• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে যমুনায় বিলীন তিন শতাধিক বাড়িঘর


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬, ০৪:৫৬ পিএম
সিরাজগঞ্জে যমুনায় বিলীন তিন শতাধিক বাড়িঘর

সিরাজগঞ্জে যমুনার পশ্চিম পাড়ের সদর ও কাজিপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে অসময়ে ফের দেখা দিয়েছে ভাঙন। ইতোমধ্যেই সদর উপজেলার পাউবোর কাজিপুরের শুভগাছার টুটুলের মোড়ে গত ১ মাসে নদী ভাঙনে প্রায় তিন শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনাতে বিলীন হয়ে গেছে। জানালেন ওই এলাকার ভাঙনকবলিত অসহায় মানুষগুলো।

এদিকে বরাদ্দ নেই এমন অজুহাতে এসব এলাকায় বিকল্প বাঁধ নির্মাণ, ভাঙন ঠেকানো বা স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পদক্ষেপ বা প্রকল্প গ্রহণে উদাসীন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

সরজমিনে দেখা যায়, নদী ভাঙনে নতুন করে বিলীনের অপেক্ষায় রয়েছে আরও শতাধিক ঘরবাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই শুভগাছায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বর্ষার আগেই সদরের শিমলা ও চর-বাহুকা ও কাজিপুরের শুভগাছা ও ক্ষুদবান্দির প্রায় ৮কিলোমিটার অরক্ষিত অংশে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। টুটুল মোড়ের বাঁধের পাশে বিশাল চর জেগে উঠায় যমুনা নদীর স্রোত সরাসরি তীরে আঘাত করছে। এ অঞ্চলে পাউবোর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন যমুনা পাড়ের ভাঙন কবলিত অসহায় মানুষগুলো।

শুভগাছা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলী আলম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়ী করে বলেন, ভাঙতে ভাঙতে চর-বাহুকা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পাশে নদী অবস্থান করছে। নদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের মাত্র ২০ মিটার দূরে স্কুল অবস্থান করলেও এ নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।

চরশুভগাছা গ্রামের কৃষক নাছের শেখ জানান, ভাঙতে ভাঙতে এবার দিয়ে ৭ বার বাড়ি সরিয়ে এখন আর কোন জায়গা নেই। আমি অসহায় হয়ে গেছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। বড় বাবুরা ভাঙন স্থানের পাশে কয়েকটি জিওব্যাগ বালির বস্তা সাজিয়ে রেখেছে। বাবুরা নদী ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করলেও তারা কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

চরশুভগাছা সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলী আজগর বলেন, থেমে থেমে ভাঙছে নদী। ভাঙতে ভাঙতে স্কুলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অচিরেই হয়তো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এ পর্যন্ত কেউ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি আর বলেন, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০০/৪০০ শত বাড়িঘর নদীতে গর্ভে চলে গেছে। গত বছর পাউবোর লোকজন ড্রেজিং মেশিন এখানে এনে দীর্ঘদিন রাখলেও তা কোনও কাজে আসেনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশনাল অফিসার রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, ‘টুটুল মোড়ের বাঁধের পাশে যমুনায় বিশাল চর জেগে উঠেছে। তাই যমুনার স্রোতে সরাসরি তীরে আঘাত করায় ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার ক্ষুদবান্ধি, শুভগাছার টুটুলের মোড় থেকে সদর উপজেলার শিমলা পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে নদী তীর সংরক্ষণ বাধ কাজের জন্য ৫৮৮ কোটি টাকার একটি ডিপিপি পাউবো বরাবর পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। প্রকল্পটি পাশ হওয়ার পর বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কাজ বাস্তবায়িত হলে কাজিপুর-সদর উপজেলার ওই অংশে ভাঙন স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক বলেন, ‘যমুনার ভাঙ্গন বাঁধ থেকে নদী এখন ২০ মিটার দূরে অবস্থান করছে। পাউবো, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা দফতরসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!