• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘সারাদেশে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু হবে’


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৫, ২০১৬, ০৬:১৯ পিএম
‘সারাদেশে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু হবে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই পর্যায়ক্রমে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু করা হবে। ধীরে ধীরে এর পরিধি বৃদ্ধির পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।

তিনি বুধবার (১৫ জুন) সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বরগুনা-১ আসনের সরকারি দলের সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন তখনই সম্ভব হবে, যখন নারীদের শিক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা যাবে। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন, ‘একজন নারী যদি দশটা টাকা আয় করতে পারে, এই টাকা যদি তার আঁচলে থাকে তাহলে সমাজে তার গুরুত্ব বাড়ে। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-ভাবনা থেকে আমি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ধারণা পেয়েছি।’

তিনি বলেন, গ্রামের পরিববারগুলোকে স্বাবলম্বী করতে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জলাভূমির ব্যবহার, অব্যবহৃত জমি চাষ এবং উৎপাদনের আওতায় এনে কৃষকদের পণ্য বাজারজাতকরণের জন্যই এ প্রকল্প। যেখানে যেখানে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সেখানে ভাল ফল এসেছে। দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসংস্থান ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।

সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ৩ কোটি ৪৭ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছিল।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ও জিডিপিতে কৃষি খাতে বিশাল অবদানকে অব্যাহত আরও এগিয়ে নেয়ার প্রয়াসে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বর্তমানে ৩০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। উপযুক্ত সেচ কার্যক্রম গ্রহণে কৃষকদেরকে উৎসাহিতকরণ। সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ দ্বারা সেচ প্রদানে স্মার্ট কার্ড প্রচলন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন কৃষি উপকরণে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান, কৃষকদের মাঝে ২ কোটি ২৬ হাজার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ ও দশ টাকার বিনিময়ে ১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার কৃষককে ব্যাংক একাউন্ট খোলার কার্যক্রম চালু রেখে কৃষকের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টাসহ ২৪টি ফসল উৎপাদনের জন্য ৪ শতাংশ সুদহারে বিশেষ কৃষি ঋণ প্রদান, প্রযুক্তি সম্প্রসারণে বিভিন্ন সম্প্রসারণ কার্যক্রম যেমন- প্রদর্শনী, মাঠ দিবস, চাষী র‌্যালি, উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ, প্রযুক্তি মেলা, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন প্রতিটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে শতকরা ৩০ ভাগ কৃষাণীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৭২৭টি কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক) স্থাপন ও কৃষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ প্রদান, কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানার বিদ্যুৎ বিলে শতকরা ২০ ভাগ হারে রিবেট প্রদান।

বজলুল হক হারুনের অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ওই অঞ্চলের মানুষ সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবেলা করে তাদের জীবন-যাপন করেন। দুর্যোগের সময় সেখানের মানুষ সাইক্লোন শেল্টার যাতে ব্যবহার করতে পারে এ জন্য পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দুর্যোগের সাথে আমাদের বসবাস এই দুর্যোগে যাতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে লিখিত নির্দেশনা প্রণয়ন করা হয়েছে। আমাদের এই নির্দেশনাগুলো বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা, খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান বীজ আবিষ্কার করে সেখানকার মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। ৩ সপ্তাহ পানির নিচে থাকলেও যাতে ধান গাছ পচে না যায় এ জন্য বন্যা মগ্ন সহিষ্ণু ধান বীজ আবিষ্কারের জন্য গবেষণা চলছে। এছাড়া বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে এবং সেখানে নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটি ও সেনাবাহিনীর একটি ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!