• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী প্রশ্নে ১২ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭, ১১:০৪ এএম
সংবিধানের ষোড়শ  সংশোধনী প্রশ্নে ১২ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ

ঢাকা: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানিতে আদালতকে সহায়তা করতে ১২ জন বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ করেছেন আপিল বিভাগ।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমরা সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ নিয়োগ দিন।

একই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল শুনানির দিন পিছিয়ে আগামী ৭ ই মার্চ ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষকে লিখিত বক্তব্য আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।

অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা হলেন, বিচারপতি টি এইচ খান, ডক্টর কামাল হোসেন, এম আমিরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিকুল হক,আজমালুল হোসেন কিউসি, রোকনুউদ্দীন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এমআই ফারুকি, এজে মোহাম্মদ আলী,আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়া।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

গত ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন। মামলাটির সঙ্গে সাংবিধানিক বিষয় জড়িত থাকায় হাইকোর্ট সরাসরি আপিলের অনুমতি দেন।

গত ১১ আগস্ট ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ, বাতিল ও সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করে দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইনসভার কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রয়েছে। দেশের সংবিধানেও শুরুতে এই বিধান ছিল। তবে সেটি ইতিহাসের দুর্ঘটনা মাত্র।

১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর গত ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ পায়। দেশের শীর্ষ আইনজীবীরা এবং সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলো এ সংশোধনী প্রত্যাখ্যান করে। পরে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন।

আবেদনে বলা হয়, এই সংশোধনী বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অন্যতম অংশ। কিন্তু এই সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী।

আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের ডিভিশন বেঞ্চ ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারি করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!