• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
মামলা করায় গ্রাম ছাড়া

সাতজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তাকে!


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জুলাই ২৪, ২০১৮, ০১:২১ পিএম
সাতজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তাকে!

এই নিউজের সঙ্গে ছবির কোন সম্পর্ক নেই। ছবিটি শুধুই প্রতিকি

টাঙ্গাইল: জেলায় গণধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা করায় ধর্ষিতাকে (বাদি) গ্রামছাড়া করার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ফুচকিয়া গ্রামে।

মামলার বাদি ও ধর্ষিতা (২৫) এ অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় গত ৯ জুলাই লাভলী আক্তার বাদি হয়ে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গণধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, দারিদ্রতার কারণে লাভলী আক্তারের স্বামীর সংসার ভেঙে যায়। বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে স্থানীয় আলাউদ্দিন টেক্সটাইল (এটিএম টেক্সটাইল) মিলে কাজ করে কোন রকমে জীবন চালাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ‘স্বামী পরিত্যাক্তা’ শব্দটি তার জীবনে আরেকটি অভিশাপ ডেকে আনে।

স্থানীয় বখাটেরা তার কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিত। তিনি নিরবে সহ্য করে কোন রকমে দিন কাটাতেন। দরিদ্র বাবার আলাদা ঘর না থাকায় প্রতিবেশি এক হিতৈষী ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। আশ্রিত বাড়িতে একজন অসুস্থ্য বৃদ্ধ মহিলা ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগায় ধর্ষকরা।

গত ৩ জুলাই দিবাগত রাত ১১ টার দিকে ফুচকিয়া গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে মো. রাজু (২৮), মো. রফিকের ছেলে মো. রুবেল (২২), মো. ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. পারভেজ (২০), আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. সুমন(২৫), জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাহাঙ্গীর (২০) এবং ক্ষুদিরামপুর গ্রামের মৃত রজব আলী ফকিরের ছেলে আব্দুল ওহাব (২২) এবং রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. সোহান (১৯) অস্ত্রের মুখে লাভলীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

শুধু তাই নয় বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল এলাকার সুব্রত নামে এক যুবককে বিবস্ত্র অবস্থায় ধর্ষিতার পাশে বসিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তোলে। এ সময় ধর্ষকরা অসহায় লাভলীকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখায়। ধর্ষণের কথা কাউকে জানালে সেই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয় তারা।

এ সময় লাভলীর চিৎকারে আশ্রয়দাতা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়।

ঘটনার পরদিন থানায় মামলা করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য ধর্ষিতার কাছে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শুনে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় লাভলী বাদি হয়ে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গণধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

মামলা দায়ের করার পর থেকেই ধর্ষকরা লাভলীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তার কর্মস্থলে যেতেও বাধা দিচ্ছে বলে লাভলী অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার পর স্থানীয় মাতব্বররা তাকে গ্রাম ছাড়াও করেছে। বর্তমানে তিনি অন্য স্থানে বসবাস করছেন।

মামলার বিষয়টি জানা জানি হলে স্থানীয় মাতব্বর রফিকুল ইসলাম, হায়দার আলী গংরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য ধর্ষিতাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাছেন। ওই মাতব্বরের ছেলেও এই গণধর্ষণ মামলার আসামী বলে জানা গেছে। ধর্ষিতার ন্যায় বিচার ও জীবন নিয়ে শঙ্কায় থাকার কথাও জানান ধর্ষিতা লাভলী।

এ প্রসঙ্গে আশ্রয়দাতা হাজেরা খাতুন বলেন, ঘটনার দিন অনেক সময় ধরেই লাভলীর ডাকচিৎকার শুনেছি। আমি কোন ভাবেই আমার ঘরের দরজা খুলতে পারছিলাম না। পাষন্ডরা আমার ঘরের বাইরের দিক থেকে কাঠের ঠেকনা দিয়ে আমাকে ঘরে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। দীর্ঘক্ষণ দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পর দরজা খুলে যায়। তারপর আমি তাকে উদ্ধার করি।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!