• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ষড়যন্ত্র প্রবণতা থেকে বেরোতে পারছে না পাকিস্তান


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৯, ২০১৬, ০৯:৫০ এএম
ষড়যন্ত্র প্রবণতা থেকে বেরোতে পারছে না পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে পরাজয়ের গ্লানি এখনো ভুলতে পারছে না পাকিস্তান। তাই তো স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও দেশটিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র প্রবণতা থেকে সরে আসতে পারছে না তারা। কোনো না কোনো অজুহাতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া প্রকাশ ঘটাচ্ছে বারবার। আর এ কাজটি তারা করার সাহস পাচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের একাত্তরের সহযোগী দালালদের কারণেই। একাত্তরে যাদের দেশবিরোধী ভূমিকার কথা এ দেশের মানুষ এখনো ভুলতে পারেনি, সেসব ঘাতক দালালকে রক্ষার ব্যাপারে পাকিস্তান কম কূটচাল চালেনি। কিন্তু তাদের রক্ষা করতে না পেরে এবার নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে পাকিস্তান। সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাওনা দাবি করতে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। তবে এ পাওনা কীসের, তা জানায়নি। পাকিস্তান অবশ্য এখনো বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তারপরও দেশটির সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে মোক্ষম জবাব দিতে হবে। পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা কড়ায়গণ্ডায় আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। 

দেশের গণমাধ্যমও সংবাদটিকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছেÑ বাংলাদেশের কাছ থেকে স্বাধীনতার আগে এবং ভারতের কাছ থেকে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের আগের পাওনা অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ’৭১ সালের আগে বিভিন্ন খাতে পূর্ব পাকিস্তানের কাছে যে টাকা পাওনা ছিল, ২০১৬ সালের জুন নাগাদ সম্পদ মূল্যায়নের মাধ্যমে তা পাকিস্তানি রুপিতে ৬০০ কোটি ৯২ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে। এই পাওনার বিষয়ে পাকিস্তানের সব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নতুন করে তথ্য চেয়েছে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর সম্পূর্ণ অযাচিত ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে গিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান। ওই সময় এ বিষয়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রতিবাদও জানানো হয়েছিল। এর পরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বারবার বিবৃতি দিয়েছে দেশটি। সর্বশেষ চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা মৌসুমী রহমানকে বহিষ্কার করে ইসলামাবাদ, যা ছিল আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও ভিয়েনা কনভেনশনের খেলাপ। সেই রেশ না কাটতেই পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে নতুন করে তথাকথিত ‘পাওনার’ খবর প্রকাশিত হলো।

ইতিহাসের অব্যর্থ সত্য হচ্ছে-  এ দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ লুটেপুটে পাকিস্তানের উন্নয়ন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৩০ লাখ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যাসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাত পুরোপুরি পঙ্গু করে দিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদাররা। স্বাধীনতার পর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশকে একটি টাকাও দেয়নি পাকিস্তান। বরং বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বণ্টনের যে বিষয়টি রয়েছে, এখনো তার কোনো সুরাহা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ওই অর্থ চাওয়া হলেও পাকিস্তান এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দেয়নি। সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা- পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের সব পাওনা কড়ায়গণ্ডায় আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘে এ দাবি উত্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ এ অর্থ এই দেশের মানুষের ন্যায্য পাওনা। এ ছাড়া নানা অজুহাতে পাকিস্তান বাংলাদেশকে যেভাবে ঘায়েল করার পাঁয়তার করছে, তারও সমুচিত জবাব দিতে হবে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা
 

Wordbridge School
Link copied!