• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড দেয়া হয় যেভাবে(ভিডিও)


বিনোদন ডেস্ক মার্চ ১২, ২০১৭, ০২:১৭ পিএম
সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড দেয়া হয় যেভাবে(ভিডিও)

ঢাকা: আমারা কম-বেশি সবাই সিনেমা দেখি। অভিনেতাদের হাঁটা-চলা, অ্যাকশনসহ একটি সিনেমায় অনেক ধরণের শব্দই ব্যবহার হয়। কিন্তু, এগুলো কি অভিনয়ের সময়টি ধারণ করা হয়? আমারা অনেকেই এ সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা রাখি না! আসল খবর হলো সেই শব্দগুলো পরে যোগ করা! আর যারা এই কাজগুলো নিখুঁতভাবে করে থাকেন তাদেরকে ‘ফলি আর্টিস্ট’ বলা হয়। ফলি আর্টিস্টদের একজন অভিনেতাদের মতই কাজ করতে হয়। কারণ, যখন তারা ভিডিওতে মূল অভিনেতার ভিডিও দেখে সাউন্ড দেন তখন তাকে দক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট কাজটি করতে হয়।

ফলি আর্টের ইতিহাস থেকে জানা যায়, জ্যাক ডনোভ্যান ফলি নামক যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি ১৯১৪ সালে রেডিওর জন্য প্রথম ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ট দেন। আর তার এই পদ্ধতিটা এক সময় আধুনিকভাবে সিনেমায় ব্যবহার শুরু হয়। তার নাম অনুসারেই আজকের এই পেশা ‘ফলি আর্টিস্ট’।  

বলিউডের বিখ্যাত ফলি আর্টিস্ট রাজেন্দ্র গুপ্ত তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এভাবে, ১৯৮২ থেকে বলিউডে কাজ করছি, যখন ‘১৯৪২ অ্যা লাভ স্টোরি’ ছবিটি তৈরি হয় আমাকে বলা হয়েছিল কাজের সময় প্যান্ট পরে থাকলে কাপড়ের আওয়াজটা মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে। তাই আমি যেন শুধু শার্ট পরে কাজ করি। এ রকম অভিজ্ঞতা আমার জীবনে আগে হয়নি। তবে আমি একটুও কুন্ঠাবোধ করিনি। আমি রাজি হয়ে যাই। যখন কাজ করি, অনেক সময় পরনে থাকে শুধু হাফ প্যান্ট বা বক্সার শটস। 

বিখ্যাত ‘জঙ্গল’ ছবি’র অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, একটা ‘ব্লো’-এর আওয়াজ তৈরি করার জন্য চল্লিশ কেজি মাংস কেনা হয়েছিলো। মাংসটা ‘চপ’ করতে থাকি। সেই আওয়াজটাই পরে লেয়ারিং করে এমন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল যেন কেউ কাউকে সপাটে আঘাত করছে!  

তিনি বলেন, ফলি আর্টিস্ট ছাড়াই ‘দেবদাস’ সিনেমায় সাউন্ড দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিলো তার ভাষায়, ‘প্রথমে ছবির সব শব্দই তৈরি করা হয়েছিল কম্পিউটারে। এটা করা হয়েছিল যাতে ফলি আর্টিস্টকে আর প্রয়োজন না হয়। কাজ শেষ হওয়ার পরে রি-রেকর্ডিং স্টুডিওতে দেখা যায় কী যেন একটা মিসিং। বোঝা গেল যে ‘হিউম্যান ফ্যাক্টর’টার অভাব রয়েছে।

ফলি আর্টিস্টরা কাজ করেন যেভাবে: 
তাদের সামনে বিশাল বড় একটি টিভি স্ক্রিন থাকে যেখানে একজন অভিনেতার কাজ দেখানো হয়। সেটা দেখেই কাজ করে ফলিরা।

অভিনেতা যখন কুচি কুচি পাথরের উপর দিয়ে হাঁটছেন, এদিকে ফলি আর্টিস্টও কিছু পাথরের উপর হাঁটার মত করেই পা নাড়ছেন, এতে ঠিক ওই হাঁটার শব্দই পাওয়া যায়। আর যদি কখনো পাখি উড়ার শব্দ দিতে হয় তখন তিনি হাতে একটি নরম কাগজ নিয়ে নাড়তে থাকেন এভাবে পাখি উড়ার শব্দ হয়।

কখনো যদি ছবিতে কার ক্রাশের শব্দ দিতে হয়, তখন সাধারণত একটি ভাঙ্গা কারের উপর ক্রেন থেকে বড় পাথর ফেলে দিয়ে সেই সাউন্ড ধারণ করা হয়। এখন সাধারণত ফলি আর্টের জন্য অনেক বড় বড় কোম্পানি হয়েছে। তেমনি একটি বিখ্যাত কোম্পানি হলো রায়ান পিউপেলস। যারা প্লেন ক্রাশের শব্দও ধারণ করে বিখ্যাত হয়েছে।

কোন শব্দর জন্য কি ব্যবহার করা হয়:
  কীসের আওয়াজ                        কী ভাবে হয়
• টোস্টারে পাউরুটি লাফিয়ে ওঠা    ব্রিফকেস-এর ক্লিপ খোলা বন্ধ করে
• ডিমের অমলেট ফেটানো              বাটিতে জল নিয়ে তার মধ্যে হাত দিয়ে থাবড়ে থাবড়ে
• বিলিয়ার্ড বল মারা                    মোটা ড্রামস্টিক ঠুকে
• পেঁয়াজ কামড়ানো                     আখে কামড় দিয়ে
• বালতি পড়া                             মাইকের স্ট্যান্ড ঠুকে
• কয়েদির হেঁটে যাওয়া                  চাবির থোকা এক হাত থেকে অন্য হাতে নিয়ে
• স্টোভে পাম্প করা                    পিতলের পিচকিরি দিয়ে
• পেন দিয়ে লেখা                        জিনস্‌-এর উপর নখ দিয়ে আঁচড়ে

চলুন এখন ফলি আর্টিস্টদের কার্যক্রম ভিডিও-তে দেখি...


 
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই/এমটিএল 
Wordbridge School
Link copied!