• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
লিগ্যাল এইডের মতবিনিময়ে প্রধান বিচারপতি

সরকারি আইনি সহায়তা পাওয়া মানুষের অধিকার


আদালত প্রতিবেদক মে ১৩, ২০১৮, ০৫:৫৩ পিএম
সরকারি আইনি সহায়তা পাওয়া মানুষের অধিকার

ঢাকা : প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আইনগত সহায়তা পাওয়া কোনো দান বা করুণা নয়। এটা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের অধিকার, আর রাষ্ট্রের এটা অপরিহার্য দায়িত্ব।  

শনিবার (১২ মে) সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ‘উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা বিচারপ্রার্থীগণের প্রত্যাশা ও জেল আপিল মামলা পরিচালনায় আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীদের আইনগত সহায়তা দিতে ২০০০ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন প্রবর্তন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক আছেন অথবা প্রতিনিধিত্ববিহীন অবস্থায় কিংবা আইনজীবী না থাকায় মামলা শুনানি করতে পারছে না এরূপ দরিদ্র কারাবন্দিদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিন। কারাগারের সঙ্গে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করুন। কারাবন্দিদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। জেল আপিল মামলা নিষ্পত্তির জন্য পৃথক একাধিক বেঞ্চ গঠন করা যায় কি না বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানান। লিগ্যাল এইডের মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত আসামিকে বিনা খরচায় রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে কারাগারে পাঠাতে হবে। জেল কর্তৃপক্ষকেও  রায়ের অনুলিপি সংগ্রহ করার ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে সমতার অমীয় বাণী আইনগত সহায়তা ব্যতিরেকে তা কখনই সম্ভব নয়। আইনগত সহায়তাকে বিচার পাওয়ার অন্যতম স্তম্ভ বলে তিনি  অভিহিত করেন।

প্রধান বিচারপতি মাহমুদ ফৌজদারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, কোনো আসামিকে থানা থেকে আদালতে হাজির করার সময় জিজ্ঞেস করতে হবে তার আইনজীবী নিয়োগের সামর্থ্য আছে কি না এবং অসমর্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইন সহায়তা কার্যালয়ের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। এতে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. ইমান আলী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল ইকবাল হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ।

মতবিনিময়ে জেলা ও দায়রা জজ, সিনিয়র জেল সুপার, আইনজীবীরা অংশ নেন। সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম জেল আপিলের ত্রুটি-বিচ্যুতির এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বলেন,  দেখা যাচ্ছে কোনো মামলায় আসামির সাজা হয়েছে ৫ বছর। কিন্তু জেল আপিল নিষ্পত্তির আগেই আসামি ওই সাজা ভোগ করে ফেলেছেন। এর কারণ হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ জেল আপিল। আপিল করা হয়েছে কিন্তু তার সঙ্গে রায়ের অনুলিপি নেই। এ কারণে এসব আপিল শাখায় পড়ে থাকে। তাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।  

বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম তথ্য প্রকাশ করে বলেন, গত ২ বছরে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি চার শতাধিক জেল আপিল নিষ্পত্তি করেছে। এটা নিষ্পত্তি করা সহজ বিষয় নয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!