• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোঁদা গন্ধ কেমন করে?


বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক অক্টোবর ২৮, ২০১৬, ০৬:০৬ পিএম
সোঁদা গন্ধ কেমন করে?

পথের পাঁচালির অপু-দুর্গা

ঢাকা: কতো কবি-গীতিকার যে মাটির সোঁদা গন্ধ নিয়ে কবিতা-গান লিখেছেন তার ইয়ত্তা নেই। গরমকালে তো এই গন্ধের জন্য অপেক্ষা করে থাকে অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই গন্ধ এলো কোথা থেকে? মাটির কি নিজের গন্ধ হয়?

গরমকালে দুপুরবেলা জানালার পাশে হয়তো বসে আছি। এমন সময় আকাশ কালো করে এলো। নামলো এক পশলা বৃষ্টি। এমন সময় হঠাৎ নাকে এলো সেই অদ্ভুত মায়া জড়ানো গন্ধ- সোঁদা গন্ধ।

অনেকে বলেন, রোদ্দুরে তেতেপুড়ে থাকা মাটি জল পেয়ে এমন বাষ্প তৈরি করে। হবে হয়তো। কিন্তু তার এমন গন্ধ কেন? ভাবার বিষয় বটে। এটাও নিশ্চয় শোনা আছে যে, উট মরুভূমিতে ঠিক মরূদ্যান খুঁজে বার করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কীভাবে?

বিজ্ঞানীরাও সন্ধান করছিলেন এই সোঁদা গন্ধের রহস্য। ১৯৬৫ সালে প্রথম একটি রাসায়নিক যৌগপদার্থের সন্ধান পান তারা। যা তৈরি করে থাকে একটিনোমায়সিটিস গোত্রের ব্যাক্টিরিয়া। সেই যৌগটির রাসায়নিক গঠন ঠিক নিচের ছবিটির মতো। বাম দিকের ছবিটাকেই ত্রিমাত্রিক ভাবে আঁকলে ডানদিকের ছবির মতো দেখায়।

যৌগটির নাম জিওস্মিন (geosmin)। মজার ব্যাপার হলো- এই জিনিসটি বাতাসে খুব অল্প পরিমাণে থাকলেও আমরা গন্ধ পাই। ঠিকঠাকভাবে বললে, বাতাসে একশ কোটি ভাগের এক ভাগ (1 part per billion) থাকলেও এর গন্ধ পাওয়া যায়। আর উট অথবা অন্য বহু প্রাণী তো আরো বেশি করে এর গন্ধ পায়।

এখন হয়তো প্রশ্ন আসবে- বৃষ্টির সময় ছাড়া এর গন্ধ পাওয়া যায় না কেন? আসলে যে ব্যাক্টিরিয়া জিওস্মিন তৈরি করে তারা মাটিতে বাস করে, মাটির মধ্যেই তাদের জীবনাবসান ঘটে। আর বৃষ্টির পানি পড়লে তাদের মৃত কোষগুলো থেকে জিওস্মিন বেরিয়ে আসে। তখন গন্ধটা পাওয়া যায়। এটাও লক্ষ্যণীয়, শুকনো আবহাওয়ার মধ্যে বৃষ্টি পড়লে এর গন্ধ আরো বেশি করে পাওয়া যায়। তার কারণ হচ্ছে- শুকনো আবহাওয়াতে অন্য জৈবপদার্থের পরিমাণ কম থাকে। তাই অন্য গন্ধ বেশি পাওয়া যায় না।

জিওস্মিন আবিষ্কারের পর বেশ কয়েক দশক কেটে গেছে। বিজ্ঞানীরা এর মধ্যে ব্যাক্টিরিয়ার মধ্যে উৎসেচকটিকেও খুঁজে বের করেছেন যা এই অণুটি তৈরি করে থাকে। গবেষণাগারে তারা সেই উৎসেচকের রাসায়নিক কিছু পরিবর্তন করে জিওস্মিন তৈরি করার ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন। এর ফলে সোঁদা গন্ধ হয়তো পাওয়া যাবে না, তবে অনেক সময় জিওস্মিন পানিতে মিশে যে দূষণ হয় তা থেকে বাঁচা যাবে। (সূত্র: বিজ্ঞান)

সোনালীনিউজ/এমএন ‌‌

Wordbridge School
Link copied!