• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সশস্ত্র বাহিনীকে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার বানায়নি আ.লীগ


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২১, ২০১৬, ১০:০৩ পিএম
সশস্ত্র বাহিনীকে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার বানায়নি আ.লীগ

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তার দল আওয়ামী লীগ কখনো সশস্ত্র বাহিনীকে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার বানায়নি।’ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে সশস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে কাজ করেছে। আমরা কখনোই সশস্ত্র বাহিনীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাইনি। সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করছি।’ 

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে স্মরণ করেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ মহান মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের ত্যাগ ও বীরত্বগাথায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। তবে এবারও সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার বদলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।

এর আগে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনীর প্রধান। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন তিন বাহিনীর প্রধান।

সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল একটি দক্ষ ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা। সে কারণেই স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি গভীর প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি নিয়ে একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।’ 

এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র বাহিনীর যে সুদৃঢ় ভিত্তি রচনা করে গেছেন। তারই ওপর দাঁড়িয়ে আজ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং কর্মদক্ষতার পরিচিতি দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃত ও প্রশংসিত। আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বদরবারে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাসহ উদ্ধার তৎপরতা ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসনে সশস্ত্র বাহিনী দেশপ্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং জাটকানিধন রোধসহ বিভিন্ন জাতি গঠনমূলক ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে চলেছে। এ ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সশস্ত্র বাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। এসব কল্যাণমুখী ও জনহিতকর কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারের পক্ষ  থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, দেশের দুই বড় দলের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে এক অনুষ্ঠানে সচরাচর দেখা না গেলেও একসময় বরাবরই সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে দেখা যেত তাদের।
২০১২ সালে নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেও সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন দুই নেত্রী। তবে সেদিন তাদের কথা হয়নি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে যাননি। ওই বছর মির্জা ফখরুল বিএনপির পক্ষে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। আর গত বছর এই সময় খালেদা জিয়া ছিলেন দেশের বাইরে। এবারও সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি খালেদা জিয়া। তবে কেন যোগ দিলেন না তা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। খালেদা জিয়ার বদলে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। 

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!