• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
নাসিক নির্বাচন

স্লোগানে মুখরিত নারায়ণগঞ্জ


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৭, ২০১৬, ১২:৪১ পিএম
স্লোগানে মুখরিত নারায়ণগঞ্জ

দীর্ঘ ১০ বছর পর নারায়ণগঞ্জে আবারও জমে উঠেছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ ও বিএনপির ‘ধানের শীষ’-এর লড়াই। প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় ভোটের মাঠে নতুন করে উৎসবের মাত্রা যোগ হয়েছে বলে মনে করছে নগরবাসী। যার প্রতিফলন গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার ভোর থেকেই নগরজুড়ে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থকরা স্লোগান দেন- ‘তোমার আমার মার্কা নৌকা... নৌকা’, ‘আইভী আপার মার্কা নৌকা...নৌকা’, ‘জনগণের মার্কা নৌকা...নৌকা’, ‘উন্নয়নের মার্কা নৌকা...নৌকা’ ইত্যাদি। আর বিএনপির সমর্থকরা স্লোগান দেন- ‘খালেদা জিয়ার মার্কা ধানের শীষ...ধানের শীষ’, ‘সাখাওয়াত ভাইয়ের মার্কা ধানের শীষ...ধানের শীষ’, ‘নারায়ণগঞ্জবাসীর মার্কা ধানের শীষ...ধানের শীষ’, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মার্কা ধানের শীষ’, ‘জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের মার্কা ধানের শীষ’ ইত্যাদি। 

বিগত ২০০১ সালে সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নির্বাচনী লড়াই দেখেছিলেন নাগরবাসী। এরপর ২০০৬ সাল থেকে সেটা আর দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। কারণ ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকাধীন সদর-বন্দরে জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ সমর্থিত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর সিদ্ধিরগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সারাহ বেগম কবরী।

এরপর বিগত ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলেও তাতে বিএনপি বয়কট করায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নাসিম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে শামীম ওসমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর সেই বছরের ৩০ এপ্রিল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান মারা গেলে জুন মাসে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও পরে এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ফলে ‘নৌকা’ আর ‘ধানের শীষ’-এর ভোটের লড়াই দেখার সুযোগ পায়নি নারায়ণগঞ্জবাসী।

চলতি বছরের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সিটি নির্বাচনকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ভোটের মাঠে এই দুটি রাজনৈতিক দলের সরব উপস্থিতির কারণে এখন নারায়ণগঞ্জে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

গণসংযোগেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন আইভী : গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকাল থেকে গণসংযোগ চলাকালেই চলতিপথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বলেন, আমি সময় নষ্ট করতে চাচ্ছি না। আমি চাচ্ছি সব এলাকায় যেতে, গিয়ে মানুষকে ভোট দেয়ার আহ্বান রাখতে। বিগত দিনে আমি চেষ্টা করেছি সাধ্যমতো উন্নয়ন করতে। চেষ্টা করেছি উন্নয়ন শেষ করতে। অনেক উন্নয়ন হয়েছে, অনেক চলমান আছে। বিগত নির্বাচনেও আমার জন্য মা-বোনেরা এগিয়ে এসেছিলেন। এবারও তারা আসছেন। শুধু নারী না, পুরুষরাও আসছেন। আমি মনে করি, এটাই আমার সার্থকতা। অনেক তরুণ ভোটারও আসছেন।

এদিকে সিটি নির্বাচন সামনে রেখে আইভী ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যেতে শুরু করেছিলেন আগে থেকেই। তবে প্রতীক পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পুরোমাত্রায় মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। গতকাল ঘড়ির কাঁটা ৯টার ঘর ছোঁয়ার কয়েক মিনিট আগেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পাঠানটুলী এলাকায় গিয়ে হাজির হন আইভী। সঙ্গে সাত থেকে আটজন কর্মী। পাঠানটুলী বাসস্ট্যান্ডে নামার পরই এলাকায় রব ওঠে- ‘ওই যে আইভী আসছে’, ‘চুনকার মাইয়্যা আইছে’, ‘আইভী আপা, নৌকা...নৌকা’। আগের দিন সোমবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হয়। এরপর মূলত গতকাল সকাল থেকেই প্রতীক নিয়ে শুরু হয় প্রার্থীদের মূল প্রচারণা।

ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ : গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকালে আইভী সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানটুলী, গোদনাইল, এনায়েতনগর, প্রধানবাজার, আইলপাড়া, চৌধুরীবাড়ী, তাঁতখানা এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বাসিন্দাদের রাস্তায় বের হতে দেখা গেছে। আইভী তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অনেক নারীর সঙ্গে আলিঙ্গন করেছেন। হাত মিলিয়েছেন। আবার অনেক নারীর সঙ্গে আলাপ করে জানতে চেয়েছেন, কাকে ভোট দেবেন। কেউ কেউ বলেছেন, আইভীকে।  কেউ বা বলেছেন নৌকা মার্কায়। এ সময় অনেকে ফুল ছিটিয়ে আইভীকে বরণ করে নেন।

 মা রে...তুই ক্যারে আইসস : নগরীর দক্ষিণ এনায়েতনগর এলাকায় সকাল থেকেই জট বেঁধেছিলেন ১৬-১৭ জন নারী। তাদের মধ্যে ছিলেন সত্তর বছরের সাবিকুন নাহার। আইভীকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খান তিনি। যাওয়ার সময় আইভীকে বলেন, ‘মা রে তুই কেরে আইসস কষ্ট কইরা?’

আইভী এলেও পাস, না এলেও পাস : নগরীর পশ্চিম এনায়েতনগর প্রধান বাজার এলাকায় ‘সানি স্টোর’ নামের একটি মুদি দোকান। সেখানে ছিল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আইভীর নাম শুনেই আশপাশের বাড়ি থেকে ছুটে আসে লোকজন। বিভিন্ন ভবন থেকে লোকজন হাত নেড়ে স্বাগত জানায় আইভীকে। সাইফুজ্জামান নামের একজন চাকরিজীবী এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আইভী এলেও পাস, না এলেও পাস।’ এ সময় পাশের সখিনা মঞ্জিল থেকে বেরিয়ে আসেন কয়েকজন নারী। সঙ্গে কয়েকটি শিশু। তারাও আইভীকে দেখে বলে ওঠেন, ‘আপা, আমিও আপনেরে ভোট দিমু।’ আইভী বলেন, ‘তুমি কি ভোটার।’ উত্তরে ওই শিশু বলে, ‘আম্মারে কমু আমারে লগে লইয়া ভোটটা যাতে আইভীরে দেয়।’

ভোর থেকে যেভাবে গণসংযোগে ছিলেন সাখাওয়াত : গত (০৫ ডিসেম্বর) সোমবার আনুষ্ঠানিক প্রতীক পাওয়ার আগেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান। তখন প্রতীক ছিল না। তাই ব্যক্তিগতভাবেই তখন গণসংযোগ চালিয়েছেন তিনি। সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) প্রতীক পাওয়ার পর গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার ভোর থেকে জোরেশোরে নগরবাসীর সমর্থন আদায়ে নেমে পড়েন তিনি। হাতে ‘ধানের শীষ’ নিয়ে এখন সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন বিএনপির এই প্রার্থী। গতকাল ভোর থেকেই গণসংযোগে নামেন সাখাওয়াত। কখনো একা, কখনো নেতাকর্মীবেষ্টিত হয়ে, আবার কখনো কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে চালান গণসংযোগ।

