• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাগর-রুনির ছেলে মেঘের পৃথিবীটা বড় হচ্ছে...


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৭, ২০১৭, ০৩:২২ পিএম
সাগর-রুনির ছেলে মেঘের পৃথিবীটা বড় হচ্ছে...

ঢাকা: তখন মেঘের বয়স ৬ বছর। কতটুকুই বা বুঝতে পারে। সেই রাতে তার চোখের সামনেই খুন হন প্রাণপ্রিয় বাবা-মা। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে, চোখের সামনে রক্তাক্ত লাশ রেখে কীভাবে নানিকে ফোন করলো সে। জানালো বাবা-মার মৃত্যু সংবাদ? কীভাবে দরজা খুলে দিল?

এসব কোনো কথাই সে জানাতে পারেনি। মনের মধ্যে ক্ষত নিয়ে বড় হতে থাকা মেঘ কখনও সেদিনটা নিয়ে কাউকে প্রশ্ন করে না। বলছিলাম সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ছেলে মেঘের কথা। সাগর-রুনি হত্যার দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে পাঁচটি বছর। মেঘও বড় হচ্ছে পরিবারের সবাই তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে আপ্রাণ চেষ্টায় রত। এতে কিছুটা সফলও হয়েছে পরিবার।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাড়িতে মেঘের বাবা-মা সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। সে স্মৃতিকে এখনো ভুলতে পারেনি সে; মাঝে মাঝেই বাবা-মার কথা তোলার চেষ্টা করে। তখন তাকে থামিয়ে দিয়ে অন্য প্রসঙ্গ তোলে তার বর্তমান স্বজনরা।

মেঘের মামা নওশের রোমন জানান, আগে যেভাবে ভেঙে পড়ত, এখন ততটা না। এখন কিছুটা স্বাভাবিক থাকে ও। সবার সঙ্গে মেশে। বাসায় যতটুকু সময় থাকে সবার সঙ্গে প্রাণোচ্ছ্ল থাকে। সে হিসেবে বলা যায় আগের চেয়ে এখন অনেকটা স্বাভাবিক। এখন বুঝতে শিখেছে। নিজেই সব বোঝে। মামা হিসেবে আমার সঙ্গে অনেক বিষয় শেয়ারও করে।

তিনি আরো বলেন, ‘ওকে আমরা শুরু থেকেই স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে গেছি। এখনও করছি। বিভিন্ন সময় ও এসব নিয়ে বলার চেষ্টা করলে আমরা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেই। কারণ তার মানসিক অবস্থা যেন স্বাভাবিক থাকে। কোনো ধরনের বিরূপ প্রভাব যেন তার উপর না পড়ে সেই চেষ্টা আমার নিরন্তর। সেই দিক থেকে এখন পরিস্থিতি ভালই বলতে হবে।’

ফার্মগেটে একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে মেঘ। সকালে যায় আর সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে। দিনের বেশিরভাগ সময়ই কাটে স্কুলে। বন্ধুদের সঙ্গে ভালই সময় কাটায় শিশুটি। স্কুল শেষে দুই শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরে। সার্বক্ষণিক তার খোঁজ রাখেন মামা নওশের।

মামা নওশেরই এখন মেঘের সবচেয়ে ভালো বন্ধু

মেঘ ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডের বাসার পাশেই সময় পেলে সে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে। ঈদে, জন্মদিনে কিংবা ১১ ফেব্রুয়ারি যখন সব গণমাধ্যম সাগর-রুনির হত্যার খবর আবারও প্রচার প্রকাশ করে তখন মেঘ বাবা-মায়ের কথা কিছু জানতে চায় কি না- এ প্রশ্নের জবাবে মেঘের মামা বলেন, ‘এসব নিয়ে এখন আর ও ভাবে না। ও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে।’ 

মামা নওশের নোমান গত পাঁচ বছর ধরেই মেঘের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। মেঘের সব আবদারও যেন তাকে ঘিরেই। বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত কিংবা মায়ের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ে ঘুরতে যাওয়া মামার সাথেই।

পাঁচ বছর রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাড়িতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। সাগর তখন মাছরাঙা টেলিভিশনে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। তাদের ৬ বছরের সন্তান মেঘ ঘটনার সময় সেই বাসাতেই ছিল। সেদিন বাবা-মায়ের মৃত্যুর সংবাদ নানিকে ফোন করে জানিয়েছিল মেঘই।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!