• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কজুড়ে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে ভোগান্তি চরমে


বিশেষ প্রতিনিধি এপ্রিল ২৩, ২০১৭, ০৮:১২ পিএম
সড়কজুড়ে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে ভোগান্তি চরমে

ঢাকা: মূল সড়কের অর্ধেক দখল করে সিটি করপোরেশনের কয়েকটি ময়লার কন্টেইনার রাখা। আবর্জনা যতটা কন্টেইনারের ভেতরে, বাইরে তার চাইতে বেশি। এতে সড়ক সরু হয়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যান চলাচল। আর ময়লার দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারী ও যাত্রীদের। দুদিনের বৃষ্টিতে ময়লা পচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

যানজটে পড়ে বাসগুলোও এসে থামছে ঠিক এখানেই। যাত্রীরা জানালেন, প্রতিদিন নাক চেপে তাদের কর্মস্থলে যাতায়াত করতে হয়, শিশুরা স্কুলে যায়-আসে। এমন চিত্র রাজধানীর আগারগাঁওয়ের। ৬০ ফুট প্রশস্ত এ সড়কের অর্ধেক দখল করে রাখা ময়লার কন্টেইনার এভাবেই দুর্ভোগ আর ভোগান্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে এলাকবাসীর জন্য। প্রতিদিন এমনচিত্রই চোখে পড়ছে।

সড়কটির উভয় পাশে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মণিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, গ্রিন ভিউ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড ‘ল’ কলেজ ও আলীম উদ্দীন উচ্চবিদ্যালয়। এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঝখানে বিশালাকার ময়লার কন্টেইনার। ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ। শিক্ষার্থীরা আসতে- যেতে নাকে রুমাল চেপে রাখে।

হাজারো শিক্ষার্থীর এ করুণ দশায় এতটুকু সহানুভূতি দেখায়নি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া রাস্তার পাশে গড়ে তোলা কাঁচাবাজারের পচা শাক-সবজি এ কন্টেইনারে ফেলা হয়। এতে দুর্গন্ধ আরো বাড়ে; গাড়ির ভেতরের যাত্রীরা বমি করেন মাঝে মাঝে।

স্থানীয়রা জানান, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঝখানে এভাবে ময়লার ডাস্টবিন রাখা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হুমকি তেমনি দৃষ্টিকটু। প্রতিষ্ঠানগুলোসহ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ময়লার ভাগাড়টি স্থানান্তরের জন্য অনেকবার বলা হয়েছে। কিন্তু ফল হয়নি।

মণিপুর স্কুলের অভিভাবক মোরশেদুল ইসলাম বলেন, এই ময়লার ভাগাড়কে ঘিরে কুকুরের মেলা লেগে থাকে রাত-দিন। শিশুরা এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করতে ভয় পায়। আমরাও আতঙ্কে থাকি। অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে হলেও এখান থেকে ময়লার কন্টেইনারটি সরানো উচিত।

নগরীর এই প্রধান রাস্তার ওপরে যেন সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা তুলে এনে সেসব কন্টেইনারে রাখা হচ্ছে। অনেকটা ঘরের ময়লা রাস্তায় প্রদর্শনের মতো। সকাল থেকে শুরু করে দিনভর ময়লাবাহী ভ্যানের চলাচল এ কন্টেইনার ঘিরে। চলে ময়লা খালাসের কাজ। আবার দুপুরের পর সিটি করপোরেশনের গাড়ি আসে কন্টেইনারগুলো নিতে। এভাবে ময়লার কারবার চলে দিনভর। এতে ব্যস্ত এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে।

এ সড়কে লেগুনা চালান মো. সালাহ উদ্দীন। তিনি বলেন, রাস্তার ওপরে রাখা ময়লার কন্টেইনারের কারণে যানজট লেগে থাকে। ময়লার স্তূপের সামনে গাড়ি আটকে থাকায় যাত্রীদের অনেকেই প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউবা বমি করে ফেলেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান, ময়লার স্তূপ ও দুর্গন্ধের কারণে আশপাশে কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য চলে না। খাবারের দোকানগুলো উঠে গেছে। এখন যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কাস্টমার না আসায় অনেকেই ব্যবসার ধরন পাল্টে ফেলেছেন।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর আবদুর রাজ্জাক বলেন, আগের চেয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বেশ উন্নতি হয়েছে। বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা ময়লা রাখার জন্য বেশ কিছু সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন বা এসটিএসের নির্মাণকাজ চলছে, এগুলোর কাজ শেষ হলে সড়কে ময়লা থাকবে না। কবে নাগাদ নেয়া হবে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, খুব শিগগির নেয়া হবে। কন্টেইনারগুলো স্থানান্তর হলে ৬০ ফিট এলাকার মানুষের যাতায়াতের উন্নতি ঘটবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!