• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সহযোগী সংগঠনের কর্মকান্ডে নাখোশ আ.লীগ


সোনালী বিশেষ অক্টোবর ২৪, ২০১৭, ০৩:৪৪ পিএম
সহযোগী সংগঠনের কর্মকান্ডে নাখোশ আ.লীগ

ঢাকা : সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বের উপর নাখোশ আওয়ামী লীগ। দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সরকারের শেষ সময়ে এসব অপকর্মের বিষয়গুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।

এমনকি স্থানীয় পর্যায়ে খোদ দলের ভেতরের গ্রুপিং প্রকাশ্যে চলে আসছে। নিজেদের আখের গোছাতে যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়ছে নেতারা। এর মধ্যে কেউ কারো নিয়ন্ত্রিত রাজ্যে হাত বাড়ালে নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। এ সংঘর্ষে নিজেরাই নিজেদের কর্মীদের রক্ত ও প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।

অন্যদিকে, সামনেই সংসদ নির্বাচন। তার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ড দলের জন্য ক্ষতিকারক। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেয়ার পরও তৃণমূল পর্যায়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই ঠেকাতে পারছে না ক্ষমতায় থাকা এ দলটি।

নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে তৃণমূল পর্যায়ে কোন্দল ততই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। নেতাকর্মীদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষও ভালোভাবে নিচ্ছে না। এই অবস্থায় সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে থেকে যে সকল প্রার্থী আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তাদের বিষয়ে নতুন করে ভাবছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির সঙ্গে সহযোগী সংগঠনগুলোর একাধিক নেতাকর্মী জড়িত। দলের শীর্ষ নেতার নির্দেশে এসব নেতা কর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে। নেতাদের ভালো-মন্দ নিয়ে গণমাধ্যমে  প্রকাশিত তথ্যও আমলে নেয়া হচ্ছে বাছাই প্রক্রিয়ায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রার্থী বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িতরা যেন প্রার্থী না হতে পারে সেই বিষয়েও দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানাতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনও প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার আগে বিভিন্ন ভাবে যাচাই-বাছাই করেন। এবার আগে থেকেই এ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, এবার সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের হাতে নৌকার টিকিট তুলে দেবেন দলীয় সভাপতি। এখানে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িতরা স্থান পাবে না। তিনি আরও বলেন, যারা জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিতে সহযোগী সংগঠন থেকে আসবেন তাদের আরও সর্তক থাকা প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে কোথাও প্রার্থীর ক্যারিশমা, আবার কোথাও দলের ক্যারিশমাকে গুরুত্ব দেয়া হবে।

তাই প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। প্রতিটি আসনে তিন জন প্রার্থী বাছাই করে রাখছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে। সভাপতির ঘনিষ্ঠ এই নেতারা আরও জানান, আগামী নির্বাচনকে শেখ হাসিনা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমলে নেয়া হচ্ছে- দলের নেতাকর্মীদের কাছে ‘গুড ইমেজ’ আছে কিনা, রাজনীতিক হিসেবে এলাকায় কতটা পরিচিত, সংগঠক হিসেবে কতটা দক্ষ, সততা, নিষ্ঠা, শিক্ষা ও দলের জন্যে ত্যাগ-তিতীক্ষা কেমন, এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রার্থী বাছাই করার কাজ চলছে অনেক আগ থেকেই। বিভিন্ন সংস্থাসহ একাধিক মাধ্যমে এই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গ্রহণযোগ্যরাই পাবেন আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন।

দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, প্রার্থী যাছাই-বাছাই আওয়ামী লীগের রুটিন কাজ। তাই এ কাজগুলো নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। তিনি বলেন,আগামীতে প্রতিদ্ধন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আমরা আশা করি। তাই প্রস্তুতি পরিকল্পনা মাফিক নেয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। এমনকি দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে সফর শুরু করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবেই শেখ হাসিনা আগামী ৪ মাস ব্যস্ত থাকবেন বলেও জানা গেছে।

এছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদকও বিবাদমান জেলাগুলোর তৃণমূলকে সংগঠিত কাজ শুরু করেছেন। তবে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু করেছেন কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণীর নেতা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!