‘সব বোলার মাইর খায়, মোস্তাফিজের নাম হয়’

ঢাকা: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) রাজকীয় অভিষেকের পর সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে শুধু শিরোপা জিতিয়েই থেমে যান নি। নিজেও জিতেছেন সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরষ্কার। তবে টানা ম্যাচ খেলার কারণে মূল্যও দিতে হয়েছে। যেতে হয়েছে সার্জনের ছুঁরির নিচে। অপারেশনের ধকল কাটিয়ে পুনর্বাসন শেষে অবশ্য মাঠেও ফিরেছেন। শ্রীলঙ্কায় শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্বরুপে ফিরে গত বারের মত এবারও ভারতে দুর্দান্ত কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র এক ম্যাচ খেলিয়ে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রাখে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের টিম ম্যানেজম্যান্ট। এতে চরম ক্ষুব্দ বাংলাদেশের ক্রিকেট দর্শকরা। বিষয়টা যেন এমন যে, ‘সব বোলার মাইর খায়, মোস্তাফিজের নাম হয়’।

আইপিএল’র নবম আসরে ১৬ ম্যাচে ৬১ ওভার খেলে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন কার্টার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। যৌথভাবে টুর্নামেন্টের পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছিলেন। আইপিএলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভোটাভুটিতে ৮৩.২ শতাংশ ভোট পেয়ে সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হয়েছিলেন তিনি।

গতবারের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে এবারের আইপিএল খেলতে ভারতে গেছেন মোস্তাফিজ। একটি ম্যাচে হায়দরাবাদের হয়ে মাঠেও নেমেছিলেন। কিন্তু সবকিছু ঠিকমতো হল না। ২.৪ ওভারে দিলেন ৩৪ রান। উইকেটও পাননি। ওই ম্যাচের পর থেকেই যেন এবারের আসরে মোস্তাফিজের জন্য আইপিএলের দরজা বন্ধ হয়ে গেল!

এরপর আর মাঠেই নামানো হল না মোস্তাফিজকে। হাতেগোনা দুই একজন ছাড়া সবাই যেখানে ব্যর্থ সেখানে মোস্তাফিজই যেন এক ম্যাচ রান দিয়ে পাপ করে ফেললেন। তাকে ম্যাচের পর ম্যাচ বসিয়ে রেখে সাইড বেঞ্চে।

এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি দামে কেনা হয় অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে। তিনিও বল ও ব্যাট হাতে ব্যর্থ। তবুও নিয়মিতই রাইজিং পুনের হয়ে খেলে যাচ্ছেন। টাইমাল মিলসকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে কেনে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোর। তিনিও বল হাতে ব্যর্থ। তবুও একাদশে নিয়মিত।

এবারের আইপিএলটা ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। অধিকাংশ ম্যাচেই ২'শ-এর কাছাকাছি রান হচ্ছে। সব বোলারকেই তুলোধুনো করে রান করছেন ব্যাটসম্যানরা। এখানে বোলারদের জন্য কিছুই নেই। সর্বশেষ শনিবার (২২ এপ্রিল) রাইজিং পুনের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে সানরাইজার্স। এই ম্যাচেও মোস্তাফিজকে রাখা হয়েছে দর্শক করে।  

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই রাগে ক্ষোভে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। তারা মোস্তাফিজকে দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।

আসগার খান নামের একজন লেখেন, ‘খেলার দরকার নাই, তাড়াতাড়ি বাংলার ছেলে বাংলায় ফিরে আয়।’
খন্দকার মিলানুর রহমান নামের একজন লেখেন, ‘এটি বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের প্রতি চরম অবিচার ছাড়া আর কিছুই নয়।’
আবু সাঈদ লেখেন, ‘এক ম্যাচ পিচের কারণে হয়ছে। কিন্তু বাকি একটি মাচ খেলানো উচিত ছিল।’
আতিক লেখেন, ‘মোস্তাফিজ আর আগের মতো নাই,,, তাছাড়া ভারত তো সব সময় আমাদেরকে বাঁশ দিতে প্রস্তুত।’
আকবর নামের একজন লেখেন, ‘কোনো বাংলাদেশী খেলোয়াড় যেন আর আইপিএল খেলতে না যায়, এটা আমার আহ্বান।’
মিলন রয়াল লেখেন, ‘ওরা অতি সহজে মোস্তাফিজকে পেয়েছে, তাই একটি ম্যাচ খেলিয়েই দিনের পর দিন বসিয়ে রাখছে।’
নুর ইসলাম লেখেন, ‘ভারতের আসল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেট ধ্বংস করা। তাই টাকার লোভ দেখিয়ে ভালো খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কবরস্ত করার পাঁয়তারা করছে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই