• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
গ্রন্থমেলা শুরু হতে দুই দিন বাকি

স্টল নির্মাণে রাতদিন কাজ করছেন শ্রমিকরা


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৯, ২০১৮, ০২:০৭ পিএম
স্টল নির্মাণে রাতদিন কাজ করছেন শ্রমিকরা

ঢাকা : মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দু’দিন পর। এজন্য প্রস্তুত হচ্ছে মেলা চত্বর। শ্রমিকরা রাতদিন কাজ করে গড়ে তুলছেন স্টল ও প্যাভিলিয়নের কাঠামো। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করবেন।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সরেজমিন দেখা যায়, শ্রমিকরা বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নের সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত। গত ২৩ জানুয়ারি বিকালে লটারির মাধ্যমে স্টল নম্বর বরাদ্দ হয়েছে। তাই প্রকাশকরা কাজ শেষ করতে সময় পাচ্ছেন সর্র্বোচ্চ আট দিন। অল্প সময়ে কাজ শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকায় চাপ পড়ছে নির্মাণশ্রমিকদের ওপর।

অন্য প্রকাশের প্যাভিলিয়ন নির্মাণে যুক্ত শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ মিয়া জানান, গ্রন্থমেলা চত্বরে রাতদিন কাজ করছেন তারা। তিনি বলেন, মেলা শুরু হতে মাত্র তিন দিন বাকি আছে। এর মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারলে ঝামেলা। এ কারণে রাতদিন কাজ করতে হচ্ছে।

সাহস পাবলিকেশন্সের স্টল তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিক হামিদুল ইসলাম জানান, প্রায় ১৭ বছর ধরে গ্রন্থমেলার কাজ করছেন তিনি। এবার প্রায় ৯টি প্রকাশনীর কাজ পেয়েছেন। গ্রন্থমেলার এই সময় শ্রমিক পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় বলেও অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন তিনি।

হামিদুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই গ্রন্থমেলার কাজ করার জন্য শ্রমিকদের ঠিক করে রাখতে হয়। আবার সব ধরনের শ্রমিক এই কাজ করতে পারে না। তার জন্য অভিজ্ঞ শ্রমিক প্রয়োজন হয়।

দেশ পাবলিকেশন্সের সাজসজ্জার কাজ করছিলেন বাবর মিয়া। তিনিও প্রায় ১৫ বছর ধরে গ্রন্থমেলার স্টল নির্মাণের সঙ্গে জড়িত। জানান, একেক প্রকাশকের একেকরকম রুচি। কেউ অনেক খরচ করে স্টল নির্মাণ করেন। কেউ আবার নামকাওয়াস্তে স্টল বানিয়ে গ্রন্থমেলা পার করেন।

এবার প্রায় সোয়া পাঁচ লাখ বর্গফুট এলাকাজুড়ে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিশাল পরিসরের এ গ্রন্থমেলায় এবার রেকর্ডসংখ্যক ৭০০টি স্টল ও ২৩টি প্যাভিলিয়ন থাকছে। থাকছে পর্যাপ্ত টয়লেট। লেখকদের আড্ডা দেওয়ার জন্য মেলা চত্বরে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা রেখেছে বাংলা একাডেমি।

গত দুই বছরের মতো এবারও মেলার ভেতরের প্রধান সংযোগ রাস্তায় ইটের সলিং রাখা হচ্ছে, যা তৈরির কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে সলিং তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ১ ফেব্রুয়ারির আগেই কাজ শেষ হবে।

এদিকে চাপ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্টল তৈরির কাজ করলেও শ্রমিকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কালো’র প্রকাশক শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ জানান, শ্রমিকরা এখন কাজ শেষ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন। তিনি বলেন, শ্রমিকরা প্রতিবছর এই কাজ করে অভ্যস্ত। তারা জানেন, শেষ দিকে স্টল প্রস্তুতের জন্য সব প্রকাশক প্রায় একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নির্মাণশ্রমিকরাও এই সুযোগটা নেন।

মেলার স্টল নির্মাণের কাজে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচণ্ড চাপ নিয়ে কাজ করলেও নির্ধারিত সময়ের আগে সব স্টলের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। অনেক স্টলের কাজই বাকি থাকবে বলে তারা জানান। তবে মেলা শুরুর প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে অসমাপ্ত কাজগুলো করবেন তারা।

অনন্যা প্রকাশনীর নির্মাণশ্রমিক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি আটটি প্রকাশনীর কাজ পেয়েছিলেন। এখানে কাজ করতে এসে নতুন করে আরো তিনটি প্রকাশনীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তবে অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মেলার আগে সব প্রকাশনীর কাজ শেষ করতে পারবেন না।

অন্যদিকে মেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। গত যে কোনো বছরের তুলনায় এবারের মেলা বৃহত্তর পরিসরে আয়োজন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই। প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ নির্ধারিত সময়ে মেলার উদ্বোধন করবেন। স্টল নির্মাণের ব্যাপারটা যেহেতু প্রকাশনীগুলোর নিজেদের হাতে, তাই তাদের প্রস্তুতির ব্যাপারটা আমরা জানাতে পারব না। তবে সময়মতো সব কাজ শেষ করার ব্যপারে প্রত্যেক প্রকাশনীকেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!