• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবর্ধনার আড়ালে বিএনপির শোডাউন


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৮, ২০১৭, ১১:০৭ পিএম
সংবর্ধনার আড়ালে বিএনপির শোডাউন

ঢাকা: চার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিন মাস পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বুধবার(১৮ অক্টোবর) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল(রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনি।

দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। চিকিৎসা শেষে ৯৪ দিন পর দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া। তাকে সংবর্ধনা দিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর শোডাউন করল বিএনপি। যদিও এটাকে শোডাউন বলতে নারাজ দলের নেতারা। এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারণে দুপুর থেকেই বিমানবন্দর সড়কে দেখা দেয় যানজট।

দুপুরের পর থেকে বিমানবন্দর সড়কে নামে বিএনপির নেতাকর্মীদের স্রোত। বিকেল ৫টার আগেই বিমানবন্দর সড়কের আশপাশে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। জনস্রোত একপর্যায়ে সড়কের ফুটপাত থেকে রাস্তায় নেমে আসে। হ্যান্ড মাইকে নেতাকর্মীদের মূল সড়কে না নামার অনুরোধ জানায় পুলিশ।

শেষ পর্যন্ত তাদের সামলাতে হিমশিম খায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে মূলসড়কে উঠতেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। এসময় জনস্রোত ঠেলে গাড়িবহরকে সামনে এগোতে বেগ পেতে হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কোরবানির ঈদ করেন তিনি। যদিও চোখ ও হাঁটুর চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার এবারের সফরের কথা বিএনপি বললেও আওয়ামী লীগের নেতারা তার এই সফরের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দাবি করছিলেন।

তার ফেরা নিয়ে সন্দেহের কথাও বলছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তবে বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যকে অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দিয়ে আসছেন। আর খালেদা জিয়া বিদেশে থাকার মধ্যেই নাশকতা ও মানহানির চার মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে  গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। যার পেছনে সরকারের হাত রয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের দাবি।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একদিন আগেই জানান, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে জামিনও নেবেন তিনি।

এদিকে, খালেদা জিয়া বিমানবন্দরে নামার পর গাড়িতে করে সরাসরি গুলশানে তার বাসভনের পথে রওনা হন। তার সঙ্গে ছিলেন তার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও গৃহকর্মী ফাতেমা আখতার। এর আগে খালেদা উড়োজাহাজ থেকে নামার পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তাকে শুভেচ্ছা জানান তার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া ভিআইপি লাউঞ্জে পুলিশ সিনিয়র অন্য নেতাদের ঢুকতে না দেয়ায় তারা বিমানবন্দর মসজিদের কাছে সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গাড়িতে থাকা খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ছিলেন- আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, মীর নাসির, খন্দকার মাহবুব হোসেন, বরকতউল্লাহ বুলু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, গিয়াস কাদের চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, রুহুল আলম চৌধুরী, আবদুল হাই, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, লুৎফর রহমান খান আজাদ, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সানাউল্লাহ মিয়া, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, শাম্মী আক্তার প্রমুখ।
অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন- আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, হেলাল খান, শায়রুল কবির খান, শাহরিয়ার ইসলাম প্রমুখ।

অন্যদিকে, বিমানবন্দর থেকে বনানী-কাকলী পর্যন্ত সড়কে দুই পাশে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে দলীয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এইসব স্থানে রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বরিশালের সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন, সিলেটের সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম তাদের সমর্থকদের নিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়ান। তাদের হাতের ব্যানারে খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ অভিহিত করা হয়।

অপরদিকে, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছিল পুলিশ। বিমান বন্দরের ভেতরে আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য ছিল, বাইরেও মোতায়েন ছিল পুলিশ সদস্য। বিমানবন্দরে সামনে দুটি জলকামান, প্রিজন ভ্যানও ছিল।

সোনালীনিউজ/এমটিআই/জেএ/আতা

Wordbridge School
Link copied!