• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘সব দলের প্রস্তাব বিবেচনা করে ইসি গঠন’


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৮, ২০১৭, ১০:০৯ পিএম
‘সব দলের প্রস্তাব বিবেচনা করে ইসি গঠন’

ঢাকা: সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর যে মতামত ও প্রস্তাব এসেছে, তা বিবেচনা করে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। নতুন ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের শেষ দিনে এই আশাবাদ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি, তবে কী প্রক্রিয়ায় নতুন ইসি গঠন হবে, তা জানাননি তিনি। শেষ দিনে বুধবার বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন মো. আবদুল হামিদ।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠনে অনেক সুচিন্তিত প্রস্তাব ও মতামত দিয়েছে।’ ‘তিনি (রাষ্ট্রপতি) আশা প্রকাশ করেন, এসব প্রস্তাব ও মতামত বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে।’ 

রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব ও মতামত শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক অবদান রাখবে। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বানও রাষ্ট্রপতি রেখেছেন বলে প্রেসসচিব জানান।

কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিদায় নিতে যাওয়ায় গতবারের মতো এবারও দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে নতুন ইসি গঠনের উদ্যোগ নেন রাষ্ট্রপতি। কাজী রকিবউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ইসি গঠনের আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান একটি সার্চ কমিটি গঠন করে তাদের সুপারিশের মধ্য থেকে পাঁচজনকে নিয়ে ইসি গঠন করেন।

এবারও একই প্রক্রিয়ায় ইসি গঠন হবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথায় আভাস মিলেছে; যদিও বঙ্গভবন থেকে এখনো সে বিষয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বেশির ভাগ দল সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে, তা না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটির পক্ষেই মত দিয়েছে বেশির ভাগ দল।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, ইসি গঠনে সম্ভব হলে এখনই আইন প্রণয়ন কিংবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে; তবে তাদের এই উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি। 

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক তারা চান না, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চান তারা। তবে তাদের আন্তরিকতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বিএনপির। বিএনপি সাবেক একজন প্রধান বিচারপতিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। 

বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই আশা প্রকাশ করেছে, রাষ্ট্রপতি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সংলাপে আবদুল হামিদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে সংলাপ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলগুলোর সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি। জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য প্রতিষ্ঠার গুরুত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আবদুল হামিদ। রাজনৈতিক দলগুলোর পরমতসহিষ্ণুতার সংস্কৃতিচর্চার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সলের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল গতকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় তারা আশা প্রকাশ করেন, সংবিধান অনুযায়ী একটি গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির চলমান উদ্যোগ সফল হবে।

প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীন জানান, জাকের পার্টি সব নিবন্ধিত দল থেকে একজন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে। এ ছাড়া স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এ এ মান্নান ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে গতকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে। ইসলামী ফ্রন্ট আশা করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, যার মাধ্যমে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান। মুসলিম লীগ নেতারা বলেন, দেশের উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দৃঢ় মনোবৃত্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেয় মুসলিম লীগ। ইসিতে একজন নারী কমিশনার রাখারও প্রস্তাব দেয় তারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!