• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্যালিকাকে বিয়ে করতে দুলাভাইয়ের জটিল ফাঁদ!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  জানুয়ারি ৯, ২০১৭, ০৫:২৭ পিএম
শ্যালিকাকে বিয়ে করতে দুলাভাইয়ের জটিল ফাঁদ!

বামে শ্যালিকার সিসিটিভি ফুটেজ, ডানে ইরশাদ

ঢাকা: ফাঁদ ছিল, ঘুঘুও ছিল। কিন্তু, শিকারির হাতে শিকার ধরা পড়ার আগেই ফাঁস হয়ে গেল ফাঁদের গেরো। ফন্দি এঁটে যৌন নিগ্রহ করিয়ে শ্যালিকাকে বিয়ের চালটা তাই ভেস্তে গেল ইরশাদের। আপাতত কেজি হালি থানার শ্রীঘরেই ঠাঁই হয়েছে তার।

৩৪ বছরের ইরশাদ খান পেশায় সেলস‌্  এক্সকিউটিভ। বেঙ্গালুরুর নাগাওয়ারার বাসিন্দা। বহুদিন ধরেই শ্যালিকাকে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু স্ত্রী ও পরিবারের অন্যদের ভয়ে শ্যালিকাকে তা জানানোর সাহস পাননি। শেষে ফন্দি আঁটেন যৌন নিগ্রহ করিয়ে শ্যালিকার অসহায়তার সুযোগ নেয়ার। সব কিছু পরিকল্পনা মাফিকই এগোচ্ছিল। গেল শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এক ব্যক্তিকে দিয়ে শ্যালিকাকে হেনস্থাও করান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যান।

কী প্ল্যান করেছিলেন দুলাভাই?
ইরশাদ জানতেন শ্যালিকা রোজ সকাল ৬টা নাগাদ হেঁটে অফিস যান। ওই সময়ে রাস্তা প্রায় ফাঁকাই থাকে। এক ব্যক্তিকে দিয়ে তার পিছু নেওয়ান ইরশাদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বেঙ্গালুরুর নাগাওয়ারা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই লোকটিই শ্যালিকার হাত ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। জোরজবরদস্তির সময় শ্যালিকার হাত ও পায়ে আঘাত লাগে। জিভ ও ঠোঁটেও কামড়ে দেয়। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন বেরিয়ে পড়লে তাকে ফেলে রেখে পালায় ওই ব্যক্তি। পরে কে জি হালি থানায় শ্যালিকা যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে তার প্রাথমিক চিকিৎসাও করানো হয়।  শুক্রবার এই খবরটিও সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিল।

পুলিশ জানায়, এমনিতেই এই সময়ে যৌন হেনস্থার খবরে বেঙ্গালুরু সরগরম। পূর্ব বেঙ্গালুরুর কাম্মানাহাল্লিতে এক নারীর যৌন হেনস্থার ঘটনায় তোলপাড় হয় কর্ণাটক। সিসিটিভি ফুটেজে যে হেনস্থার ছবিও ধরা পড়েছিল। এই সুযোগটাকেই হাতছাড়া করতে চাননি ইরশাদ। নিজের পরিকল্পনার জন্য কাম্মানহাল্লির এই ঘটনারই সাহায্য নিয়েছিল ইরশাদ। ভেবেছিলেন, এই নিগ্রহের পর অসহায় হয়ে পড়বেন শ্যালিকা আর তার পরিবার। আর সেই সুযোগেই মোক্ষম চালটা চালবেন। একপ্রকার ত্রাণকর্তা হিসেবে উদয় হবে দুলাভাই। 

কীভাবে করতের কাজটি? ইরশাদ শ্যালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেবেন। অসহায় পরিবার তা মেনেও নেবে। এতে এক দিকে যেমন পরিবারের কাছে তার ভাবমূর্তি আরো ভালো হবে, পাশাপাশি শ্যালিকাকে বিয়ে করার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছাও পূরণ হয়ে যাবে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিকই এগোচ্ছিল। কিন্তু তদন্তের সময় ইরশাদের অতি উৎসাহ তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ জাগিয়ে তোলে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে জবাবে অসঙ্গতি মেলে। এর পরই ইরশাদকে চেপে ধরেন তদন্তকারীরা। জেরার সামনে ভেঙে পড়েন তিনি। স্বীকার করে নেন শুক্রবার সকালে কাজে যাওয়ার সময় শ্যালিকার ওপরে যে অচেনা লোকটি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সে তারই পাঠানো।

তদন্তকারীদের অনুমান, এই ঘটনায় সঙ্গে শ্যালিকাও যুক্ত থাকতে পারে। কারণ, শুক্রবার ঘটনার পর ওই নারী অভিযোগে জানান, অফিস যাওয়ার সময় এক অচেনা ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করছিল। এর কিছু পরেই আচমকা তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তার জিভ ও ঠোঁটে কামড় দেয়। সেই তিনিই আবার শনিবার (৭ জানুয়ারি) নিজের অভিযোগ কিছুটা বদলে বলেন, ওই সময়ে এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে নিজেই জিভ এবং ঠোঁটে কামড়ে ফেলেছিলেন। এই অসঙ্গতিই জেরেই তিনিও পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। সূত্র: আনন্দবাজার।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!