কাকডাকা ভোরে গণসংযোগ শুরু : প্রতিদিন ভোরেই শহরের জিমখানা ও সিটি করপোরেশনের নগর ভবন এলাকায় ব্যায়াম করতে, হাঁটতে বের হন প্রচুর মানুষ। গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৬টায় নগর বিএনপির সেক্রেটারি এ টি এম কামালসহ আরো  কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানেই পৌঁছান সাখাওয়াত হোসেন খান। হাত মাইকে প্রচারের পাশাপাশি তিনি চালান গণসংযোগ। ওই সময় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেন সাখাওয়াত। তিনি বলেন, মানুষ পরিবর্তন নিশ্চয়ই চায়, আপনারাও বোধ হয় চান। তাই পরিবর্তনের অঙ্গীকারে এবার ধানের শীষে ভোট দিন।
সাখাওয়াতের সঙ্গে থাকা একজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, গতকালের ভোরবেলাকে ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত পেশাজীবীরাই মূলত সকালে হাঁটতে বের হন। তাদের টার্গেট করেই আজ প্রচার চালান সাখাওয়াত।

এ ছাড়া শহরের খানপুর হাসপাতাল রোড, চাষাঢ়া, খানপুর রেললাইন এলাকায়ও গণসংযোগ করেন সাখাওয়াত ও তার লোকজন।

বোস কেবিনে নাশতা : নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁ বোস কেবিন স্থানীয় বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আড্ডাস্থল। প্রতিদিন সকালে গণ্যমান্য অনেকেই এখানে নাশতা করতে আসেন। গতকাল সকালে এ রেস্তোরাঁয়ই নাশতা করেন সাখাওয়াত। চা খেতে খেতে কথা বলেন অনেকের সঙ্গে।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে গণসংযোগ : গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় সাখাওয়াত যান শহরের মণ্ডলপাড়া ও ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায়। মণ্ডলপাড়া এলাকা দিয়ে মূলত মুন্সীগঞ্জের লোকজন নারায়ণগঞ্জ শহরে আসেন। আর সাখাওয়াতের আদি নিবাস হলো মুন্সীগঞ্জ। তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ভাড়া থাকেন। আর নারায়ণগঞ্জে মুন্সীগঞ্জের প্রচুর মানুষ স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবেও বসবাস করছেন। এসব কারণে মণ্ডলপাড়া এলাকায় সকাল থেকেই ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ চালান তিনি। এরপর সাখাওয়াত শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায়ও গণসংযোগ চালান। সেখানে তিনি বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানমুখী শ্রমিক ও পেশাজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকার সড়ক দিয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ স্ব-স্ব কর্মস্থলে যান। সে সুযোগটিও গতকাল সকালেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন সাখাওয়াত।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে গণসংযোগ : গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগে বের হন সাখাওয়াত। বঙ্গবন্ধু সড়কের ২নং রেলগেট, গ্রীন্ডলেজ ব্যাংক মোড়, চাষাঢ়া হয়ে আবারও দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয় গণসংযোগ। 

এ সময় সাখাওয়াতের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার, সেক্রেটারি কাজী মনিরুজ্জামান, নগর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সেক্রেটারি এ টি এম কামাল, সাবেক তিন এমপি গিয়াসউদ্দিন, আবুল কালাম, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর প্রমুখ। 

শঙ্কার কথা বললেন সাখাওয়াত : গতকাল (০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর সাখাওয়াত হোসেন খান বিএনপি কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল ভোর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছি। এ সময় সাধারণ ভোটারদের উৎসাহ ও গণজোয়ার দেখে আমি অভিভূত। তবে অনেক ভোটার শঙ্কা প্রকাশ করেন, তারা আদৌ ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন কি না। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি ভোট কেন্দ্রে যেতে। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো না হলে, তারা ভোটকেন্দ্রে গেলে গণরায় আমার পক্ষে, ধানের শীষের পক্ষেই যাবে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস, গুম, হত্যা ও গণতন্ত্র হরণে ক্ষুব্ধ নারায়ণগঞ্জবাসীর মনে আজ পরিবর্তনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু হলে জনগণের ভোটশক্তির জোরেই ‘ধানের শীষ’ বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবে। আইভীকে নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু তিনি যে নৌকায় উঠেছেন, সেই নৌকাকে বাংলার মানুষ আজ চায় না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!