেদম মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সেবিকা জানান, খাদিজা বেগমের অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে ওটিতে নেয়ার জন্য তারা বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) বিকেলেই চিকিৎসকদের অবহিত করেন। ওই সময়ে ওটির দায়িত্বে থাকা প্রসূতি বিভাগের রেজিষ্ট্রার ডা. শারমিন ওটিতে ছিলেন না। বাহিরে প্রাইভেট প্রাকটিস শেষে তিনি বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপরই স্বজনরা ওটি ভাঙচুর করে। শিক্ষানবীশ চিকিৎসক অ্যাসোশিয়েসনের সহ সম্পাদক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রসূতি খাদিজা আক্তারের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। তাকে ওটি টেবিলে নেয়ার পরই মৃত্যু ঘটে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুল কাদের বলেন, ডাক্তারের অবহলোয় খাদিজার মৃত্যু হয়নি। উচ্চ রক্তচাপের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, অপারেশন থিয়েটারের দায়িত্ব তার নয়, সুতরাং মামলাও তিনি খাবেন না।

নিহতের স্বামীকে পিটিয়ে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকদের ধর্মঘটে যাওয়া প্রসঙ্গে ডা. কাদের বলেন, তারা হাসপাতালের ওটি ভাঙচুর করেছেন। ধর্মঘটে সৃস্ট সমস্যা সমাধানে সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে শুক্রবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সভা করার কথা রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!