• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘সন্ত্রাসীর অপবাদ’, প্রতিকার চাওয়ার পথও বন্ধ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মে ২৪, ২০১৭, ০২:০১ পিএম
‘সন্ত্রাসীর অপবাদ’, প্রতিকার চাওয়ার পথও বন্ধ

ঢাকা: দেশের অন্যতম প্রধান ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’ কে আবারো সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করলেন কানাডার ফেডারেল কোর্ট। শুধু তাই নয়, ফেডারেল কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ চেয়ে করা আবেদনও নাকচ করে দিয়েছেন বিচারক।

এ রায়ের ফলে দলটির ব্যাপারে কানাডার ফেডারেল কোর্টের দু’জন বিচারকের মন্তব্যের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেল।

গত ১২ মে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলটির বিষয়ে কানাডার ফেডারেল কোর্টের বিচারক ওই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রায় ঘোষণার ১১ দিন পর মঙ্গলবার (২৩ মে) লিখিতভাবে তা প্রকাশ করা হয়েছে। ওইদিনিই কানাডাভিত্তিক অনলাইন নিউজপোর্টাল নতুনদেশ ডটকম তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে।

এর আগে মোহাম্মাদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে ঢাকার মীরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদনে ফেডারেল কোর্টের বিচারক জাস্টিস ব্রাউন বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচারক বাংলাদেশের রাজনীতি, বিএনপির পরিচালিত লাগাতার হরতাল এবং হরতালকে কেন্দ্র করে পরিচালিত সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পর্কে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে গত ২৫ জানুয়ারি ওই মন্তব্য করেছিলেন।

এবার একই কোর্টের আরেক বিচারক বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে অভিহিত করলেন। একই সঙ্গে এই দুই বিচারকের মন্তব্যের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চেয়ে করা আবেদনও নাকচ করে দিয়েছেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ‘এস এ’ আদ্যক্ষরের ব্যক্তি ২০০৪ সালে বিএনপির যুব শাখা জাতীয়তাবাদী যুবদলে যোগ দেন। ২০১২ সালে বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে তিনি কানাডায় এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত লিখিত রায়ে তার নাম প্রকাশ না করে ‘এস এ’ আদ্যক্ষরে বর্ণনা করতে নির্দেশ দেন। ‘কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন’ - এই তথ্য প্রকাশ পেলে বাংলাদেশে তার জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করে তিনি আদালতের কাছে তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। তার এ আবেদন আদালত গ্রহণ করেন।

২০১৬ সালের আগস্টে ইমিগ্রেশন ডিভিশন বিএনপির ওই নেতার আবেদনের শুনানি করে এবং ওই দিনই সিদ্ধান্ত জানায়। ‘এস এ’ নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করেছেন উল্লেখ করে ইমিগ্রেশন ডিভিশন তাকে কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করে।

ইমিগ্রেশন ডিভিশনের সিদ্ধান্তে বলা হয়, বিএনপি সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত আছে, সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিলো, সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হতে পারে- এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। কাজেই বিএনপির সদস্য হিসেবে ‘এস এ’ ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট এর ৩৪ (১) (এফ) ধারা মোতাবেক কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য।

ইমিগ্রেশন ডিভিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্টে জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করেন ‘এস এ’। ফেডারেল কোর্টের বিচারক জে, ফদারগিল আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে রিভিউ আবেদনের
নিষ্পত্তি করেন। একই সঙ্গে ফেডারেল কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগের আবেদনটিও নাকচ করে দেন।

রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচারক বলেন, ইমিগ্রেশন ডিভিশনের পর্যালোচনায় আমি কোনো ভুল খুঁজে পাইনি। কানাডার আইনে সন্ত্রাসের বিস্তৃত যে সংজ্ঞা দেয়া আছে তার বিবেচনায়, বিএনপির হরতাল ডাকার উদ্দেশ্য এবং ইচ্ছা, হরতালে যে সন্ত্রাস এবং স্বাভাবিক জীবনের বিঘ্ন ঘটেছে এবং এই কাজের (হরতালের) ফলে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে বিএনপির সচেতনতা বিবেচনায় নিয়ে ইমিগ্রেশন ডিভিশন যুক্তিসঙ্গতভাবেই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে বিএনপি হচ্ছে একটি সংগঠন যেটি সন্ত্রাসে লিপ্ত ছিলো, আছে বা সন্ত্রাসে লিপ্ত হবে।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!