• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাঁওতালদের ফসল বুঝিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৭, ২০১৬, ০২:১২ পিএম
সাঁওতালদের ফসল বুঝিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত এবং তারা যেসব ফসল লাগিয়েছে, সরকার সেসব ফসল কেটে নিলেও তা সাঁওতালদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে ৬ নভেম্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কতগুলো মামলা হয়েছে, কতগুলো অভিযোগ নিবন্ধিত হয়েছে তা গাইবান্ধার ডিসি, এসপি ও গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসিকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, বুধবার (১৬ নভেম্বর) সাঁওতালদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি চালানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বুধবার হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করে বেসরকারি সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন অব ল্যান্ড রিফর্ম এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা। রিটে সাঁওতালদের জানমালের নিরাপত্তা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং সাঁওতাল পল্লিতে তারা যাতে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে সে ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই রিটের প্রেক্ষিতে আজ এই আদেশ দেওয়া হলো।

গত ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন সাঁওতাল নিহত হন।

উল্লেখ্য, সাঁওতাল ও বাঙালিদের ১৮টি গ্রামের ১ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ আখ চাষের জন্য সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তুলেছিলো। সেই জমি ইজারা দিয়ে ধান ও তামাক চাষ করে অধিগ্রহণের চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলে তার দখল ফিরে পেতে আন্দোলনে নামে সাঁওতালরা।

এরপর সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে বিরোধপূর্ণ চিনিকলের জন‌্য অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে কয়েকশ ঘর তুলে সাঁওতালরা বসবাস শুরু করেন। গত ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ জমি উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের বাড়িঘরে লুটপাট হয়।

পুলিশের ভাষ‌্য, তারা সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায়। ওই ঘটনায় নিহত হন তিন সাঁওতাল, আহত হন অনেকে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই জমি সাঁওতালদের ছিল না। ‘ভূমিদস্যুরা’ সাঁওতালদেরকে ‘ব্যবহার করেছে’। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাঁওতালদের দিয়ে ‘দখল করিয়ে পরে নিজেদের দখলে নেওয়া’।

অন‌্যদিকে সাঁওতাল পল্লির বাসিন্দারা বলছেন, তারা ‘বাপ-দাদার জমিতে’ থাকার অধিকার চান। উচ্ছেদ হওয়া দেড় শতাধিক পরিবার গত দশ দিন ধরে মাদারপুর চার্চের খোলা প্রাঙ্গণ ও চার্চের পরিত্যক্ত স্কুলভবনে বসবাস করছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উপর গুলিবর্ষণের ওই ঘটনায় সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!