ঢাকা : তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। অফিস শেষে নিয়মিত একটি কোচিং সেন্টারেও ক্লাস নিচ্ছেন। আর ছুটির দিনে নিজের কেনা লেগুনা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ‘সৎ যাত্রীর খোঁজে’! নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর গল্প যেমন আছে আবার অন্যের পকেট কেটে নিজে সম্পদশালী হওয়া লোকের সংখ্যাও কম নয়! ফেসবুকের কল্যাণে আবারও একজন ব্যতিক্রমী মানুষের দেখা মিললো খোদ রাজধানীর বুকে।
এমন একটা ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন একজন অনলাইন সাংবাদিক। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টও দেন। পাঠকের জন্য সেই পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘আমার সঙ্গে যে মানুষটিকে দেখতে পাচ্ছেন তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী। এলজিইডিতে চাকরি করেন তিনি। উনার আরেকটিক পরিচয় হলো উনি একজন শিক্ষকও। ফার্মগেটের একটি কোচিং সেন্টারে সন্ধ্যায় নিয়মিত ক্লাস নেন। আরেকটি পরিচয় হলো ছুটির দিনগুলোতে তিনি তিনি শিয়া মসজিদ থেকে বাড্ডা রুটে লেগুনা চালান। তবে উনার লেগুনাতে কোনো হেলপার নেই। কেউ ইচ্ছে হলে ভাড়া দেবে, না হলে দেবে না। এই বিশ্বাস নিয়েই তিনি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন।
তিনি বললেন, আমার অর্থের প্রয়োজন নেই। সেবা দেয়ার জন্যই গাড়ি চালাই। গাড়ি চালানোর সময় সৎ মানুষকে দেখলে ভালো লাগে, অসৎগুলোকে দেখলে কষ্ট হয়। তখন মনে স্বচ্ছল হলে নিশ্চয় ভাড়াটা দিয়ে যেত।
উনার গাড়িতে উঠার পরই তিনি ফ্যানটা মুভ করে দিলেন। অবাক হলাম। তাকালাম উনার দিকে। দেখলাম অন্যসব চালকদের থেকে পুরোপুরি আলাদা। কথাগুলোও মিষ্টি। পোশাকও মার্জিত। পায়ে Bay কোম্পানির জুতা। এসব দেখে বার বার মনে প্রশ্ন জাগছিল, উনার হয়তো আরও কোনো পরিচয় আছে।
জিজ্ঞেস করলাম হেলপার কোথায় আপনার, বললেন, উইথআউট হেলপার। ভাবনার সঙ্গে মিলতে শুরু করল উনার অাচরণ। বললাম, আর কী করেন? তিনি বললেন, আপনি কী সাংবাদিক? বললাম, না। তিনি মিষ্টি করে হাসলেন। এরপর উপরোক্ত পরিচয়গুলো দিলেন।
উনার নাম নিজামুল। ঢাকার আগারগাঁওয়ে থাকেন। বাড়ি বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলায়।
(লেখা ও ছবিগুলো জাগোনিউজের সহকারী বার্তা সম্পাদক মাহাবুর আলম সোহাগ-এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া)
সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :