• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদীয় আসন

সীমানা পুনঃনির্ধারণে হিমশিম খাচ্ছে ইসি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৯, ২০১৭, ০১:২৩ পিএম
সীমানা পুনঃনির্ধারণে হিমশিম খাচ্ছে ইসি

ঢাকা : সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি নভেম্বরের মধ্যেই ৩শ নির্বাচনী এলাকার খসড়া তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে।

কিন্তু এখনো ওই বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কাজই শুরু হয়নি। আর সীমানা পুনঃনির্ধারণে নতুন আইনের খসড়া তৈরি হলেও তা পাস হওয়া নিয়েও দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হয়েছে। খসড়া আইনের প্রায়োগিক দিক খতিয়ে দেখতে গঠিত উপ-কমিটির আহ্বায়ককে বদলি করায় উপ-কমিটির কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে ইসি তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যমান অধ্যাদেশ ধরে সীমানা নির্ধারণ করার কথা চিন্তাভাবনা করছেন ইসি কর্মকর্তারা। তাতে কিছু সংখ্যক আসনের সীমানায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামী ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাউন্টডাউন। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে নির্বাচন করার সুযোগ রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তার আগেই সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ এবং এর ওপর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করতে হবে।

তাছাড়া এ নিয়ে মামলা হলে তা নিষ্পত্তির জন্য কমিশনের হাতে পর্যাপ্ত সময়ও রাখতে হবে। ইতিমধ্যে ওই সংক্রান্ত আইনের খসড়া তৈরি করেছেন ইসির আইন সংস্কার সংক্রান্ত কমিটি। আর ওই খসড়ার প্রায়োগিক দিক খতিয়ে দেখতে একটি উপ-কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু ওই উপ-কমিটি এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সভা করেছে। তার মধ্যেই উপ-কমিটির আহ্বায়ককে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ইসির রোডম্যাপে আগস্টের মধ্যে নির্বাচনী এলাকা পুনঃনির্ধারণের জন্য আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে নতুন একটি নীতিমালা প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছে। অক্টোবরে ওই নীতিমালার আলোকে ৩০০ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে নভেম্বরে তা প্রকাশের কথা রয়েছে। তার ওপর দাবি-আপত্তির শুনানি শেষে আগামী ডিসেম্বরে ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশের কথা রোডম্যাপে বলা হয়েছে।

সে লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত খসড়া আইনে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যাকে প্রাধান্য ও উপজেলাকে অখণ্ড রাখার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। শুধু উপজেলা অখণ্ড রাখা হলে অর্ধশতাধিক আসনে রদবদল আনার প্রয়োজন হবে। আর জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় আনা হলে বিদ্যমান সীমানায় বড় ধরনের রদবদল আসতে পারে। তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল বিতর্ক শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র আরো জানায়, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিটি সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজ করছে। সম্প্রতি ওই কমিটি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ম্যাপসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে ওই কমিটি। কিন্তু ওই বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তার মতে, নতুন আইন পাস হওয়ার পর সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

কারণ তফসিল ঘোষণার অন্তত ৬ মাস আগে সীমানা নির্ধারণ গেজেট জারি করা হয়। বর্তমানে নতুন আইনের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকলে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা সম্ভব হবে না। তাতে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করা হলেও জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যার প্রাধান্য দেয়ার ইসির কনসেপ্টের প্রতিফলন ঘটবে না। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন চাহিদা তো রয়েছেই।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি দল বিদ্যমান সীমানা বহাল রাখার প্রস্তাব করেছে। আর ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফেরার প্রস্তাব করেছে বিএনপি। নিয়ম অনুযায়ী জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা নিয়ে খসড়া প্রকাশের পর অভিযোগের নিষ্পত্তি এবং শত শত মামলা জটিলতাসহ নানা ধরনের বিষয় রয়েছে।

এদিকে সীমানা পুনঃনির্ধারণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য প্রাথমিক কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরো তথ্য পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর আইনের খসড়া তৈরি হলেই সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া যায় না।

কারণ খসড়াটি সংসদে পাসের বিষয় রয়েছে। তবে নতুন বা বিদ্যমান যে আইনেই সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হোক না কেন, ইসির অন্য প্রস্তুতিও থাকছে। কোনো আইনে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হবে তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। সেজন্য পর্যাপ্ত সময় কমিশনের হাতে আছে বলেও তিনি মনে করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!