• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ধান চেয়ে পুরস্কার ঘোষিত ১৪ মাদক ব্যবসায়ী কোথায়?


যশোর প্রতিনিধি মে ২৪, ২০১৮, ১২:৪৯ পিএম
সন্ধান চেয়ে পুরস্কার ঘোষিত ১৪ মাদক ব্যবসায়ী কোথায়?

যশোর : মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে গত বছরের ২৪ মে যশোরের চিহ্নিত ১৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জেলা পুলিশ। ঘোষণার এক বছর পেরিয়ে গেলেও একজন বাদে বাকিরা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ওই একজন শহরের চাঁচড় রায়পাড়া এলাকার মৃত ওলিয়ার রহমানের মেয়ে বেবি খাতুন রয়েছে কারাগারে। বাকিরা সব পলাতক।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, জেলার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী ওই ১৪ জনের প্রত্যেকের প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে রয়েছে সখ্য। ব্যবসার আয়ের একটা বড় অংশ দিয়ে ওই প্রভাবশালীদের তদবিরে অনেকটা নিরাপদে কারবার চালিয়ে যায় তারা। এরপরও বিভিন্ন সময় প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করলে শুধুমাত্র কৌশল বদলে চলে তাদের ব্যবসা।  

এদিকে গত তিন রাতে যশোরের সাত মাদক ব্যবসায়ী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ধরিয়ে দিতে পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করায় যশোর অঞ্চলের মাদকের ডিলার হিসেবে পরিচিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের অনেকে বরাবরের মতো ভারতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে সব বিষয়ে তারা খোঁজখবর রাখছে। পরিস্থিতি ঠিক হলে আবারো স্বস্থানে এসে কারবার শুরু করবে তারা। তবে পুলিশ বলছে, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পলাতক রয়েছে। তাদের সন্ধানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ মে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয় চিহ্নিত এসব মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলে।

জেলা পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ী হচ্ছে- শহরের চাঁচড় রায়পাড়া এলাকার মৃত ওলিয়ার রহমানের মেয়ে বেবি খাতুন, একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী রুমা বেগম, শংকরপুর এলাকার মৃত পিয়ারু কাজীর ছেলে তারেক কাজী, চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মণ্ডলের ছেলে শফি মেম্বার, অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের আবদুল গণির ছেলে কামরুল ও বুইকারা গ্রামের মৃত হাশেম আলীর মেয়ে লিপি বেগম, বেনাপোল পোর্ট থানার ভবের বেড় গ্রামের কলুপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, বারোপোতা গ্রামের মোনতাজ আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম, চৌগাছার ফুলসারা গ্রামের মৃত আবদুল হকের ছেলে আশরাফুল আলম, শার্শার কোটা পশ্চিমপাড়ার শের আলী দফাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন আনা, চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে ইসরাইল হোসেন নুনু, শার্শার কাশিপুর-গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত জয়নালের ছেলে আশাদুল ইসলাম আশা, বেনাপোল পোর্ট থানার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত কেরামত মল্লিকের ছেলে বাদশা মল্লিক ও রঘুনাথপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে জাহাঙ্গীর। গত এক বছরেও ধরা পড়েনি শীর্ষ এসব মাদক ব্যবসায়ী। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা তৎপর থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নাগালে পায়নি।

সর্বশেষ গত তিন দিনে যশোর সদর ও অভয়নগরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাতজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। নিহতরা হচ্ছে ১৯ মে ভোরে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অভয়নগর উপজেলার চার নম্বর মডেল ওয়ার্ড এলাকার আবদুল বারেক শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান ওরফে হাবি শেখ, নাদের আলী মোড়লের ছেলে আবুল কালাম ও সাত্তার কাশারির ছেলে মিলন কাশারি।

২০ মে ভোরে যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার সোহরাব হোসেনের ছেলে ডালিম হোসেন ও ২১ মে ভোরে যশোরের চৌগাছা উপজেলার বড় আন্দুলিয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, শার্শা উপজেলার মহিষাখোলা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে মুক্তাজুর রহমান ও শার্শার টেংরা উত্তরপাড়া জামতলা এলাকার আবদুর রহমান গাজীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম গাজী। এই সাতজনের একজনেরও নাম পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত ওই ১৪ জনের মধ্যে নেই।

কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, ‘পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পলাতক রয়েছে। এদের মধ্যে বেবি খাতুন পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলখানায় রয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানে বাকিদের ধরতে তৎপর আছে পুলিশ।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!