• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
বস-২ বিতর্ক:

‘সততার সঙ্গে আছি, কারো হুমকিতে ভয় পাই না’


মিতুল আহমেদ জুন ১০, ২০১৭, ০৩:১৫ পিএম
‘সততার সঙ্গে আছি, কারো হুমকিতে ভয় পাই না’

ঢাকা: ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে যৌথ প্রযোজনার দুই ছবি বস-২ ও নবাব! আর যৌথ প্রযোজনা হওয়ায় ছবি মুক্তি নিয়ে তৈরি হচ্ছে জটিলতা! কারণ এই ছবি দুটো যৌথ প্রযোজনার নিয়ম নীতি, অধ্যাদেশ অনুসরণ করে নির্মিত কিনা সে বিষয়ে সেন্সর বোর্ডের শরণাপন্ন হয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র ঐক্যজোট নামের সংগঠন! আর এরপরই বিপত্তির শুরু। কারণ, যৌথ নীতিমালার বিচারে প্রিভিউ কমিটি মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘বস-২’ ছবিটির মধ্যে দুই দেশ থেকে শিল্পীর অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পায়। বলা হয়, বস-২ তে আশিভাগ শিল্পী ভারতের, আর বিশ ভাগ বাংলাদেশের!

আর এমন আপত্তির কারণে জটিলতায় কলকাতার সঙ্গে দেশের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার যৌথ-অ্যাডভেঞ্চার ছবি ‘বস-২’। প্রিভিউ কমিটির আপত্তির ভিত্তিতে এবার মুখ খুলেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানট জাজ। সেখানে প্রিভিউ কমিটির আপত্তির বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে তারা শিল্পী নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো অসমতা নেই জানিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেখানে ছবিতে নুসরাত ফারিয়া, অমিত হাসান ও নাদের চৌধুরীসহ মোট ষোলজনের তালিকা প্রকাশ করে। যারা বাংলাদেশ থেকে এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। শুধু তাই না, ছবি দেখেও নুসরাত, অমিত এবং নাদেরকে ছাড়া বাকিদের চিনতে না পারায় প্রিভিউ কমিটিতে থাকা চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি গুলজার আহমেদকে অপসারণ করার আহ্বান জানানো হয়। এমনকি তাকে নিরপক্ষেতাহীন ও অযোগ্য বলেও মন্তব্য করা হয়।   

তারই প্রেক্ষিতে কথা হয় প্রিভিউ কমিটিতে থাকা চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি গুলজার আহমেদের সঙ্গে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালীনিউজের কাছে এই নির্মাতা জানান, জাজ যে অভিযোগ করলো তা আমি দেখেছি। তাদের এই অভিযোগ বিষয়ে আমার বক্তব্য স্পষ্ট। যে ষোলোজন শিল্পীর নাম তারা তালিকায় প্রকাশ করলো তাদের অধিকাংশকে আমিসহ সেন্সর বোর্ড, প্রিভিউবোর্ডের কেউ চিনে না। আর আমি যদি নাই চিনি, তাহলে তারা বাংলাদেশে কেমন আর্টিস্ট? আমি এই ইন্ডাস্ট্রিতে ত্রিশ বছরের বেশী সময় ধরে আছি। অথচ জাজ যে লিস্ট প্রকাশ করলো, তারা বাংলাদেশের শিল্পী হওয়া সত্ত্বেও সেখান থেকে কাউকেই আমি চিনি না। এটা কেমন কথা, বলেনতো? আমি একা হলে কথা ছিলো, কিন্তু সেন্সর বোর্ডের মানুষওতো কাউকেই ওদের আর্টিস্ট হিসেবে চিনলো না। জাজ বলছে তারা নতুন শিল্পী নিছেন, কিন্তু তারা কারা?

সিনেমাটা দেখার পর নুসরাত ফারিয়া, অমিত হাসান ও নাদের চৌধুরী ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশের আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃত বা নুন্যতম পরিচিত নয় জানিয়ে গুলজার আহমেদ আরো জানান, জাজের ষোলো জনের তালিকার মধ্যে ফারিয়া, অমিত হাসান আর নাদের চৌধুরী ছাড়া কাউকেই চিনি নাই। তারমধ্যে অমিত হাসান আছে মাত্র চারটা সিনে, আর এই ছবিতে নুসরাত ফারিয়াও আসে অনেক পরে। সে এই ছবিতে খুব গুরত্বপূর্ণ ক্যারেক্টারও না। আর নাদের চৌধুরীরও দেখা মিলে কয়েক মুহূর্তের জন্য!

অমিত হাসান, নুসরাত ফারিয়া ও নাদের চৌধুরী ছাড়া যে ষোলজনের তালিকা জাজ প্রকাশ করেছে ছবিতে তাদের কোনো চরিত্রেও দেখা যায়নি জানিয়ে এই নির্মাতা আরো বলেন, ছবির শেষেওতো কারো নাম নাই। অভিনেতা হইলেতো ছবিতে তার ক্যারেক্টার লাগে। কিন্তু এই ছবিতে কারো কোনো চরিত্রই নাই। তাহলে তারা কারা অভিনেতা? মা, বাপ, দারোয়ান, কাজের মানুষ হইলেওতো হতো, কিন্তু এসব ছোট্ট চরিত্রেও বাংলাদেশ থেকে কাউকে দেখা যায়নি। কোনো কিচ্ছুতে নাই। তারা আসলে অভিনেতাই না!

তালিকায় প্রকাশিত ষোলজন যদি অভিনেতা হয়, তাহলে তার প্রেক্ষিতে এই ছবিতে ভারতীয় কোশন থেকে এরকম শিল্পী আরো দুইশো জন ছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের নাম জাজ প্রকাশ করলো, তাদেরকে কি আপনি চিনতে পারেন? কেউ চিনে না। সাংবাদিক, অভিনেতা, সেন্সর বোর্ডেরও কেউ চিনে না। আর জাজের কথাই যদি ধরে নেই, তাহলে এই ষোলজনের মতো অভিনেতা এই ছবিতে কলকাতার অংশ থেকে আরো অন্তত দুইশোজন ছিলো। তাহলে দুইশো জনের বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে এই ষোলজন? এটা কোন্ ধরনের সমতা?

বস-২ ছবিতে এই ষোলজন শিল্পী সমিতির সদস্য কিনা জানতে চাইলে গুলজার আহমেদ বলেন, আমার ধারনা এদের অধিকাংশই মেম্বার না।  

জাজতো সরাসরি আপনার অপসারণ চাইছে, দায়িত্ব থেকে আপনাকে সরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এমন জিজ্ঞাসায় গুলজার আহমেদ বলেন, মূর্খতার একটা সীমা আছে। জাজ তা লঙ্গন করছে। নিজেরাই বলছে নতুন আর্টিস্ট, আবার বলছে কেউ চিনছে না! এতো স্ববিরোধীতা। ব্যাপারটা যদি এরকম হতো যে, আমি একা দেখে তাদের চিনতে পারিনি তাহলে একটা কথা ছিলো। সাতজনের কমিটি আলোচনা করে সংখ্যাগরিষ্ট মতাতমতই গ্রহণ করা হয়। ব্যক্তিগত কারো বিদ্বেষ যদি থেকেও থাকে তাহলে সেটা প্রাধান্য পায় না। একেবারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়, এই দিক থেকে আমি বলতে পারি এই কমিটি পুরোপুরি স্বচ্ছ। আর আমি কারো হুমকিতে ভয় পাই না। আমি সততার সঙ্গে আছি। নিয়ম মেনে চলছি। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিএল

Wordbridge School
Link copied!