সু চির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কে, কী বললেন?

ঢাকা: মিয়ানমারের বিতর্কীত নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তার দেশের রোহিঙ্গাদের অবস্থা সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে এত মুসলমানের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইনে কোনো ধরনের সশস্ত্র সংঘর্ষ ও সেখানে কোনো ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' চলেনি বলেও দাবি করেন সু চি। বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, যে কোনো সময় যাচাই প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত আছে মিয়ানমার। ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে যে শরণার্থীরা এ দেশের বলে প্রতীয়মান হবে, তাদের কোনো সমস্যা ছাড়াই গ্রহণ করা হবে এবং তাদের নিরাপত্তা ও মানবিক সাহায্য নিশ্চিত করা হবে-’ বলে জানান তিনি।

সু চির এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত রাশিয়া ও চীনের রাষ্ট্রদূত। চীনের রাষ্ট্রদূত হং লিয়াং বলেন, সু চি’র বক্তব্য মিয়ানমার পরিস্থিতি ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। ‘চীনের অবস্থান পরিষ্কার। রাখাইনে শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমার সরকারের প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলায় এ. লিস্টোপাদোভ বলেন, সু চির বক্তব্য বিশ্বের কাছে ভালো সংকেত পাঠাবে। জাতিগত নিধন, গণহত্যা এসব বিষয় প্রমাণের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সু চির বক্তব্যের সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিকের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ বলেছেন, ‘অং সান সু চি আজ (মঙ্গলবার) দেখালেন তিনি ও তার সরকার রাখাইনে ঘটে চলা নৃশংসতা বিষয়ে এখনো বালুতে মাথা গুঁজে রয়েছে।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপ পরিচালক ফিল রবার্টসন ৫ সেপ্টেম্বরের পর রাখাইনে কোনো সংঘর্ষ হয়নি বলে সু চি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করেন, ‘‘যদি তা সত্য হয়, তাহলে আমরা গত দুই সপ্তাহে যে গ্রাম পুড়ে যাওয়ার ছবি দেখেছি, সেগুলো কে করছে?’

মিয়ানমারে ইউনিসেফের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ পল এডওয়ার্ডস বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পর সেখানে কোনো সামরিক অভিযান না চলার সু চির বক্তব্যের ক্ষেত্রে তার ফেস ভ্যালুকে বিবেচনায় নিতে হবে। তবে সেখানে না যাওয়ায় আমরা আসলে জানি না সেখানে কী ঘটছে।’

কূটনীতিকরা পরিস্থিতি দেখতে রাখাইনে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সু চি। তার এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের আরেক কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু কির্কউড।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই