• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সখীপুরে বাড়ছে স্ত্রীর তালাক, এক বছরে বিচ্ছেদ ৫৪০


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি মার্চ ২৯, ২০১৭, ০২:৪৬ পিএম
সখীপুরে বাড়ছে স্ত্রীর তালাক, এক বছরে বিচ্ছেদ ৫৪০

টাঙ্গাইল : সখীপুরে স্ত্রী কর্তৃক তালাকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। গত এক বছরে (২০১৬ সাল) ৫৪০টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৫ সালে ৫০৫, ২০১৪ সালে ৪২৫ ও ২০১৩ সালে ৩৫৬টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।

সখীপুর পৌরসভার চারটিসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নিকাহ্ ও তালাক রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নিবন্ধন বই থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ২০১৬ সালে উপজেলার ১২টি নিকাহ্ রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে মোট ৭৬৫টি বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

সূত্র জানায়, সমাজ পরিবর্তনের প্রভাব, বাল্যবিয়ে, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর উদাসীনতা, পরকীয়া, স্বামী প্রবাসে থাকা, শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন, স্বামীর মাদকাসক্তি, যৌতুক, নারীর সচেতনতা ও আত্ম-মর্যাদা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে বলে অনুসন্ধান তথ্যে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নে ৮০, কালিয়া ইউনিয়নে ১১৬, বহুরিয়া ইউনিয়নে ২৮, হাতীবান্ধা ইউনিয়নে ৪১, যাদবপুর ইউনিয়নে ৬৬, গজারিয়া ইউনিয়নে ৩৬, বহেড়াতৈল ইউনিয়নে ৩১, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে ২০ ও পৌরসভায় চারটি কার্যালয়ে ১২২টি বিয়ের বিচ্ছেদ নিবন্ধন করা হয়েছে।

এরমধ্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে সাত, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে ২৭৩ ও ছেলে-মেয়েপক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে ২৬০টি বিয়ের তালাক নিবন্ধন করা হয়েছে। উপজেলার  ১২টি কাজির কার্যালয় ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া যায়।

কালিয়া ইউনিয়ন নিকাহ্ ও তালাকা রেজিস্ট্রার (কাজি) মাহবুব সাদিক জানান, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ‘বি’ তালাক, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে ‘ডি’ তালাক এবং ছেলে ও মেয়েপক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে তালাককে ‘সি’ তালাক এবং বিয়ে নিবন্ধনকে ‘এ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

একাধিক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর খরচ না দেওয়াসহ কোনো খোঁজ-খবর না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর স্বামীকে তালাক দিয়েছি।

উপজেলা নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজি শফিউল ইসলাম বাদল বলেন, ‘আইনি সুবিধা থাকায় মেয়েদের পক্ষ থেকেই বেশিরভাগ তালাক দেওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, ৮০-৯০ ভাগ তালাক দিচ্ছেন মেয়েরা ।

সখীপুর মহিলা কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক বাবুল আকতার বলেন, ‘স্বামী প্রবাসে থাকা, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির অমিল, পরকীয়া, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের প্রভাব, ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব এবং বাঙালি সংস্কৃতির বিচ্যুতি, মূল্যবোধগত অবক্ষয়সহ নানা কারণে স্ত্রী কর্তৃক তালাকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী সরকার রাখী জানান, তালাক কমাতে হলে আগে বাল্যবিয়ে ঠেকাতে হবে। এছাড়া অসময় বিয়ে, যৌতুক, দীর্ঘদিন স্বামী প্রবাসে থাকা, পরকীয়া, স্বামী কর্তৃক নির্যাতন তালাকের অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!