• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
ছাপা অনিশ্চয়তা

সময়মত বই না পৌঁছানোর শঙ্কা


সোনালী বিশেষ অক্টোবর ৩১, ২০১৭, ০২:৩৭ পিএম
সময়মত বই না পৌঁছানোর শঙ্কা

ঢাকা : নবম-দশম শ্রেণীর পরিমার্জিত ১২টি পাঠ্যপুস্কত ছাপার কাজ শুরু করা যায়নি। ফলে সরকার ঘোষিত ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে ওসব বই পৌঁছে দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মূলত বই ছাপার জন্য কার্যাদেশ দিতে বিলম্ব করার কারণেই এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রেস মালিকরা এজন্য পাঠ্যবই তদারকির দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ি করেছেন। এনসিটিবি ও প্রেস সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নবম-দশম শ্রেণীর ১২টি বিভিন্ন বিষয়ের জন্য ছাপতে হবে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯১টি বই। ১০২টি লটে এসব বই ছাপা হওয়ার কথা। কিন্তু চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দুই মাসেরও বেশি সময় ক্ষেপণ করে ওই বই ছাপার কার্যাদেশের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। আর প্রেস মালিকদের নোটিফিকেশন ওয়ার্ড দেয়া হয় গত ২৩ অক্টোবর। নিয়ম অনুযায়ী প্রেস মালিক সম্মতির জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন। চুক্তির জন্য সময় পাবেন ২৮ দিন। তাছাড়া বই সরবরাহের জন্য সময় পাবেন ৫৫ দিন। সে হিসাবে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে বই সরবরাহ করলেও প্রেস মালিকরা আইনি সমস্যায় পড়বেন না।

সূত্র জানায়, নবম-দশম শ্রেণীর বই ছাপার কাজ যেসব প্রেস পেয়েছে, তাদের অনেকই প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের বই ছাপারও কাজ পেয়েছে।


স্বাভাবিকভাবেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কার্যাদেশের বই ছাপার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা নতুন কার্যাদেশের কাজ শুরু করবে না। এমন পরিস্থিতিতে প্রেস মালিকরা বই ছাপার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত কাজে লাগাবেন। ফলে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগবে। আর ওসব বই ছাপার জন্য ১১৭টি প্রতিষ্ঠান ৪৭২টি দরপত্র জমা দেয়। তার মধ্যে ৩৬৫টি যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত করা হয়। পরবর্তীতে ৬৫টি প্রতিষ্ঠানকে বই ছাপার কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এনসিটিবি।

ফলে এর আগে যথাসময়ে বই সরবরাহ করতে পারেনি এমন প্রতিষ্ঠানও কাজ পেয়েছে। তাতে বই ছাপার জন্য পর্যাপ্ত সক্ষমতা না থাকায় যথাসময়ে বই পেতে সমস্যা তৈরি হবে। এক্ষেত্রে এনসিটিবির এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে কার্যাদেশের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, চলতি বছর দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি’র মাধ্যমে নবম ও দশম শ্রেণীর ১২টি পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করা হয়। ওই বইগুলো হচ্ছে বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি ও হিসাববিজ্ঞান।

বইগুলো প্রণয়নে কাজ করেন উদ্দীপন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, ঢাকা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাসলিমা বেগম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এম আকাশ ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। কমিটি বইয়ের পরিমার্জিত কপি ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করে।

২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য মোট শিক্ষার্থী ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬ হাজার ৮৯৫ জন। তাদের জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৯ কপি পাঠ্যবই।

এদিকে বই ছাপা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান জানান, নবম-দশম শ্রেণীর ১২টি বই ছাপার কাজ এমন প্রতিষ্ঠানও পেয়েছে, যারা অতীতে যথাসময়ে বই দিতে পারেনি। ওই কারণে আমি মনে করি নবম-দশম শ্রেণীর বই তারা যথাসময়ে দিতে পারবেন না।

অন্যদিকে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, পরিমার্জন শেষে শিক্ষাবিদরা বই মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করেছেন সেপ্টেম্বরে। এখনো পরিমার্জন করা হচ্ছে। বই পুরোপুরি হাতে না পাওয়ার আগে কার্যাদেশ চূড়ান্ত করা যায় না। কোন বইয়ে কত পৃষ্ঠা থাকবে, কত ফর্মা থাকবে তা জানতে হয়। আর অতীতের কাজের মূল্যায়ন করে কাজ দেয়া হয় না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!