• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিইসি ছাড়াই এক সপ্তাহ চলবে ইসি


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭, ১০:৩৯ এএম
সিইসি ছাড়াই এক সপ্তাহ চলবে ইসি

ঢাকা : নবগঠিত নুরুল হুদার কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের আগে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকবেন মাত্র একজন নির্বাচন কমিশনার। ইতিমধ্যে পাঁচ সদস্যের রকিব কমিশনের নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ ছাড়া অন্য সবাই বিদায় নিয়েছেন ৮ ফেব্রুয়ারি। ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের সহকর্মীদের ছাড়া একাই অফিস করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। একই দিন খুব অল্প সময়ের জন্য নির্বাচন কমিশনে এসেছিলেন বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ ও মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। 

এদিকে নতুন কমিশনকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। ১৯৯০, ১৯৯৬ ও ২০০৭ সালের নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এর আগে-পরে ক্ষমতাসীন দলগুলো দলীয় বিবেচনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু রকিব কমিশন ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে গঠিত কোনো নির্বাচন কমিশন পূর্ণ মেয়াদ পালন করতে পারেনি। 

সর্বশেষ ২০১২ সালে দেশে দলীয় সরকারের অধীনে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা হয় এ নির্বাচন কমিশন। তবে এ কমিশনকে শুরু থেকেই প্রত্যাখ্যান করেছিল সে সময়ের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এর পরও পূর্ণ মেয়াদ শেষ করে বিদায় নিয়েছেন রকিব কমিশন। 

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘গত ৮ ফেব্রুয়ারি সিইসিসহ আমাদের মূল অংশটি চলে গেছে। আইনি কারণে আমি কয়েক দিন রয়ে গেছি। আমার এ থাকা, না থাকার মতোই। জরুরি বিষয় ছাড়া আমি কোনো কাজ করব না। নতুন কমিশন আসবে, তারাই করবে। যে কাজ না করলে নয়, শুধু সেটাই করব। বদলি বা প্রশাসনিক কোনো কাজে হাত দেব না। 

‘নতুন কমিশন না আসা পর্যন্ত আপনি ভারপ্রাপ্ত সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত সিইসি হলে অতিরিক্ত কিছু কাজ আছে। আমি এখন সেসব কাজে যাব না। সাধারণ নির্বাচন কমিশনার হিসেবেই দায়িত্ব পালন করব। যা করার ইতিমধ্যে তা আমরা করে ফেলেছি। সব মিলে মনে হচ্ছে ভালোই করেছি।

গত বুধবার ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানিয়েছিলেন, সিইসির অনুপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ আপাতত ভারপ্রাপ্ত সিইসির দায়িত্ব পালন করবেন। ইসি সচিব বলেন, বিদায়ী কমিশন তাদের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এখন নতুন কমিশনকে অভ্যর্থনা জানানোর কার্যক্রম চলছে। 

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমান কমিশন যা করে গেছে, তাতে কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সময় লাগে, কিন্তু ভাঙতে সময় লাগে না। দুই দশকে অন্য কমিশন যা অর্জন করেছে, বর্তমান কমিশন তা বিসর্জন দিয়েছে। নতুন কমিশন আগের অবস্থানে ফিরে যেতে চাইলে তাকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে।

দেশের নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১১ জন এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ২৩ জন। প্রথম সিইসি মো. ইদ্রিসের পাঁচ বছর মেয়াদ ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই শেষ হলে পরদিনই নিয়োগ পান বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম। তিনি প্রায় আট বছর সিইসি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে ১৭ ফেব্রুয়ারি নুরুল ইসলামের মেয়াদ শেষের দিনে নিয়োগ পান বিচারপতি চৌধুরী এ টি এম মাসুদ। এরপর থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে ছিলেন সিইসিরা। 

এরশাদ শাসনামলে বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি হন। তিনি ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিইসি ছিলেন। বিচারপতি আব্দুর রউফ একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সিইসির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল থেকে ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ছিলেন বিচারপতি এ কে এম সাদেক। ১৯৯৬ পর্যন্ত সিইসি নিয়োগ পাওয়া সবাই ছিলেন বিচারপতি। ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল মোহাম্মদ আবু হেনা প্রথম আমলা হিসেবে সিইসি পদে নিয়োগ পান। তিনি ২০০০ সালের ৮ মে পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০০০ সালের ২৩ মে এম এ সাঈদ নিয়োগ পেয়ে বিদায় নেন ২০০৫ সালের ২২ মে। এরপর বিচারপতি এম এ আজিজ সিইসি পদে যোগ দিয়ে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি বিদায় নেন। এরপর ২০০৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পান এ টি এম শামসুল হুদা। সফলতার সঙ্গে কাজ করে বিদায় নেন ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। মেয়াদ শেষে বিদায় নিয়েছেন গত ৮ ফেব্রুয়ারি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!