• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সু চি রাখাইনে গিয়ে পরিস্থিতি দেখুন : জাতিসংঘ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ৯, ২০১৬, ০৯:০৮ পিএম
সু চি রাখাইনে গিয়ে পরিস্থিতি দেখুন : জাতিসংঘ

ঢাকা : মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা অং সান সু চিকে দেশটির বিরোধপূর্ণ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে পরিদর্শন করে সেখানকার অবস্থা পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ উপদেষ্টা বিজয় নামবিয়ার বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কট্টরপন্থীদের প্রতি কঠোর এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তায় আক্রমাত্মক অবস্থানের বদলে রক্ষাত্মক হতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতি স্থানীয়দের হতাশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিরাশ করেছে।’

আন্তর্জাতিক মহলের ‘নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ রাখাইন প্রদেশে বিভক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে সু চি অভিযোগ করার এক সপ্তাহের মাথায় জাতিসংঘের এই বক্তব্যে এলো। বিজয় নামবিয়ার বলেন, ‘আমাদের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সরকারের পদক্ষেপই সংকটের সমাধান এবং আন্তর্জাতিক স্থিতি বজায় রাখতে পারে।’

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ উপদেষ্টা সু চিকে রাখাইনে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং সেখানে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করতে বলেন। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে সু চি মিয়ানমারের রাখাইনে বৌদ্ধদের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরোধ বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দোষারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি হব যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব সময় বড় ধরনের অসন্তোষ ছড়ানোর কারণ তৈরি না করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ার জন্য অগ্রগতি আনতে এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমাদের সহযোগিতা করে।’

গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিন সীমান্ত পোস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৯ সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা নির্যাতন। এতে সহিংসতায় বহু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে।

সেনা অভিযানে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া এবং বেসামরিক লোকদের হত্যার অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার তা অস্বীকার করেছে। ওই এলাকায় বিদেশি সাংবাদিক ও ত্রাণকর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়নি মিয়ানমার সরকার।

সু চি ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার বিষয়টি এড়িয়ে সবাই যদি শুধু পরিস্থিতির নেতিবাচক দিকে মনোযোগ দেয়, তাহলে তা কোনো সুফল বয়ে আনবে না।

বিরোধপূর্ণ ওই অঞ্চলে গিয়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান গত ৬ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আইনের মধ্যে থেকে অভিযান চালানোর আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা-রাখাইন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে করণীয় নির্ধারণে কাজ করছে আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধিও রয়েছে।

রাখাইনের এ সমস্যা নোবেলজয়ী সু চির রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম বড় সংকট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েই তার দল এ বছরের শুরুতে ক্ষমতায় আসে।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নিরব থাকায় মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির সমালোচনা হচ্ছে নানা মহল থেকে। তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার দাবিও উঠেছে। এর আগে ২০১২ সালেও রাখাইনে বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। সেবার শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর থেকে দুই সম্প্রদায় রাখাইন অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আলাদাভাবে বসবাস করে আসছিল।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!