• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সেনা মোতায়েন ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের প্রস্তাব দেবে বিএনপি


সোনালী বিশেষ অক্টোবর ১৩, ২০১৭, ১২:৫৩ পিএম
সেনা মোতায়েন ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের প্রস্তাব দেবে বিএনপি

ঢাকা : নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণের সূচি অনুযায়ী আগামী রোববার (১৫ অক্টোবর) বিএনপির প্রতিনিধিরা সংলাপে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, সংলাপের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে একটি খসড়া তৈরি হচ্ছে। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কিছু জানাব না। শুধু এটুকু জানাচ্ছি, আমাদের প্রতিনিধিদল ১৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন।

এদিকে, বিএনপির বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রস্তাবনায় মূল দাবি থাকবে সকল দেলের জন্য লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন নিশ্চিত করা, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের (আরপিও) পাঁচটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করবে দলটি।

এদিকে, সংলাপে কোন বিষয়ের উপর প্রস্তাব করা হবে সেই বিষয়ে রিজভী কিছু না বললেও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু জানিয়েছেন, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশনের নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করা এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সহায়ক সরকারের বিষয়ে তাদেরকে প্রস্তাব করা হতে পারে।

সংলাপের বিষয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আরো বলেন, আমরা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন চাই। নির্বাচন কমিশনের নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করতে চাই। সেই সঙ্গে নির্দলীয় একটি সহায়ক সরকার ছাড়া যে এদেশে নির্বাচন সম্ভব নয় তা মনে করাতে চাই। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের একটি প্রতিনিধি দল কাজ করছে। কোন কোন বিষয়ে প্রস্তাবনায় রাখা সেই বিষয়ও তারা ঠিক করছেন।

আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাই মাসের শেষের দিকে সংলাপ শুরু করে ইসি। তখন থেকেই বিএনপি সংলাপের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে বলে জানা যায়। এমনকি দলের কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে নিয়ে এ বিষয়ে কমিটিও গঠন করা হয়। দেশের বর্তমান বাস্তবতায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী কী প্রস্তাবনা দেয়া যায় তার খসড়া প্রণয়নের জন্য তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়।

এছাড়া নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করতে কমিশনের নিজস্ব সচিবালয় গঠন, কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ, কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা, দলীয় মনোভাবাপন্ন নির্বাচনী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ, নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর থেকে নতুন সরকারি দায়িত্ব গ্রহণ পযন্ত সরকারের স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখা, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং নতুন ভোটার তালিকায় নিবন্ধীকরণযোগ্য সব নাগরিক যেমন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, কারাবন্দি, নানা মামলায় যুক্ত ব্যক্তি ও নেতা-কর্মীদের ভোটার করার বিষয়ে প্রস্তাব থাকবে বিএনপির।

এর বাইরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৭ দিন আগে আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত পর্যবেক্ষকদের নাম ও তালিকা প্রকাশ করার প্রস্তাবও থাকতে পারে।

এ বিষয়ে বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইসির সঙ্গে সংলাপে কি নিয়ে আলোচনা হবে তা এখন বলতে পারবো না। চলমান আন্দোলনের দাবি-দাওয়াগুলো প্রাধান্য পাবে। আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাব আছে, যা এখন বলতে পারছি না। এসব প্রস্তাব আমাদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঠিক করেছে। সংলাপের পর আপনারা তা জানতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, আগামী একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে পরামর্শ পেতে গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ২৪ অগাস্ট থেকে শুরু হয় নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ। এবার দলগুলোকে নিবন্ধনক্রমের নিচ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে হিসাবে বিএনপির জন্য ১২ অক্টোবর ও আওয়ামী লীগের জন্য ১৫ অক্টোবর সংলাপের  তারিখ প্রস্তাব করা হয়।

কিন্তু বিএনপি দলীয় কর্মসূচির কথা বলে ১৫ অক্টোবর বসতে চাইলে তাদের জন্য সেই দিনই ঠিক হয়। আর আওয়ামী লীগের অনুরোধে তাদের সংলাপের জন্য ১৮ অক্টোবর তারিখ রাখা হয়। এ কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এই সংলাপকে বলেছিলেন ‘আইওয়াশ’। তারপরও বিএনপি সংলাপে যোগ দিতে যাচ্ছে এবং সেখানে দলটির প্রতিনিধিরা ‘নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে’ তাদের প্রস্তাব এবং দেশের রাজনীতিতে চলমান বিষয়গুলো আলোচনায় তুলবেন বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান রিজভী।

এদিকে, জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সংলাপে পাঠাচ্ছে বিএনপি। ওই প্রতিনিধি দলে স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য থাকবেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!