• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেই ভুটানকে হারিয়ে বদলা নিল বাংলাদেশ


ক্রীড়া প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৮, ০৯:১৭ পিএম
সেই ভুটানকে হারিয়ে বদলা নিল বাংলাদেশ

ছবি: বাফুফে

ঢাকা: এশিয়ান গেমস ফুটবলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত করেছিল। তাই গেমসের সেই একাদশেই ভরসা রেখেছিলেন বাংলাদেশ দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে। শিষ্যরা সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছে। দক্ষিণ এশীয় ফুটবলের বিশ্বকাপ খ্যাত টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে হারিয়ে স্বপ্ন যাত্রা শুরু করেছে লাল সবুজের দল।  

মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে প্রতিশোধও নেয়া হয়েছে বাংলাদেশ দলের। ২০১৬-এর অক্টোবরে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দ্বিতীয় প্লে-অফে এই ভুটানের কাছে ৩-১ গোলে হারে বিপর্যয় নেমে এসেছিল বাংলাদেশের ফুটবলে। প্রায় দুই বছর পর সেই  ভুটানকে হারিয়ে দিল লাল সবুজের দল।   

এদিন প্রথম মিনিটেই কর্ণার আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের কর্ণার বক্সে পেয়ে লাফিয়ে উঠে হেড নেন ফাহাদ। তাকে অবৈধভাবে বাধা দেন ভুটানের এক ডিফেন্ডার। পেনাল্টি পায় লাল-সবুজরা। তৃতীয় মিনিটে দক্ষ স্পট কিকে ভুটানের জাল কাঁপান তপু বর্মণ (১-০)।

সপ্তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ভুটানের বক্সে ঢুকে পড়েন মাহবুবুর রহমান সুফিল। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। শুয়ে পড়ে বল ক্লিয়ার করেছেন ভুটান গোলরক্ষক। ১৮ মিনিটে নিমা ওয়াংডির শট ঝাপিয়ে পড়ে গ্রিপে নেন গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল।

২৪ মিনিটে আরো একটি জোড়ালো আক্রমণ সানায় ভুটান। বিপদজনক ফুটবলার চেঞ্চু গেইলশেনের শট ছিলো নিশ্চিত গোল। বল ক্লিয়ার করতেও ব্যর্থ হয়েছিলো বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। তবে সৌভাগ্যবশত গোল হজম করতে হয়নি।

২৭ মিনিটে চেঞ্চুর শট আটকে দেন গোলরক্ষক সোহেল। এর কিছুক্ষণ পর বা প্রান্ত থেকে ক্রস পেয়ে পোস্টের খুব কাছে বল পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ফাহাদ। ৩৫ মিনিটে বক্সের ভেতর বিপলুর হেড ফিরিয়ে দেন ভুটানের গোলরক্ষক। পরের মিনিটে বক্সের ভেতর আতিকুর রহমান ফাহাদের শটও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধ এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় স্বাগতিকরা।

বিরতির পর আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ দল। সুফলও পায় তারা। ৪৬ মিনিটে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের কোনাকোনি শটে ব্যবধান দিগুণ করেন মাহবুবুর রহমান সুফিল (২-০)। গ্যলারীতে তখনও দর্শকরা চেচাচ্ছেন ‘ওয়ান্স মোর’। দুই গোল দিয়ে গোল ক্ষুধা কি মিটে গোলো বাংলাদেশের? মোটেই না। সাদ-সুফিলরা চেষ্টার কমতি রাখেননি। একটু পরপরই গ্যালারীতে রব ‘গোল... ইশ!’ সত্যিই অল্পের জন্যই হাতছাড়া হচ্ছিলো বাংলাদেশের গোলগুলো। হঠাৎই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টিই বোধহয় বাংলাদেশের আক্রমণের ধার কিছুটা কমিয়ে দিলো। তবুও বৃষ্টিতে ভিজেই ম্যাচের শেষটা দেখার অপেক্ষায় হাজার হাজার দর্শক।

২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে হারানো ছিলো বাংলাদেশের সর্বশেষ জয়। এরপর প্রায় ৩২ মাস ধরে কোন জয় পায়নি লাল-সবুজরা। উল্টো একই বছরে (২০১৬ সালের) অক্টোবরে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভুটানের কাছে হেরে প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নির্বাসনে ছিলো বাংলাদেশ। এই জয় দিয়ে ২৩ মাসের যন্ত্রণার অবসান ঘটালো লাল-সবুজের দল সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সাফল্যে যুক্ত হলো আরো একটি পালক। সর্বশেষ (২০১৫) সাফে ভুটানের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছিলো বাংলাদেশ।

তৃতীয়বারের মত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক হয়েছে বাংলাদেশ। ইতিপুর্বে দুইবার আয়োজন করে একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাল সবুজের জার্সিধারীরা। ২০০৩ এবং ২০০৯ সালে দুটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হলেও দ্বিতীয়বার ব্যর্থ হয়েছিল। ১৫ বছর পর সেই ব্যর্থতা ঘোচানোর সুযোগ এসেছে স্বাগতিকদের সামনে।

স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপের অন্য দলগুলো হচ্ছে নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তান। এছাড়া, গ্রুপ বি’তে আছে ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা। সাফের গত তিন আসরে ব্যর্থ হলেও এবার বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি বেশ ভাল হয়েছে। কাতার ও কোরিয়ায় প্রস্তুতি ক্যাম্পে অংশ নিয়েছে তারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!