• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সোহানের পুরো শরীরটাই কলিজা: মাশরাফি


ক্রীড়া প্রতিবেদক মার্চ ১৮, ২০১৮, ০৬:৫০ পিএম
সোহানের পুরো শরীরটাই কলিজা: মাশরাফি

ফাইল ছবি

ঢাকা: ১৯৯৭ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব একটা ভাল নৈপুন্য দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। অনেক ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরেছে লাল সবুজের দল। এ নিয়ে কম গঞ্জনা সহ্য করতে হয়নি আজকের টাইগারদের। তবে সুদিনের আশায় সে সব নিরবে সহ্য করেছে। কিন্তু দিন বদলে গেছে বিশ্ব ক্রিকেটে এখন সমীহ জাগানিয়া দলে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ। কারও চোখ রাঙানিতে আর ভয় পায়না টাইগাররা। বুক ফুলিয়ে প্রতিবাদ করতে শিখেছে লাল সবুজের পতাকার প্রতিনিধিরা।  

গত শুক্রবার (১৬ মার্চ) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে যার প্রমাণ রেখেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আর নরুল হাসান সোহান।

এদিন নিদাহাস ট্রফির ৬ষ্ঠ্য ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে টাইগারদের সামনে ১৬০ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল লঙ্কানরা। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নেমে এক পর্যায়ে ১৯ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান তোলে বাংলাদেশ। ফলে জয়ের জন্য শেষ ওভারে লাল সবুজের দলের প্রয়োজন হয় ১২ রানের।  

এমন অবস্থায় ২০তম ওভারে ব্যাট হাতে স্ট্রাইকে মোস্তাফিজুর রহমান আর ননস্ট্রাইক প্রান্তে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। উদানার প্রথম বল মোস্তাফিজের কাঁধের উপর দিয়ে কিপারের হাতে। একই ভাবে দ্বিতীয় বল। কিন্তু আম্পায়ারের কোনো সাড়া নেই। এ সময় রানআউট হন মোস্তাফিজ। নো বল না দেয়ায় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব ব্যাপারটা ভালোভাবে নেননি।

এক পর্যায়ে উইকেটে থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর রুবেল হোসেনকে মাঠ ছেড়ে উঠে আসতে বলেন। তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন সহ ডাগআউট কিংবা ড্রেসিংরুমে থাকা সবাই। তখন পানি নিয়ে অতিরিক্ত খেলোয়াড় কাজী নুরুল হাসান সোহান যান রিয়াদদের কাছে। এ সময় সোহানের সঙ্গে ঝগড়া লেগে যায় থিসারা পেরেরার।  

এ প্রসঙ্গে সোহান বলেন, ঝামেলাটা শুরু করে লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। রিয়াদ ভাই নো বল না দেয়া নিয়ে আম্পায়ারের সাথে কথা বলছিল। আমিও সেখানে দাঁড়িয়েছিলাম। লেগ  আম্পায়ারকে আমি জিজ্ঞেস করলাম দ্বিতীয় বল বাউন্স হলো কিনা। এতেই হঠাৎ পেরেরা বলে উঠলো এখানে তোমার কি কাজ। যাও!  থিসারা আমাকে গালি দিয়ে বলে এটা তোমার কাজ নয়। তখন আমিও তাকে বলছিলাম আমি আম্পায়ারের সাথে কথা বলেছি তোমার সাথে নয়। তুমি কেনো আমার সাথে উত্তেজিত হচ্ছ? এই বলে আমি চলে আসছি।

দলের ১২ নম্বর খেলোয়াড় হয়েও সোহান এখন সুপার হিরো দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের চোখে। অনেকের মতে, তিনি (সোহান) দলে না থেকেও যে সাহস দেখিয়েছেন সেটি এক কথায় অনন্য। সোহান বুঝিয়ে দিলেন, আমরাও প্রতিবাদ করতে শিখে গেছি। যদিও এমন আচরণের জন্য এক ডিমেরিট পয়েন্টসহ ম্যাচ ফি'র ২৫% জরিমানা গুনতে হয়েছে সোহানকে।

সোহানের এমন ভুমিকায় দারুণ খুশি বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তাজা। তিনি মুখ ফসকে বলেই ফেলেন, ‘সোহানের পুরো শরীরটাই কলিজা’।

পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার খেলা শুরু হয়। দর্শকদের মাঝে টান টান উত্তেজনায় পরের ৪ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতেই  মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় কাঙ্ক্ষিত জয়ের দেখা পায় টাইগাররা। ২০তম ওভারের ৫ম বলে ছক্কা হাকিয়ে জয়ের নায়ক বনে যান মাহমুদউল্লাহ। মাত্র ১৮ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!