• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেঁজুতির চিঠির উত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী, উচ্ছ্বসিত পুরো পরিবার


নিউজ ডেস্ক এপ্রিল ২৪, ২০১৮, ১১:৫৬ পিএম
সেঁজুতির চিঠির উত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী, উচ্ছ্বসিত পুরো পরিবার

নারায়ণগঞ্জ : নতুন দাদুকে লেখা চিঠির উত্তর পেয়ে অনেক অনেক উচ্ছ্বসিত সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সেঁজুতির প্রয়াত দাদুর অনেক মিল। টেলিভিশনের পর্দায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেখে সেঁজুতি বার বার তার মৃত দাদুর অনেক মিল দেখতে পায়। ক’দিন আগে তার দাদু মারা যান।

ছবি দেখে প্রধানমন্ত্রীকে ‘দাদু’ ভাবতে শুরু করে সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও নাজমা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ এ সন্তান। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার প্রমিস চাইল্ড একাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সেঁজুতি। বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মোগরাপাড়া এইচজিজিএস স্মৃতি বিদ্যায়তনের শিক্ষক ও মা নাজমা বেগম সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক। দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে সৈয়দ রাসেল মাহমুদ পেশায় চিকিৎসক ও মেজো ছেলে সৈয়দ রাকিবুল ইসলাম এআইইউবি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে।

প্রধানমন্ত্রীকে নিজের অজান্তে ‘দাদু’ ডাকতে ডাকতে নিজেই একদিন চিঠি লেখেন নতুন এ দাদুকে। তাদের বাড়িতে ‘দাদু’ প্রধানমন্ত্রীকে বেড়াতে আসারও দাওয়াত দেয় সে। চিঠিটি ‘দাদু’ প্রধানমন্ত্রীকে পোস্ট করতে দেয় বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে। ভাবলেন বাবা। এ চিঠি পাঠানো ঠিক হবে কি না। কয়েক দিন আটকেও রাখলেন চিঠি। শিশুকন্যার আবদারে শেষ পর্যন্ত পোস্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর।

চিঠি পোস্টের ক’দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন আসে সেঁজুতির বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলামের কাছে। জানতে চাওয়া হয়, আপনি সেঁজুতির কী হন। বলা হয়, সেঁজুতি প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছে সেটা তিনি অনেকবার পড়েছেন। চিঠির উত্তর দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য সঠিক ঠিকানা প্রয়োজন। পরে আমি ঠিকানা মেসেজ করে পাঠাই। ২২ এপ্রিল দুপুরে চিঠিটি হাতে পাই।

এ খবর জেনে পরিবারে তখন উচ্ছ্বাস। গত রোববার দুপুরে ডাকপিয়ন যখন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সেই চিঠির উত্তরের খাম দিয়ে যান সেটা পেয়েই অবাক হয় পুরো পরিবার। সবাই কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রীকে।

সোমবার (২৩ এপ্রিল)  চিঠির খবর স্কুলে জানাজানি হলে সেঁজুতিকে সবাই একনজর দেখতে ভিড় করেন। অনেকেই সেঁজুতির কাছ থেকে চিঠি লেখা সম্পর্কে জানতে চান। সেঁজুতিও জানায়, সে অনেক খুশি। তার দাদু মারা গেলেও তিনি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই দাদু হিসেবে ডাকছেন।

বাবা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, সোনারগাঁও পোস্ট অফিসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঠিকনায় চিঠিটি পাঠাই। বিশ্বাস করতে পারিনি এ চিঠি এত গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পড়বেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন পেয়ে ও পরে উত্তর পেয়ে আনন্দিত হই।

সেঁজুতির মা নাজমা বেগম জানান, সেঁজুতির দাদু দেখতে হুবহু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো। সেঁজুতি নিজের দাদুকে মনে করে শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লিখে পাঠায়। আর শেখ হাসিনা সেই চিঠির উত্তর দেওয়ার পর সেঁজুতি অনেক খুশি হয়েছে।

মোবাইলে সেঁজুতি বলে, আমি খুবই খুশি। কারণ আমার দাদু চিঠির উত্তর দিয়েছেন। আমার এক দাদু মারা গেছেন কিন্তু আরেক দাদুকে পেয়েছি যিনি আমার চিঠির জবাব দিয়েছেন।
সেঁজুতি চিঠিতে যা লিখেছিল

৭৮৬
২৫-৩-২০১৮
মোগরাপাড়া
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
আসসালামু আলাইকুম, তুমি কেমন আছ? দাদুকে হারিয়ে আমি ভালো নেই। তোমার মুখ আমার দাদুর মুখের মতো। বিশেষ করে তোমার নাক আমার দাদুর নাকের মতো। তাই আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমাকে টিভিতে দেখলে আমার দাদুর কথা মনে পড়ে। আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি। তুমি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসো।
ইতি
তোমার স্নেহের সেঁজুতি।

এ চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়,
২৯ চৈত্র ১৪২৪/১২ এপ্রিল ২০১৮
প্রিয় সেঁজুতি, তোমার লেখা চিঠি পেয়েছি। আমার স্নেহ এবং শুভেচ্ছা গ্রহণ কর। আশা করি তুমি বাবা, মা এবং বন্ধুদের নিয়ে খুব ভালো আছো। তোমার চিঠিটি আমি কয়েকবার পড়েছি। তোমার দাদুর জন্য দোয়া করেছি। তোমার দাদুকে মহান আল­াহ রাব্বুল আ’লামিন বেহেশত নসিব করুন। তুমি মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করবে এবং নিয়মিত স্কুলে যাবে। বাবা-মার কথা শুনবে এবং বড় হয়ে দেশের সেবা করবে। তোমার জন্য আমার একটি ছবি পাঠালাম। অনেক অনেক দোয়া আর আদর রইল।
শেখ হাসিনা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!