• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সমাবেশের আড়ালে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১১, ২০১৭, ০৯:০১ পিএম
সমাবেশের আড়ালে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি

ঢাকা: ১৯ মাস পর রাজধানী ঢাকায় প্রকাশ্যে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। রোববার (১২ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ করবে দলটি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ৭ নভেম্বরের ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হবে। 

বিএনপি আজকে সমাবেশের আড়ালে মহাসমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। আর এই সমাবেশকে ঘিরে আগেরদিন বিকেল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় শুরু হয় সাজ সাজ রব। বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই দাবি করা হয়েছে, তাদের এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দাবি, সমাবেশে নিজেদের মাঝে বিশৃঙ্খলার আশংকা করছেন তারা।

এদিকে, শুরুতেই সমাবেশ করার অনুমতি নিয়ে বেগ পেতে হয়েছে বিএনপিকে। ৮ নভেম্বর সমাবেশ করার জন্য প্রথম আবেদন করলে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন চলার কারণে অনুমতি মিলেনি। আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয় ৮ তারিখের পরে অন্য কোন দিন বিএনপি সমাবেশ করতে চাইলে বিবেচনা করে দেখা হবে। সে অনুযায়ী পুনরায় ১১ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি চায় দলটি। তবে শেষ পর্যন্ত ১২ নভেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি প্রদান করে ডিএমপি। সেই সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে একটি সাবধানী বাণীও পেয়েছে বিএনপি। 

অনুমতি দেয়ার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যদি সমাবেশের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বসে থাকবে না! সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশ করার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।

অন্যদিকে, অনেকদিন পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো ঐতিহাসিক স্থানে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর বেশ উৎফুল্ল ও আনন্দিত বিএনপির নেতাকর্মীরা। একধরনের চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিএনপির সিনিয়র নেতারা সেটি প্রকাশ্যে স্বীকারও করছেন। 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমরা আনন্দিত। আশা করি সরকার এই ধারা অব্যাহত রাখবে। সভা-সমাবেশ রাজনৈতিক দলের অধিকার। এখানে বাধা দেয়া যায় না। 

স্থায়ী কমিটির আরেকজন সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অবশ্য বিষটিকে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, কোন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সভা-সমাবেশের অনুমতির রাজনীতি কোথাও নেই আসলে। সরকার যে নিয়ম চালু করেছে এটা তো সংবিধান পরিপন্থী চিন্তাধারা। সংবিধানের স্পিরিটের সাথে এটা যায় না। একটা সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বহু নাটক করেছে সরকার। তারপরও তারা যে দেরিতে হলেও অনুধাবন করতে পেরেছে তাতে আমরা আনন্দিত। আমাদের প্রত্যাশা, এ ধারা অব্যাহত থাকুক, গণতন্ত্রের যে চেতনার ওপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সেটা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। এখন সেটা অনুপস্থিত।

দলীয় সূত্র জানায়, অনেক আগে থেকেই বিএনপি বড় সমাবেশ করার জন্য হাহাকার করছিলো। কিন্ত মিলছিল না অনুমতি। অবশেষে তা মিলেছে। সমাবেশটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দলটি। যদিও অনুমতি পাওয়ার আগে থেকেই বিএনপি প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে। দলীয় বিভিন্ন ইউনিটকে সমাবেশের জন্য ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে রাখে। বলতে গেলে সমাবেশে নেতাকর্মী জমায়েতের প্রস্তুতি দলটি আগে থেকেই সেরে নিয়েছে। 

বিএনপি নেতাদের দাবি, লোক সমাগম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলছে বিএনপি। সরকার কোন প্রকার বাধা না দিলে আজকের সমাবেশে কি অবস্থা হয় তা সরকার দেখতে পাবে।  

সমাবেশে লোক সমাগম কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার তো সব কাজে বাধা দেয়। ম্যাডামের দেশে ফেরার সময় বিমানবন্দরে যেতে নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হয়। এরপরও সেদিন কিভাবে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল তা দেশবাসী দেখেছে। এবার যদি সরকার বাধা না দেয় তাহলে লোক সমাগম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। তার মতে, জনগণ দিয়ে প্রমাণ হোক। ভবিষ্যতে আপনারাও তা যাচাই করতে পারেন।

আজকের সমাবেশকে ঘিরে আলাদা কোন বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না বলছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতাকর্মীরা আমাদের জন্য নিরাপত্তা। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের করা একটি উক্তি নিয়ে আশংকার কথাও বলছেন বিএনপি নেতারা।

জামায়াত ও শরীকরা কি থাকছে?

অনেকদিন পর বড় সমাবেশ করছে ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বদানকারী বিএনপি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায় যে, ২০ দলের অন্য শরীক দল জামায়াত সহ অন্য দলগুলোকে আমন্ত্রণ আছে কিনা সমাবেশে। এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, এটি বিএনপির সমাবেশ। অন্য কিছু এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ২০ দলের শরীকদের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!