• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
আরও হামলার আশঙ্কা

সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী


বিশেষ প্রতিনিধি জুলাই ১৫, ২০১৬, ০২:০৮ পিএম
সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আরও জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে নাশকতা ঠেকানোর প্রস্তুতি হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। এরই অংশ হিসেবে পুলিশ সদর দফতর থেকে দেশের সবকটি ইউনিটের প্রধানকে পাঠানো হয়েছে খুদেবার্তা (এসএমএস)। 

এর বাইরে সতর্ক করা হয়েছে কিছু গণমাধ্যম অফিস, পাঁচ তারকা হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বিমানবন্দর, কূটনৈতিক পাড়া, বিদেশি নাগরিকসহ টার্গেট ব্যক্তিদের। বিশেষ করে জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে খোদ সরকারপ্রধানের বক্তব্যের পর নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিশেষভাবে বলা হয়েছে। এজন্য দেশের সবকটি ইউনিটের প্রধানদের পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো হয়েছে বিশেষ খুদেবার্তা। 

বলা হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে চলাফেরা না করতে। টহলে গেলে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেটসহ নিরাপত্তাসামগ্রী পরিধানে দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা। পরিস্থিতি এবং আত্মরক্ষার স্বার্থে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আবারও স্পষ্ট করা হয়েছে সদর দফতর থেকে। র‌্যাব সদর দফতর থেকে পাঠানো হয়েছে প্রায় একই বার্তা। প্রতিটি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ককে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য দেয়া হয়েছে বিশেষ বার্তা।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন কর্নার থেকে প্রাপ্ত জঙ্গি কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের কোনো ধরনের যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছেন শীর্ষ গোয়েন্দারা। হামলার শিকার হতে পারেন এমন নাগরিকদের সতর্ক করছে পুলিশ। তাদের চলাফেরার জন্য প্রয়োজনে পুলিশি স্কট নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

একাধিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সাম্প্রতিক হামলাগুলোর নেপথ্যে যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে এমন ব্যক্তিরা জীবিত থাকাকালে বিভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ফাঁসি কার্যকরের পর তাদের পরিবারের সদস্যরা বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে কারাগার এলাকা ত্যাগ করেন। দণ্ডিত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের দিকে বিশেষ নজরদারিরও পরামর্শ রয়েছে। 

পুলিশ সদর দফতরের উপমহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুর রহমান জানান, কূটনৈতিক পাড়া এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার ব্যাপারে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। তবে আরও হামলা হতে পারে এমন ধারণা করেই সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বিদেশি নাগরিক, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সদর দফতর থেকে আইজিপির নির্দেশে পাঠানো হয়েছে বিশেষ বার্তা। 

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, দেশের সব কটি বিমানবন্দর, জল ও স্থলবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। দফায় দফায় তল্লাশির পর স্পর্শকাতর স্থাপনা-সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়েছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত চেকপোস্ট। কোনো এলাকায় অচেনা মানুষ প্রবেশ করলেই তাকে নজরদারির মধ্যে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ওই এলাকার মানুষজনকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। 

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহ্মুদ খান বলেন, ‘জঙ্গি তৎপরতা ঠেকানোর বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) উত্তরা এলাকা থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ দুজন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ওই দুজন নাশকতার উদ্দেশ্যে যশোর থেকে ঢাকায় এসেছিল।’

তিনি বলেন, দু-দুটি বড় ঘটনার পর আরও ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা মাথায় রেখেই র‌্যাব নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে টহল টিমের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা এবং ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলার পরই নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!