• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরের তীর থেকে...


সৌধ ইসলাম মে ৬, ২০১৭, ০৬:৩৯ পিএম
সাগরের তীর থেকে...

অপার জলরাশির সামনে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: সাগরের নাম শুনলেই শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠের সেই মিষ্টি গানটির কথাই বেশি মনে পড়ে-

সাগরের তীর থেকে
মিষ্টি কিছু হাওয়া এনে
তোমার কপালে ছোঁয়াবো গো
ভাবি মনে মনে...।

আমাদের গৌরবের বঙ্গোপসাগরের তীর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিষ্টি কিছু হাওয়া এনে জাতির কপালে ছোঁয়াবেন কিনা সে প্রশ্নের উত্তর এ মুহূর্তে দেয়া যাবে না। তবে এটুকু বলা যায় প্রধানমন্ত্রী নীল সাগরের বিশালতাকে ছুঁয়ে দিয়েছেন। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে খোলা পায়ে হেঁটেছেন। কক্সবাজার থেকে ফিরবেন সেই বিশালতাকে নিয়েই। সবার আশা তা ছড়িয়ে দেবেন সবার মধ্যে।

বলা হয়ে থাকে, সাগর পাড়ে গেলে নাকি মানুষ তার জীবনের ক্ষুদ্রতা আর বিশালতার মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে। বিশাল ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে নিজের ঠিকানাটুকুর মানে খুঁজে পায়। জীবনের অন্য এক মানে এসে সামনে দাঁড়ায়।

আজ কক্সবাজারের যে ইনানী বিচে পা ভেজালেন বঙ্গবন্ধুকন্যা তা শুধুই ঘটনা নয়, একটা অধ্যায়। এই ইনানী বিচের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিও। ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনামলে অরণ্যঘেরা ইনানীর চেনছড়ি গ্রামে বেশ কিছু দিন ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এই সাগরের অপার বিশালতা ধারণ করেছিলেন প্রাণমনে।  

শুধু কি এসব স্মৃতিই? বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রথম সমুদ্র দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল শেখ হাসিনার- তাও তো এখান থেকেই। বিশ্বের দীর্ঘতম এই সাগর সৈকতে প্রতিবছর লাখ লাখ দেশি বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। সাগরের বিশালতার কাছে নিজেদের সমার্পণ করেন। নতুন করে শুরু করেন পরের জীবন ঘনিষ্ট সময়গুলো।

সাগর পাড়ে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটি ছিল রাষ্ট্রীয়। শনিবার (৬ মে) সকাল পৌনে ১০টার দিকে বোয়িং উড়োজাহাজ মেঘদূত-এ কক্সবাজারে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। পরে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়েতে বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ চলাচল উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে বোয়িং বিমান চলাচলসহ মোট ১৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সফরসঙ্গী ও মেরিন ড্রাইভ নির্মাণকারী সেনা সদস্যদের নিয়ে সোজা সাগর পাড়ে গিয়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। নীল সাগরের অপার জলরাশির সৌন্দর্য উপভোগ করেন দুচোখে মেলে। সেনা-কর্মকর্তারা এ সময় পোশাক ও জুতা পরে থাকলেও শেখ হাসিনা সাগরের পানিতে নামেন পায়ের স্যান্ডেল খুলেই। তার চোখেমুখে ছিল প্রসন্ন হাসি। দূরের ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

বঙ্গোপসাগরের উপকূল, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজার ঘিরে আমাদের সামনে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। পর্যটন আর সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের এই অপার সম্ভাবনাকে নিশ্চিত কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ। যার পেছনে থাকতে পারেন সাগরজলে পা ভেজানো, মিষ্টি হাওয়া ছুঁয়ে সাগরের কান্না শুনে আসা বঙ্গবন্ধুকন্যা। হয়তো তেমনি স্বপ্ন নিয়েই অপার সাগরে তাকিয়ে থেকেছেন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Sheikh Hasina Wazed আইডিতে সাগর সৌন্দর্যের অনুভূতি লিখেছেন-

কক্সবাজার এসে
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য দেখা হবে না,
সমুদ্রের পানিতে পা ভিজানো হবে না, তা কি করে হয়?

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পা ভিজালেন
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখা হাসিনা।

সাগর পাড়ে প্রধানমন্ত্রী

একই পেজে আবারো লেখা হয়, সমুদ্র তীর রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তৈরি করেছে হাজার হাজার টেট্রাপড। এতে সুরক্ষা পাবে সমুদ্র তীরের স্থাপনাগুলো; বিশেষ করে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

আবারো Sheikh Hasina Wazed আইডিতে লেখা হয়েছে-
‘অবহেলিত কক্সবাজার হবে আধুনিক পর্যটন নগরী’
অবহেলিত কক্সবাজারকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করে আন্তর্জাতকি ফ্লাইটের ট্রানজিট স্টেশনে রূপ, খেলাধুলা, সাংস্কৃতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আরও উন্নয়ন করে কক্সবাজারকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

আমাদের স্বপ্নপূরণের আকাঙ্ক্ষাগুলো তাকিয়ে থাকে যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক আর বিশালহৃদয় নেতাদের দিকে। তারা আমাদের অনুভূতি বুঝে সামনের দিনগুলো হাজির করবেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দেখাবেন স্বপ্ন দুচোখ মেলে। হয়তো সীমাহীন নীল আকাশ কিংবা অপার নীল সমুদ্র থেকে রাশি রাশি স্বপ্ন এনে আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিবেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সমুদ্র বিলাস আমাদের সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাড়িয়ে দিল কয়েকগুণ। সত্যিই তিনি সাগরের তীর থেকে মিষ্টি কিছু হাওয়া এনে আমাদের কপালে ছোঁয়াবেন। আরো বিশ্বাস করি আকাশের নীল থেকে তারার কান্তি এনে আমাদের নয়নে ছড়াবেন।

সোনালীনিউজ/এন

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!