• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরা আবারও আইএস’র দখলে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১১, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম
সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরা আবারও আইএস’র দখলে

সিরীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে নয় মাস পর আবারও সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরা দখলে নিয়েছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, পালমিরা দখলে আইএস জঙ্গি আর সরকারপন্থী বাহিনীর মধ্যে এখনো লড়াই চলছে। খবর বিবিসির।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ‌্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা অবজারভেটরি ফর হিউম‌্যান রাইটস ও সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। 

নয় মাস আগে অর্থাৎ গত মার্চে রুশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় আইএসের দখল থেকে মরু শহর পালমিরার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল সিরীয় বাহিনী। সে সময় ওই ঘটনাকে আইএসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিজয় বলে বর্ণনা করা হয়েছিল।

সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলগুলো জানিয়েছে, জঙ্গি ও সরকারসমর্থিত বাহিনীর মধ্যে পালমিরার কেন্দ্রে শনিবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শহরটির ১০ কিলোমিটার পূর্বে খাদ‌্যগুদামের কাছে জঙ্গিদের একটি হামলা প্রতিহত করেছে তারা। লড়াইয়ে জঙ্গিদের ব‌্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। তবে পালমিরার হামলা সম্পর্কে তারা কিছু জানায়নি।

সেনাবাহিনী এর আগে জানিয়েছিল, পালমিরা রক্ষা করতে সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠাচ্ছে তারা।

আলেপ্পো শহরের বাইরে গ্রামাঞ্চলে অবস্থানরত এক বিদ্রোহী জানিয়েছেন, আলেপ্পো থেকে কিছু সেনাকে পালমিরায় পাঠানো হচ্ছে।

এতে সরকারি বাহিনীর অভিযানে আলেপ্পো থেকে উৎখাত হওয়ার পর্যায়ে থাকা বিদ্রোহীদের ওপর চাপ খানিকটা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আলেপ্পোতে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয়ের প্রান্তে রয়েছে আসাদ সরকার, রাশিয়া ও ইরান সমর্থিত বেসামরিক বাহিনীগুলোরও আসাদ বাহিনীর সঙ্গে আছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জয়ের সুবাতাস পেতে শুরু করেছিল আসাদ বাহিনী, কিন্তু পালমিরায় হামলা চালিয়ে পরিস্থিতি অনিশ্চিত করে দিল আইএস।

মার্চে আইএস জঙ্গিদের দখল থেকে পালমিরা মুক্ত করেছিল সিরীয় সরকারি বাহিনী। একে আসাদ সরকারের একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পর পালমিরায় সবচেয়ে বড় পাল্টা হামলার শিকার হল সরকারি বাহিনী। রাশিয়ার হস্তক্ষেপের পর সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের স্রোত সরকারি বাহিনীর অনুকূলে চলে এসেছিল।

আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক জানিয়েছে, তাদের গোষ্ঠী পালমিরার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্বত জাবাল আল তার এবং জাবাল আনতারা দখল করে নিয়েছে। তীব্র লড়াইয়ের পর এগুলো তাদের দখলে আসে বলে জানিয়েছে আমাক। এই পর্বত দুটি থেকে পুরো পালমিরা শহরের ওপর নজরদারি করা যায়।

শনিবার পালমিরার উত্তর-পশ্চিমে জাযাল তেলক্ষেত্রের কাছে সিরিয়ার একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আমাক।

পালমিরায় প্রবেশ করা জঙ্গিরা এখন নিকটবর্তী টি-ফোর বিমান ঘাঁটির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এই ঘাঁটিটি সিরিয়ার অন‌্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেওয়া রুশ বাহিনী ঘঁটিটি ব‌্যবহার করছে।

এক বিদ্রোহী জানিয়েছেন, আইএসের হামলার পর পালমিরায় অবস্থানরত রুশ বাহিনীর বড় একটি কনটিনজেন্টকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে পালমিরায় আক্রমণ শুরু করে আইএস। আক্রমণ শুরু করেই কয়েক ডজন সিরীয় সেনাকে হত‌্যা করে তারা, তারপর দ্রুততার সঙ্গে পালমিরার নিকটবর্তী খাদ‌্যগুদাম, কয়েকটি তেল ও গ‌্যাসক্ষেত্র দখল করে নেয়, জানিয়েছে অবজারভেটরি।

এদিকে আইএসের বিরুদ্ধে অভিযানরত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে পালমিরার কাছে বিমান হামলা চালিয়ে তারা আইএসের ১৬৮টি তেল ট‌্যাঙ্কার ধ্বংস করে দিয়েছে।

তারা জানিয়েছে, শহরটি এখন অনেকটাই আইএসের হাতে।

পর্যবেক্ষকরা জানান, শনিবারের সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন সিরীয় সৈন্য মারা গেছে এবং বাকিরা পালিয়ে গেছে বলে একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে। এই সংঘর্ষে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!