• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংলাপ শেষে ইসিতে ‘স্বস্তি’


সোনালী বিশেষ অক্টোবর ২৮, ২০১৭, ০৩:৩৯ পিএম
সংলাপ শেষে ইসিতে ‘স্বস্তি’

ঢাকা : সম্প্রতি শেষ হয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ পর্ব। সংলাপ শেষে দেশের ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে ৫৩১টি সুপারিশ পেয়েছে ইসি।

সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দলগুলোর স্পষ্ট বিভাজন প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলেছে।

বিপরীতে বিএনপি ও তার মিত্ররা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে জোর আপত্তি জানিয়েছে। জাতীয় পার্টিসহ তিনটি দল সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।

সিপিবিসহ ১২টি দল বলেছে, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এসব প্রস্তাব এলেও সংবিধানের বাইরে গিয়ে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের এখতিয়ার ইসির নেই। তবে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, যে সব প্রস্তাবে তাদের করার কিছু নেই, তা সরকারকে দেবেন তারা।

এদিকে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা বেশ সফলভাবে রাজনৈতিক দলের সংলাপ শেষ করেছি। সবাই খুব আন্তরিক ছিলেন, আমরাও সহায়তা পেয়েছি। সুচারু ও সফলভাবে সংলাপ সম্পন্ন করতে পেরেছেন বলে বর্তমান ইসি স্বস্তি বোধ করছেন।

হেলালুদ্দীন বলেন, সবার সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছি। এরপর সুপারিশগুলো একীভ‚ত করা হবে। যেসব সুপারিশ ইসির এখতিয়ারের মধ্যে থাকবে এবং অভিন্ন হবে-তা কমিশন একীভ‚ত করবে।

যেসব সুপারিশ এখতিয়ারের বাইরে রয়েছে, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে, সেগুলোও একীভ‚ত করে কমিশনের সার্বিক বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে, সিইসি নূরুল হুদা আগেই বলেছেন, সংলাপ শেষে সবার প্রস্তাব একীভ‚ত করে আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করব। যেসব বিষয় আমাদের এখতিয়ারে নেই, সেগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনে সরকারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

অভিন্ন যেসব প্রস্তাব : সব দলের অংশ গ্রহণে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত; প্রচারে সরকারি সুবিধা বাদ; কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন; প্রবাসীদের ভোটাধিকার;  অনলাইনে মনোনয়ন জমা; গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তৎপরতা বন্ধ; স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ১% সমর্থন তালিকা বাতিল; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনস্ত রাখা; নিবন্ধিত দলকে রাষ্ট্রীয় অনুদান, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ও জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত ব্যক্তি, মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা; ফৌজদারি দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেয়া; নির্বাচনে ধর্মের সর্বপ্রকার ব্যবহার, সাম্প্রদায়িক প্রচার প্রচারণা ও ভোট চাওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করা; স্বাধীনতা বিরোধী ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলকে নিবন্ধন না দেয়া ; প্রার্থীর নাম, দল ও প্রতীকের উল্লেখ সম্বলিত অভিন্ন পোস্টারের ব্যবস্থা করা; নির্বাচনী বিরোধ তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা, নির্বাচন কালো টাকা ও পেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত রাখা, নৈতিক স্খলনের অভিযোগে দন্ডিতদের দুই বছর পর সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার সুযোগ বাতিল করা, যে সব দল ৩০ এর বেশি প্রার্থী মনোনয়ন দেবে সে সব দলকে বেতার ও টিভিসহ সরকারি প্রচারমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের কমিশন থেকে প্রত্যাহার করা প্রভৃতি।

ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে শপথ : একটি দল বলেছে, প্রত্যেক নির্বাচনী কেন্দ্রে যারা দায়িত্ব পালন করবেন- ইউএনও, ওসি, প্রিসাইডিং অফিসার, সেনাবাহিনীর সদস্য তারা জনসমক্ষে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআন/গীতা/বাইবেল/ত্রিপিটক ছুঁয়ে নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার শপথ নিতে হবে।

নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আপত্তি : ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩% সম্ভব না বলে মত দিয়েছে একটি দল, খেলাফত মজলিশ,  ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্বের বিধান বাতিলের সুপারিশ ইসলামী ফ্রন্ট, কমিটিতে ৩৩% নারী চায় না জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এবং সংসদ ও দলে নারীর বিধান বাতিল চায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

সংলাপ বয়কট : বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা’র প্রসঙ্গ টেনে আনায় সিইসির সঙ্গে সংলাপ বয়কট করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। সেই সঙ্গে দলটি সিইসি কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবিও করে কাদের সিদ্দিকী নেতৃত্বাধীন দলটি।

তবে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, দলটি প্রায় তিন ঘণ্টা সংলাপ করে খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে সংলাপ বর্জনের যে ঘোষণা দিয়েছে, তা গণমাধ্যমের দৃষ্টি কাড়তেই করেছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!