• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু


মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি নভেম্বর ১২, ২০১৭, ০৭:০৮ পিএম
স্বামীর নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

মোরেলগঞ্জ : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের তেতুবাড়িয়া গ্রামে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনে স্ত্রী স্কুলছাত্রী সুমি আকতারের (১৬) রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনার পর পরই স্বামী পালিয়ে গেছে। রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের ছালাম শেখের কন্যা সুমি আকতার। পিতা দিনমজুর। সুমি দক্ষিণ সুতালড়ী এইচএমজেকেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্রী। এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। একই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র গাজীকালু গ্রামের তোরাব আলী হাওলাদারের পুত্র উজ্জ্বল (২০)। এ বিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন উজ্জ্বল পিছু নেয় সুমির। নানাভাবে উত্যক্তসহ প্রেম নিবেদন করে। এভাবে চলে দিনের পর দিন। গত জুন মাসের কোনো এক রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরে বের হলে তাকে জোরপূর্বক তুলে নেয় উজ্জ্বল। পরে স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব। শুরু হয় মাদকাসক্ত স্বামী শাশুড়ি ও ননদের শারীরিক নির্যাতন।

সুমির মা নাসিমা জানায়, শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসে সুমি। সামনে এসএসসি ফর্মফিলাপ ও পড়াশুনা। এছাড়া বেকার মাদকাসক্ত স্বামী ও শ্বশরবাড়ির শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে আর ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত।

ঘটনার দিন স্বামী উজ্জ্বল তাকে নিতে আসে। এ সময় সুমির বাবা-মা বাড়ির নিকটবর্তী খালে মাছ ধরার ডাল পুঁততে (স্থানীয়ভাবে যাকে ঝাঁইল বলে) যায়। বাবা-মার অনুপস্থিতে উজ্জ্বল জোর করে সুমিকে তাদের বাড়ি নেয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। দুপুরের দিকে মা নাসিমা বেগম বাড়িতে এসে ঘরের মধ্যে দরজার আড়ার সঙ্গে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।

তিনি বলেন, যেখানে সুমিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে সেখানে গলায় দড়ি দেয়া সম্ভব নয়। পা ছিল মাটিতে। তার পরনের কামিজ ছিল ছেঁড়া ও গলায় আঘাতের চিহ্ন। ধারণা করা হচ্ছে সুমিকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য ঝুঁলিয়ে উজ্জ্বল পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টায় দিকে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং প্রাথমিকভাবে ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়। লাশের গলার কাছে ফোলা চিহ্ন রয়েছে।

দক্ষিণ সুতালড়ী এইচএমজেকেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র হালদার জানান, সুমি তার বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী। উজ্জ্বল তার বিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ থাকায় তাকে একবার টিসি দেয়া হয়েছিল।

থানা অফিসার ইনচার্জ মো. রাশেদুল আলম জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে প্রকৃত সত্য উম্মোচিত হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!