• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুরঞ্জিত সেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭, ০১:৫১ পিএম
সুরঞ্জিত সেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

ঢাকা: বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। অবদান রেখেছেন মুক্তিযুদ্ধেও। সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য; স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ চার দশকের প্রায় সব সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার আনোয়ারাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়া অবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের নির্বাচনে ন্যাপ থেকে নির্বাচিত হয়ে আলোচনার জন্ম দেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ৫ নম্বর সেক্টরের সাব কমান্ডার হিসেবে।

চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুরঞ্জিত ছিলেন সবার ছোট। তিন ভাই আগেই মারা গেছেন; একমাত্র বোন কলকাতায় বসবাস করছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। সৌমেন সেনগুপ্ত তাদের একমাত্র সন্তান। সুরঞ্জিত সেন ১৯৭৯ সালের সংসদে ছিলেন একতা পার্টির প্রতিনিধি। ১৯৯১ সালে সংসদে গণতন্ত্রী পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য সুরঞ্জিত ছিলেন নবম সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে সংস্কারের প্রস্তাব যারা তুলেছিলেন তার মধ্যে ছিলেন সুরঞ্জিতও। জরুরি অবস্থার সময় ভূমিকা নিয়ে দলে ‘কোণঠাসা’ হওয়ার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে সরব এই রাজনীতিককে এটাও বলতে শোনা যায়, ‘বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না’।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর সুরঞ্জিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। বাকপটু সুরঞ্জিত দেশের প্রথম রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পরই রেল বিভাগেকে দুর্নীতিমুক্ত করার ঘোষণা দেন। এ সময় বলেছিলেন, রেলের ‘কালো বিড়ালটি’ খুঁজে বের করতে চাই। কিন্তু পাঁচমাসের মাথায় এপিএসের গাড়িতে বিপুল অর্থ পাওয়া গেলে তিনি চাপে পড়ে যান। সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। তবে সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসাবে রাখেন শেখ হাসিনা। মৃত‌্যুর আগ পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সুরঞ্জিত।

উল্লেখ্য, ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ৪টা ১০মিনিটে দেহত্যাগ করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। রক্তে হিমোগ্লোবিন স্বল্পতাজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকলে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। গত বছর মে মাসে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সুরঞ্জিত। পরে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School

আরও পড়ুন